কাজী মশহুরুল হুদা :
আগামী ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে লস এঞ্জেলেসে উদযাপিত হবে ৯তম বাংলার বিজয় বহর। বিজয় বহরে লিটল বাংলাদেশ এলাকায় রাস্তা বন্ধ করে মটর গাড়ীর বহর শোভাযাত্রা হয় এবং সারাদিন ব্যাপী চলে অনুষ্ঠানাদি। বিগত দিনে বাংলার বিজয় বহর একক ব্যাক্তির পরিকল্পনায় এই বিজয় বহর হয়ে এসেছে। যদিও একটা নামের বহর দিয়ে তৈরী ছিল কমিটি। কিভাবে কোথা থেকে অর্থ সংগ্রহ হত এবং খরচ হত তার কোন হদিস কেউ জানে না। তবে এ বছর একটু রদ বদল হয়েছে। নতুন চেয়ারম্যান হয়েছে। নতুন আহ্বায়কসহ একটি নতুন কমিটি হয়েছে। যার একটি অভিষেকও হয়ে গেল গত ২৮ অক্টোবর।
সমস্যা হল এবারের বিজয় বহর নিয়ে নানাবিধ আভ্যন্তরিন সংকট দেখা দিয়েছে। বালার মুসিবত আছর করেছে। বালার অনেক কর্মকর্তাবৃন্দ জড়িত রয়েছে এই বাংলার বিজয় বহরে। তার প্রভাব বড় ধরনের একটি সংকট সৃষ্টি করেছে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে। বিভক্তির সৃষ্টি হয়েছে নানাবিধ ব্যাক্তিদের অংশগ্রহনে। জনাব সাইফ কুতুবি নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছে। সবই সিলেকটিভ। এক ব্যাক্তির পরিচালনায় যেন সব কিছু ঘটে এই বাংলার বিজয় বহরে। কুতুবির সাথে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে চ্যাঞ্চেলার ও প্রেসিডেন্টের সাথে। আবার এই সমস্যা চেয়ারম্যানের সাথে পারস্পারিক বিবাদ বালাকে কেন্দ্র করে। অপরদিকে শফি আহমেদ ও মাসুদ হাসানেরও একই সমস্যা। বিজয় বহরের বর্তমান বিত্তটি চেয়ার মুজিব সিদ্দিকীর একটি বলয় আছে। সে বলয়ে তিনি সরাসরি পানিতে না নেমে তিন নম্বর বাচ্চাকে লাগিয়ে দিয়েছেন কাজটাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। ইসমাইল হোসেন কমিউনিটিতে পুনরায় গ্রহণযোগ্যতা সৃষ্টির জন্য সে সুযোগটা নিয়ে নাচছেন, যেমনটি নেচেছেন বিজয় বহরের অভিষেক। এই অভিষেকে সকল সদস্য শপথ গ্রহণে অংশগ্রহণ করেনি। তাতেই বোঝা যাচ্ছে সঙ্কট দেখা দিয়েছে। কুতুবি চেয়ারম্যান হিসেবে চেষ্টা করছেন ৯তম বাংলার বিজয় বহর সফল করার, কিন্তু অনেকে বলছেন, চেয়ারম্যান তো অলঙ্কৃত পোষ্ট। তার এত লাফালাফি করার কি আছে?
এখানে প্রেসিডেন্ট এবং আহ্বায়কই কার্যকারী ক্ষমতার অধিকারী।
উল্লেখ্য, অভিষেক অনুষ্ঠানে, চ্যাঞ্চেলার ডা: সিরাজুল্লাহ, প্রেসিডেন্ট সামসুদ্দিন মানিক উপস্থিত ছিল না।
অপরদিকে বালার প্যানেল সমূহের ব্যাক্তিবর্গ উপস্থিতি ছিল না। উপস্থিত ছিল বলয় গ্রুপ। সেখানে ছিলেন- মুজিব সিদ্দিকী, আবু হানিফা, মিঠুন চৌধুরী, ইসমাইল হোসেন এবং হালে সদ্য পুনরায় যোগদানকারী তারেক বাবু।
সমস্যায় পড়েছেন নবনির্বাচিত আহ্বায়ক। তিনি নেহায়েত ভালো মানুষ। কমিউনিটির সঙ্গে কাজ করতে চান কিন্তু ত্রিমূখী সংঙ্কটে তিনি কিংকর্তব্য বিমূঢ়। এমতা সংকটে অতীতের অংশগ্রহকারীদের অনেকেই বলতে শুনেছি তারা বিভক্তির মধ্যে অংশগ্রহণ করতেই ইচ্ছুক নন।
বাংলার বিজয় বহরের শোভা হচ্ছে মটর কেড। সংকটের কারণে সেই শোভাবর্ধণ রহিত হয়ে গেলে বিজয় বহরের সফল্যতা হারাবে তাতে কোন সন্দেহ নেই।
বাংলার বিজয় বহর লিটল বাংলাদেশের একটি গর্ব বা অহংকার। আভান্তরীণ সঙ্কটে বাধাগ্রস্থ হরে কমিউনিটির জন্য দু:খ জনক ঘটনার অবতারণা হবে। সকলের কাম্য সঙ্কট কটিয়ে বাংলার বিজয় বহর মূলধারায় দেশ ও জাতিকে সমুজ্জল হোক।
তবে এত্ত সত্য যে, বালার সমস্যার সমাধান না করে বিজয় বহরের সফলতা হবে বলে সংশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গ মনে করেন না।
যেহেতু কমিটি নতুন হয়েছে এবং আগামীতে আরও স্বচ্ছ হবে। সে ক্ষেত্রে বাংলার বিজয় বহরের হিসাব নিকাশের স্বচ্ছতা যেন কমিউনিটির কাছে স্পষ্টতর হয়ে ওঠে।
More Stories
আমেরিকায় বাঙ্গালী নারীদের অগ্রগতি
বর্তমানে কর্মক্ষেত্রে নারীদের অগ্রগতি আমরা প্রায়শই লক্ষ্য করি। কর্মক্ষেত্রের বিভিন্ন স্তরে যেমন চিকিৎসক, স্হপতি, বৈমানিক, শিক্ষক ইত্যাদি প্রতিটি ক্ষেত্রে তাদের...
কমিউনিটির উন্নয়নে ব্যক্তি স্বার্থের ঊর্ধ্বে থাকা বাঞ্চনীয়
কাজী মশহুরুল হুদা : আমার অভিজ্ঞতায় এবং বিশ্লেষণে দেখেছি দেশের জন্য, জাতির জন্য, দেশাত্মবোধের চেতনায় উদ্ভুদ্ধ হয়ে যারা কাজ করেন...
‘বিজয় নিশান উড়ছে ওই’
কাজী মশহুরুল হুদা : ‘বিজয় নিশান উড়ছে ওই, বাংলার ঘরে ঘরে, মুক্তির আলো ওই জ্বলছে’। একাত্তরের এই দিনে স্বাধীন বাংলা...
সম্পাদকীয় : ক্যালিফোর্নিয়া আ’লীগের ঐক্যের প্রক্রিয়া কোন পথে?
কাজী মশহুরুল হুদা : লস এঞ্জেলেস আওয়ামী পরিবারের দীর্ঘ প্রত্যাশিত রাজনৈতিক বিভবাজন সমাধানের সংলাপ অনুষ্ঠিত হল গত ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০...
২০২০’র একুশের ভাবনা
কাজী মশহুরুল হুদা : একুশ নিয়ে আমাদের চিন্তা চেতনায় অনেকেই পিছিয়ে আছি। আমরা ভাবছি একুশ কি উদযাপন হবে নাকি পালিত...
লস এঞ্জেলেসের নেতা সমাচার
কাজী মশহুরুল হুদা : লস এঞ্জেলেসে কোন নেতা নেই। যা আছে তা হচ্ছে- তথাকথিত নেতা অর্থাৎ স্বঘোষিত। এই সব কথিত...