Read Time:4 Minute, 5 Second

 

প্রাণসংহারী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন দেশের নাট্য আন্দোলন ও অভিনয় জগতে অবদানের জন্য একুশে ও স্বাধীনতা পদক পাওয়া দম্পতি রামেন্দু মজুমদার (৭৯) এবং তার স্ত্রী ফেরদৌসী মজুমদার (৭৭)। এই দম্পতি এখন তাদের বাসায় আইসোলেশনে রয়েছেন। সুস্থ আছেন।

জানা গেছে, গত ১৮ জুলাই ফেরদৌসীর করোনাভাইরাস ধরা পড়ে। তার এক সপ্তাহ পর রামেন্দুর নমুনা পরীক্ষায় করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এখন তারা দুজনেই সুস্থ আছেন বলে নিজেরাই জানিয়েছেন। বাড়িতে স্বাভাবিকভাবেই সব কাজকর্ম করছেন তারা।

আগামী কিছু দিনের মধ্যেই দ্বিতীয় দফা নমুনা পরীক্ষা করাবেন বলে জানিয়েছেন রামেন্দু মজুমদার।

বাংলাদেশের মঞ্চ ও টিভি নাটকের এই দুই তারকার বিয়ে হয় ১৯৭০ সালের ১৪ মার্চ। একসঙ্গে এই লম্বা সময় পার করার পেছনে ছিল পারস্পরিক বিশ্বাস, শ্রদ্ধাবোধ ও বন্ধুত্ব। তাঁদের ৫০ বছরের দাম্পত্য জীবনে টুকটাক রাগারাগি, ঝগড়া হয়েছে খুবই কম।

স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে নাট্যকার আবদুল্লাহ আল মামুন নাটকের দল থিয়েটার গঠন করলে তার অগ্রভাগে ছিলেন রামেন্দু-ফেরদৌসী।

অভিনয় জগতে পাঁচ দশকের পথচলায় ফেরদৌসী মজুমদার মঞ্চ ও টেলিভিশনে ‘কোকিলারা’, ‘এখনো ক্রীতদাস’, ‘বরফ গলা নদী’, ‘সংশপ্তক’, ‘চোখের বালি’, ‘শঙ্খনীল কারাগার’ ও ‘এখনও দুঃসময়’ সহ বহু নাটকে অভিনয় করে প্রশংসিত হন। অভিনয় শিল্পে ভূমিকার জন্য ১৯৯৮ সালে তিনি একুশে পদক এবং ২০২০ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার পান।

আর তার স্বামী রামেন্দু মজুমদার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে স্নাতকোত্তর শেষ করে শিক্ষকতাকে বেছে নিয়েছিলেন পেশা হিসেবে। পরে তিনি যোগ দেন বিজ্ঞাপন শিল্পে।

স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় স্বাধীনবাংলা বেতার কেন্দ্রের কয়েকটি অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া এই অভিনয় শিল্পী ১৯৭২ সালে বিটপী অ্যাডভার্টাইজিংয়ে পরিচালক হিসেবে যোগ দেন। পরে ১৯৯৩ সালে প্রতিষ্ঠা করেন বিজ্ঞাপনী সংস্থা এক্সপ্রেশানস। ষাটের দশকের মাঝামাঝি সময় থেকেই তিনি টিভি নাটকে ছিলেন নিয়মিত।

বাংলাদেশের নাটককে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিতি করাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন রামেন্দু মজুমদার। তিনি ১৯৮২ সালে ‘ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইন্সটিটিউট- আইটিআই এর বাংলাদেশ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন। এখন তিনি এই সংগঠনের সাম্মানিক সভাপতি।

বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান রামেন্দু মজুমদার সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতির দায়িত্বও পালন করেছেন। তিনি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পরিষদ সদস্য এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য। নাট্যচর্চায় অবাদনের জন্য তিনি ২০০৯ সালে একুশে পদক পান।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post ১২ আগস্ট ‘নিবন্ধন পাচ্ছে’ রাশিয়ার ভ্যাকসিন
Next post ডোনা ইমাম: মার্কিন কংগ্রেসে বাঙালি প্রার্থী
Close