বৌদ্ধ সন্ন্যাসীর ভুয়া পরিচয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার চেষ্টা করলেও অবশেষে কারাগারে ঠাঁই হলো অমরজিদ বড়ুয়া নামে এক ব্যক্তির। ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে অমরজিদ স্বীকার করেছেন— পেশায় তিনি একজন টেকনিশিয়ান। দালালের মাধ্যমে জাল কাগজপত্র তৈরি করে যুক্তরাষ্ট্রে যেতে চেয়েছিলেন।
সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের সহকারী রিজিওনাল সিকিউরিটি অফিসার মাইকেল লি গুলশান থানায় বাদী হয়ে অমরজিদ বড়ুয়ার বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। এরপর মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মামলার এজাহারে মাইকেল লি উল্লেখ করেন, ‘চলতি বছরের ২৩ আগস্ট অমরজিদ বড়ুয়া নামে এক ব্যক্তি ভিসার সাক্ষাৎকারের জন্য আমেরিকার ওয়েস্ট লস অ্যাঞ্জেলেসের বুদ্দিস্ট গির্জা থেকে আনা একটি আমন্ত্রণপত্রসহ মার্কিন দূতাবাসে আবেদন করেন। তিনি বুদ্দিস্ট গির্জার পুরোহিত করুণা ধার্মা নামে শ্রীলঙ্কান এক নাগরিকের পাঠানো একটি আমন্ত্রণপত্র দূতাবাসে উপস্থাপন করেন। পরে মার্কিন দূতাবাস কর্তৃপক্ষ অমরজিদ বড়ুয়ার আমন্ত্রণপত্র যাচাই করে জানতে পারে যে, আমন্ত্রণপত্রটি জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে।’
এজাহারে মাইকেল লি জানান, ‘গত সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) অভিযুক্ত অমরজিদ বড়ুয়া ভিসা পেতে দ্বিতীয় দফায় সাক্ষাৎকারের জন্য দূতাবাসে আসেন। তখন জাল আমন্ত্রণপত্রের কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি স্বীকার করেন যে, তিনি বৌদ্ধ সন্ন্যাসী নন। তিনি পেশায় একজন টেকনিশিয়ান। মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে আমেরিকা গযাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। দালালের কাছে থেকে আমন্ত্রণপত্র সংগ্রহ করেছিলেন। ভিসা পেলে দালালকে ১০ লাখ টাকা দিতে হবে বলে তাদের মধ্যে একটি চুক্তিও হয়েছে।’
মঙ্গলবার আদালতে দেওয়া প্রতিবেদনে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও গুলশান থানার এসআই রায়হানুল ইসলাম সৈকত জানান, আসামি অমরজিদ বড়ুয়া জিজ্ঞাসাবাদে এই প্রতারণার সঙ্গে নিজের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তবে প্রতারণা ও জালিয়াতির কাজে তার সহযোগির বিষয়ে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দিয়ে সময় ক্ষেপণ করেন।
আদালতে জমা দেওয়া পুলিশের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আসামির নাম ও ঠিকানা যাচাইসহ প্রাপ্ত তথ্যাদি তদন্তাধীন আছে। এমতাবস্থায় মামলার তদন্তের স্বার্থে আসামিকে জেল হাজতে আটক রাখা প্রয়োজন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন তদন্ত কর্মকর্তা।
গুলশান থানার এসআই রায়হানুল ইসলাম সৈকত বলেন, ‘জালিয়াতির কথা তিনি স্বীকার করেছেন। মামলার তদন্ত চলছে। আসামি এখন কারাগারে আছেন।’
এ বিষয়ে গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বি এম ফরমান আলী বলেন, ‘আসামি অমরজিদ বড়ুয়া সন্যাসী সেজে কাগজপত্র জাল করে আমেরিকা যাওয়ার জন্য দূতাবাসে আবেদন করেন। তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আরও কারা জড়িত রয়েছে, তার তদন্ত চলছে।’
More Stories
দায়িত্ব নেওয়ার সময় নির্বাচন দেওয়ার কোনো শর্ত ছিল না : সাখাওয়াত হোসেন
দেশে নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হয়েছে কি না, তা নির্বাচন কমিশনই বলতে পারবে বলে মন্তব্য করেছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার...
জামায়াত ধর্মকে ব্যবহার করে বিভাজন ও সহিংসতার রাজনীতি উসকে দিচ্ছে : এনসিপি
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে বিভাজন, ঘৃণা ও সহিংসতার রাজনীতি উসকে দিচ্ছে বলে জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক...
আপাতত লন্ডন যাচ্ছেন না খালেদা জিয়া, আসছে না এয়ার অ্যাম্বুলেন্স
সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে লন্ডনের হাসপাতালে নিতে কাতারের ব্যবস্থা করা এয়ার অ্যাম্বুলেন্স মঙ্গলবার সকাল ৮টায় হযরত...
‘আমি ভালো আর সব খারাপ’— আওয়ামী আমলের এই প্রচার এখনো চলছে: তারেক রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আমি ভালো আর সব খারাপ। এ রকম একটি বিষয় আমরা দেখেছি ১৬ বছর ধরে।...
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সংক্রান্ত সকল অনুরোধ পূরণ করছে সরকার: প্রেস সচিব
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সংক্রান্ত তার পরিবারের সকল অনুরোধ অন্তর্বর্তী সরকার পূরণ করছে বলে জানিয়েছেন...
জুলাই আন্দোলনে নিহত ১৮২ মরদেহ উত্তোলন শুরু রোববার
জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার কবরস্থানে দাফন করা অজ্ঞাত ১৮২ শহীদের মরদেহ উত্তোলনের প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে রোবিবার (৭ ডিসেম্বর)।...
