কাজী মশহুরুল হুদা :
লস এঞ্জেলেস আওয়ামী পরিবারের দীর্ঘ প্রত্যাশিত রাজনৈতিক বিভবাজন সমাধানের সংলাপ অনুষ্ঠিত হল গত ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ স্থানীয় এক রেস্টুরেন্টে। রুদ্ধদ্বার এই সংলাপে কোন সংবাদ মাধ্যম উপস্থিত ছিল না। কারণ কোন অনুমতি ছিল না। বিভাজমান দুই পক্ষের একাধিক দ্বায়িত্বশীল ব্যাক্তির সাথে আলাপ করে জানা যায়, সংলাপের পরিবেশ ছিল অত্যান্ত মাজির্ত।
বিগত ২০০৩ সালের পর এই প্রথম বিবাদমান সংলাপের আয়োজন হয়। সংলাপ শান্তিপূর্ণভাবে হলেও কার্যকর কোন আলোচনার পথ দেখা যায়নি। দুই পক্ষই তাদের স্ব স্ব অবস্থানে অনড় থাকার ফলে কোন সমাধান হয়নি। এ যেনো ‘সব মানি তাল গাছ আমার’।
সকলেই আদর্শ ও ঐক্যের কথা বললেও তাল গাছের দাবী ছাড়তে চায়নি। ফলে সংলাপ মূলত কোন কাজে আসেনি।
জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মোসতাইন দারা বিল্লাহ সম্প্রতি নেত্রীর সাথে দেখা করলে তিনি ক্যালিফোর্নিয়া আওয়ামী লীগের বিবাদ মিমাংসার মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধভাবে বঙ্গবন্ধুর শততম জন্মবার্ষিকী পাল করার নির্দেশ দেন। তারই ফলশ্রুতিতে এই সংলাপ প্রক্রিয়া। উক্ত প্রক্রিয়া ব্যাবস্থাপনায় উপদেষ্টা ফিরোজ আলমের নাম আসলে, তাকে বিজ্ঞাসা করলে তিনি উত্তর দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। লস এঞ্জেলেসে কমিউনিটির মানুষদের প্রত্যাশাছিল আওয়ামী পরিবারের দীর্ঘ ১৭ বছরের বিবাদমান নিরশন হবে সংলাপে।কারণ আওয়ামী পরিবারের বিবাদ করোনা ভাইরাসের মত ছড়িয়ে পড়ছে কমিউনিটির মধ্যে এবং সাধারণ মানুষ দলীয় প্রভাবে বিভক্ত হয়ে সমাজের মধ্যে অনৈক্যের সৃষ্টি হচ্ছে। প্রতিহিংসা ও একে অপরের প্রতি অহেতুক ঘৃণার জন্ম দিচ্ছে।
অনেকে মনে করেন, উভয় দলের যে সকল প্রসঙ্গ নিয়ে বিবাদ বিরাজ করছে তার কোন গঠনতান্ত্রিক ভিত্তিও নেই, যেখানে আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রে অন্যদেশে স্বদেশী রাজনীতি চর্চ্চা করার অনুমতি নেই সেখানে আদশের্র দোহাই দিয়ে ছাড় দেওয়া যাবে না কেনো? সাধারণ প্রবাসীরা মনে করেন প্রবাসে যুক্তরাষ্ট্রে আওয়ামী লীড় সৃষ্টি করে কোন্দলের জন্ম না দিয়ে এসব ভেঙ্গে দিয়ে শুধুমাত্র বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সমর্থক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত সংগঠন থাকা, যাদের কাজ হবে বহি:বিশ্বে দলের হাতকে শক্তিশালি করা। পৃথকভাবে পাতি নেতার সৃষ্টিই দলকে এবং দলের কর্মীদের মধ্যে শত্রুতার জন্ম দিয়েছে।
ক্যালিফোর্নিয়া আওয়ামী পরিবারের বিবাদমান সমস্যার সমাধান স্বয়ং নেত্রী এসেও মিটিয়ে দিতে পারবেন না বলে মন্তব্য অনেক বিজ্ঞজনের। সমাধানের পথ হচ্ছে সম্মেলন। ৮ বছরের মধ্যে এখনও পর্যন্ত কোন সম্মেলন হয়নি। যা অগণতান্ত্রিক। অন্যপক্ষ সমাধানে আসুক আর নাই আসুক শান্তির প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে একটি সম্মেলন জরুরী। কারণ, উভয় পক্ষ মনে করে সংলাপের মাধ্যমে সমঝোতা একদিনেই সমাধান হবে না। দীর্ঘকালের বিবাদ মিমাংসা প্রতিষ্ঠায় দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন। তবে যদি পজেটিভ কার্যক্রম থাকে তাহলে জটিলতা থেকে মুক্তির নতুন পথ উন্মচন হতে পারে। তাই কমিউনিটির মানুষ মনে করে বর্তমান কমিটির উচিত হবে একটি সম্মেলনের আয়োজন করার। যারা ফলশ্রুতিতে তালগাছ সকলের হয়ে দেখা দিতে পারে।
More Stories
আমেরিকায় বাঙ্গালী নারীদের অগ্রগতি
বর্তমানে কর্মক্ষেত্রে নারীদের অগ্রগতি আমরা প্রায়শই লক্ষ্য করি। কর্মক্ষেত্রের বিভিন্ন স্তরে যেমন চিকিৎসক, স্হপতি, বৈমানিক, শিক্ষক ইত্যাদি প্রতিটি ক্ষেত্রে তাদের...
কমিউনিটির উন্নয়নে ব্যক্তি স্বার্থের ঊর্ধ্বে থাকা বাঞ্চনীয়
কাজী মশহুরুল হুদা : আমার অভিজ্ঞতায় এবং বিশ্লেষণে দেখেছি দেশের জন্য, জাতির জন্য, দেশাত্মবোধের চেতনায় উদ্ভুদ্ধ হয়ে যারা কাজ করেন...
‘বিজয় নিশান উড়ছে ওই’
কাজী মশহুরুল হুদা : ‘বিজয় নিশান উড়ছে ওই, বাংলার ঘরে ঘরে, মুক্তির আলো ওই জ্বলছে’। একাত্তরের এই দিনে স্বাধীন বাংলা...
২০২০’র একুশের ভাবনা
কাজী মশহুরুল হুদা : একুশ নিয়ে আমাদের চিন্তা চেতনায় অনেকেই পিছিয়ে আছি। আমরা ভাবছি একুশ কি উদযাপন হবে নাকি পালিত...
লস এঞ্জেলেসের নেতা সমাচার
কাজী মশহুরুল হুদা : লস এঞ্জেলেসে কোন নেতা নেই। যা আছে তা হচ্ছে- তথাকথিত নেতা অর্থাৎ স্বঘোষিত। এই সব কথিত...