Read Time:4 Minute, 45 Second

কাজী মশহুরুল হুদা :

আমার অভিজ্ঞতায় এবং বিশ্লেষণে দেখেছি দেশের জন্য, জাতির জন্য, দেশাত্মবোধের চেতনায় উদ্ভুদ্ধ হয়ে যারা কাজ করেন তাদের সংখ্যা অনেক কম। নিঃস্বার্থভাবে দেশের কাজে অংশ নেওয়া মানুষ হাতে গোনা কয়েক জন।

কেউ হয়তো শুধুমাত্র নামের জন্যই অর্থব্যায় করেন। কমিউনিটিকে ব্যবাহার করে আদর্শবহিভূত কাজের পিছনে রয়েছে তাদের আমিত্ব চেতনা। অনেকেই রয়েছেন তাদের হয়তো অর্থ নেই, কিন্তু মেধা, শ্রম, সময় ইত্যাদি দিয়ে কমিউনিটি বা দেশের জন্য কাজ করছেন। অথচ পেছন থেকে নিরবে দেশের জন্য কাজ করে যাওয়া এমন লোকের কোন স্বীকৃতি মেলে না। অর্থই সব ক্ষেত্রে সম্মান বয়ে আনে। অতীতে রাজনীতিবিদ বা শিক্ষিত মানুষেরা পার্লামেন্ট চালাত। এখন অশিক্ষা-কুশিক্ষার ধারক বাহক, হঠাৎ করে ধনী হওয়া ব্যবসায়িরা পত্রিকা, টিভি চ্যানেলের মালিক হয়ে পার্লামেন্টের সদস্য হয়ে সব কিছু হাতিয়ে নিচ্ছেন।

ব্যাক্তি স্বার্থপরতার আমিত্ব বোধ থেকে সৃষ্টি হয় হিংসাপরায়নতা। যার পরিণতি হয় বিভক্তি। প্রশংসা করাতো দূরের কথা, আমরা কেউ কারও ভালো দেখতেই পরি না। বরং ভালো করছে দেখলে ইর্ষান্বিত হই এবং সমালোচনামূখী হয়ে ধরাশায়ী না করা পর্যন্ত ছাড়িনা। কখনও ভেবেও দেখি না যে, যোগ্য ব্যক্তির বাহবা বা প্রশংসা করলে সম্মান বাড়ে। কমে না। কিন্তু আমরা বাঙালিরা কখনওই এটা পারি না।
বরং আমাদের মনের মধ্যে এমন কাজ করে যে- আমি পরবো না, আমি করবো না, কিন্তু অন্য কেউ করলে তাতে বাধা দিবো। তখন মনের মধ্যে এমন কথা খেলা করে যে- ওই কাজটার সাথে আমি নেই কেনো? আমাকে বাদ দিয়ে করা হয়েছে কেনো? এতো হতে পারে না! এটা তো আমার জন্য অপমানজনক। ইত্যাদি ইত্যাদি।

আরে ভাই,
যার মেধা আছে, যাদের কাজ করার যোগ্যতা আছে, তাদের কাজকে প্রশংসা করলে বা সহায়তা করলে জাত যায় না। এতে কোন ক্ষতিও নাই। বরং সহায়তা করলে আমিও সম্মানিত হবো ।
মনে রাখবেন- মিথ্যা ইতিহাস কখনও প্রতিষ্ঠিত হয় না। বিশ্বাসের সাথে কাজ করলে আপনার মূল্যায়ন আপনি পাবেনই। তার পরিবর্তে যদি আত্মস্যাৎ করি তবে সমাজে বা কমিউনিটিতে সম্মান পাওয়া যায় না।

সৌখিন সাংবাদিকতা করতে গিয়ে দেখেছি ব্যাক্তির সত্য উন্মোচিত হলে সে সাংবাদিক সাংঘাতিক হয়ে যান। ব্যাক্তিস্বার্থে আঘাত লাগলে সে সাংবাদিক হয়ে যান কুলাঙ্গার। আসলে আমাদের এখন মিশন ভিশন পরিবর্তনের সময় এসেছে। টানেলের ভেতর থেকে বের হয়ে পাহাড় চূড়ায় উঠে দেখতে হবে। তাহলে দৃষ্টিভঙ্গীর পরিবর্তন আসবে।

আসুন, আমরা সবাই কমিউনিটির জন্য দেশের জন্য, জাতির জন্য যে যেভাবে পারি কাজ করি। নিজে না পারলেও যে করে তাকে উৎসাহ দেই। তাকে সাহায্য করি আর পারলে তার কাজের প্রশংসা করি। আসুন উদারতার অনুশিলন করি। তাতে আমরা ছোট হবো না বরং বড়ই হবো। কাউকে ধরে নিচে নামাতে গেলে নিজেকেই আগে নিচু হতে হয়। আর হাত বাড়িয়ে দিয়ে উপরে কাউকে টেনে তুললে নিজেই উপরে ওঠে। ইর্ষা নয়, সহানূভূতিশীল হই। আল্লাহ সহানূভূতিশীলদেরকে পছন্দ করেন।

রাসুল উল্লাহ (স:) সহানূভূতিশীলতার প্রাক্টিস সর্বক্ষেত্রেই প্রয়োগ করতেন।

মাহানুভবতার কোন বিকল্প নেই।

বিদ্বেষ নয়, ভালোবাসাতেই মুক্তি মেলে।

শান্তি শান্তি শান্তি।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post ‘আমি প্রবাসী’ অ্যাপে সাড়ে তিন লাখ নিবন্ধন, নিশ্চিত হচ্ছে প্রবাসীদের ভ্যাকসিন রেজিস্ট্রেশন
Next post বাংলাদেশে বেশি বেশি বিনিয়োগের আহ্বান সালমান এফ রহমানের
Close