বিএনপির ছেড়ে দেয়া সংসদীয় আসনে উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করা আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলমকে কেন্দ্র করে দেশের বড় দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাদের বক্তব্যে হতাশা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। একজন সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী, সর্বোপরি দেশের একজন সাধারণ নাগরিককে নিয়ে দুটি রাজনৈতিক দলের বা কারোরই এমন উপহাসের কোনো অধিকার নেই।
সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।
টিআইবির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন সংবাদে জানা যায়, হিরো আলমকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির অবমাননা ও উপহাসমূলক পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দেয়ার ঘটনা পরিলক্ষিত হয়েছে।
দেশের দুটি রাজনৈতিক দলের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের এমন বক্তব্য অনভিপ্রেত বলে উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে আমরা দেখেছি, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, হিরো আলম এখন জিরো হয়ে গেছে। হিরো আলমকে বিএনপি নির্বাচনে দাঁড় করিয়েছে। তারা সংসদকে ছোট করার জন্য হিরো আলমকে প্রার্থী করেছে। উল্টো দিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এই আওয়ামী লীগ হিরো আলমের কাছেও কতটা অসহায়। রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে তার সঙ্গে জিততে হয়। দুই ক্ষেত্রেই সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী হিরো আলমকে অবজ্ঞা বা তাচ্ছিল্যসূচক বিবেচনায় পরস্পরকে আক্রমণ করেছেন দুই নেতা। বাংলাদেশের রাজনৈতিক রীতি অনুযায়ী পরস্পরকে নিয়ে বিষোদ্গার নতুন কিছু নয়। কিন্তু সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী হিরো আলমের ব্যক্তি পরিচয় ও অবস্থাকে মানদণ্ড হিসেবে দাঁড় করিয়ে দুই দল একে অপরকে আক্রমণ করেছেন। সেই মানদণ্ড যে ইতিবাচক কিছু নয়, বরং এর মাধ্যমে আলম এবং সর্বস্তরের সাধারণ মানুষকে হেয় প্রতিপন্ন করা হয়েছে তা বলাই বাহুল্য। পাশাপাশি দেশের ‘সাধারণ’ একজন নাগরিকের প্রতি দুই বর্ষীয়ান রাজনীতিকের এমন আচরণ বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির স্থূলতাকেই জনসমক্ষে প্রতিষ্ঠিত করে।
ড. ইফতেখারুজ্জামান আরো বলেন, সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি বাংলাদেশের নাগরিক হলে এবং তার বয়স পঁচিশ বছর পূর্ণ হলে, কোনো উপযুক্ত আদালত কর্তৃক অপ্রকৃতিস্থ ঘোষিত না হলে, দেউলিয়া না হলে, বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব না নিলে বা আনুগত্য স্বীকার না করাসহ কিছু শর্ত পূরণে সংসদ সদস্য হতে পারবেন তিনি। সংবিধানের শর্ত পূরণের পরও আলমকে কেন্দ্র করে দেশের বড় দুটি রাজনৈতিক দলের বক্তব্য শুধুমাত্র রাজনৈতিক শিষ্ঠাচারকেই ভুলুণ্ঠিত করে না, বরং তার সাংবিধানিক অধিকার অবজ্ঞার নামান্তরও বটে। ‘হিরো আলম নির্বাচিত হলে সংসদকে ছোট করা হতো’ এমন বক্তব্যের মাধ্যমে প্রকারন্তরে সংসদকে ছোট করা হয়েছে। কারণ, সংসদীয় গণতন্ত্রের চেতনা ও চর্চায় মানুষে-মানুষে বৈষম্যের প্রকাশ অগ্রহণযোগ্য।
More Stories
ভারতে হাসিনার অবস্থান নিয়ে জয়শঙ্কর বললেন— সিদ্ধান্ত তাকেই নিতে হবে
ছাত্র-জনতার তুমুল আন্দোলনের মুখে ভারতে পালিয়ে যাওয়া বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নয়াদিল্লিতে অবস্থান করা নিয়ে মুখ খুলেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী...
হেলিকপ্টারে বিমানবন্দর যাবেন খালেদা, মধ্যরাতে আসছে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স
উন্নত চিকিৎসার জন্য বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তাকে বহন করতে কাতার সরকারের পাঠানো এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি...
খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে নিয়ে সুখবর দিলেন তথ্য উপদেষ্টা
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অবস্থা কিছুটা ভালোর দিকে বলে জানিয়েছেন তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। একইসঙ্গে বিএনপির...
অতন্দ্রানু রিপা নামের ওই নারীকে চেনেন না আলী রীয়াজ: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ও যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক আলী রীয়াজকে লক্ষ্য করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন ভিডিও...
তোফায়েল আহমেদের সহধর্মিণী আর নেই
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও ভোলা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য তোফায়েল আহমেদের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম মারা গেছেন। ইন্না লিল্লাহি...
আওয়ামী লীগের ‘জন্মস্থান’ রোজ গার্ডেন কিনে রাষ্ট্রের ক্ষতি ৩৩২ কোটি টাকা
পুরান ঢাকার হৃষিকেশ দাস রোডের যে ঐতিহাসিক ভবনে আওয়ামী লীগের যাত্রা শুরু হয়েছিল, সেই রোজ গার্ডেন কিনতে গিয়ে রাষ্ট্রের প্রায়...
