Read Time:6 Minute, 20 Second

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, ‘ভোট চলাকালীন যদি পেশিশক্তির উদ্ভব ঘটে, তাহলে প্রিজাইডিং অফিসারকে বলা হয়েছে তিনি ভোট বন্ধ করে দেবেন। তিনি যদি বন্ধ না করেন রিটার্নিং অফিসার অবহিত হলে তিনি বন্ধ করে দেবেন। তিনিও যদি বন্ধ না করেন, আমরা ঢাকা থেকে অবহিত হলে বন্ধ করে দেবো।’মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন প্রার্থী এবং পরবর্তী সময়ে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে এসব কথা বলেন সিইসি।

সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আমরা ৯৯ শতাংশ নয়, শতভাগ নিশ্চিত করতে পারি, রাতে ভোট হবে না। কোনো অবস্থাতেই হবে না। এ জন্য অনেক কেন্দ্রে ব্যালট পেপার সকালে পাঠাবো। ব্যালট পেপার সকালে না গিয়ে ১০ দিন আগে অথবা ১০ মাস আগেও যদিও যায়, তাহলেও প্রার্থীরা তাদের পোলিং এজেন্ট দিয়ে সকালে ভোটকেন্দ্রে স্বচ্ছ বাক্সগুলো খালি কি না সেটি দেখে তারপর বাক্স বন্ধ করবেন। সেক্ষেত্রে ভোটকেন্দ্রে অবৈধ কোনো ব্যালট বাক্স ঢোকার সুযোগ নেই। তারপরও আমরা বিশ্বাস এবং আস্থা অর্জনের জন্য বলেছি ব্যালট পেপার সকালে পাঠাব।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভোটকেন্দ্রে পোলিং এজেন্টরা অবশ্যই দাঁড়িয়ে থেকে দেখে নেবেন ব্যালট বাক্সগুলো খালি আছে কি না। তারা ভোট শেষ না হওয়া পর্যন্ত অর্থাৎ গণনা ও ফল ঘোষণা পর্যন্ত কেন্দ্রে অবস্থান করবেন। সবকিছু সঠিকভাবে হয়েছে কি না জানবেন। যদি গণনা যথাযথভাবে শেষ হয় তাহলে নিশ্চিতভাবে ভোট সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়ে গেলো।’

হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘কথাগুলো বললাম কারণ আমাদের ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া নিয়ে একটা অনাস্থার সৃষ্টি হয়েছে, সেটি যাতে দূর হয়। আমরা নির্বাহী প্রশাসন ও পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তাদের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়েছি। এখানে ওসি, ইউএনও, ডিসি ও এসপিদের বক্তব্য শুনেছি। তাদের বক্তব্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত ভোটের পরিবেশ ভালো। আমরা তাদের আরেকটি বার্তা দিয়েছি যে, যেদিন ভোটগ্রহণ করা হবে, সেদিনের বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরে থাকবে। ভোটটা কী অবাধ হলো, সেখানে কারচুপি হয়েছে কি না, সেটি নিশ্চিত করার জন্য যারা ভোট পরিচালনা করবেন অর্থাৎ প্রিজাইডিং অফিসারসহ সংশ্লিষ্টদের বলা হয়েছে, কেন্দ্রে যাতে কোনো অননুমোদিত ব্যক্তি প্রবেশ না করেন। যদি অননুমোদিত ব্যক্তি ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করেন, তাহলে বুঝতে হবে তিনি কুমতলব নিয়ে প্রবেশ করেছেন। তাহলে ভোটগ্রহণ প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যাবে। আমরা কঠিন বার্তা দিয়েছি যে, এ ধরনের কোনো কিছু যাতে না হয়।’

সিইসি বলেন, ‘আমাদের নির্বাচনের সংস্কৃতিতে অনেকে কালো টাকার বিনিময় পেশাদার কিছু সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করেন। তারা যাতে ভোটকে প্রভাবিত না করতে পারেন সে বিষয়ে কঠোর নজরদারি রাখতে হবে। সবমিলিয়ে আমরা এটুকুই বার্তা দিয়েছি যে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যেকোনো মূল্যে যেকোনোভাবে অবাধ, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য হতে হবে।’

গণমাধ্যম কর্মীদের দায়িত্ব পালন প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন ‘ভোট প্রক্রিয়া স্বচ্ছতা ফুটে উঠবে মিডিয়ার মাধ্যমে। কারণ মিডিয়ার কর্মীরা ভোটকেন্দ্রের বাইরেও থাকবেন এবং ভেতরেও থাকবেন। ভোটকেন্দ্রে প্রবেশে মিডিয়া ও পর্যবেক্ষকদের প্রিজাইডিং অফিসারের অনুমতি নিতে হবে না। তারা সরাসরি ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন এবং ভেতরে ঢুকে সব ছবিই তুলতে পারবেন। সত্য-মিথ্যা জনগণকে জানাতে পারবেন।’

তিনি বলেন, ‘আমরা একটি অ্যাপস তৈরি করেছি, যেখানে দুই ঘণ্টা পরপর প্রতিটি কেন্দ্রে কত শতাংশ ভোট পড়লো তা সেখানে ইনপুট দেওয়া হবে। মোবাইলের মাধ্যমে অ্যাপস ডাউনলোড করে সেটি সবাই জানতে পারবেন। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে ১০টার সময় দেখা গেল ১০ শতাংশ ভোট পড়ল। কিন্তু ১২টার দিকে গিয়ে হঠাৎ ৮০ শতাংশ হয়ে গেলো। এটি বিশ্বাসযোগ্য হবে না। এজন্য আমরা বিভিন্ন পরিমাপক নিয়েছি, যাতে ভোটগ্রহণের সত্যতা মানুষের মাঝে ফুটে ওঠে।’

মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন- নির্বাচন কমিশনের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল আহমেদ, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়, রেঞ্জ পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) নুরে আলম মিনা ও জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post বিরোধীদল কারা হবে, আওয়ামী লীগের কাছে জানতে চাইলো ইইউ
Next post ক্ষতিকর উদ্দেশ্যেই খালেদা জিয়ার কেবিনে প্রবেশের চেষ্টা করেন সুজন
Close