Read Time:5 Minute, 20 Second

মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বহনকারী গাড়িটি অন্য যে কোনো দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের থেকে আলাদা। ‘দ্য বিস্ট’ নামে সুপরিচিত গাড়িটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সরকারি যান। দেশটির আর সব প্রেসিডেন্টের মতো জো বাইডেনের নিরাপত্তার জন্যও ব্যবহৃত হয় বুলেট প্রতিরোধী ক্যাডিলাক গাড়িটি।

দিল্লিতে অনুষ্ঠেয় জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে ভারতে যাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। হোয়াইট হাউস থেকে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) ওয়াশিংটন থেকে দিল্লির উদ্দেশে রওনা হওয়া বাইডেন দিল্লি পৌঁছাবেন শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর)। আর একই সময় যুক্তরাষ্ট্র থেকে একটি বোয়িং বিমানে করে উড়ে আসবে প্রেসিডেন্টের গাড়ি ‘দ্য বিস্ট’।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়, দ্য বিস্টের ২০১৮ সালের মডেলটি বাইডেনের জন্য ব্যবহার করা হয়। গাড়িটিতে আছে অত্যাধুনিক সব সুবিধা।

এই ক্যাডিলাক গাড়ির জানালায় রয়েছে পাঁচটি স্তর। যা কাঁচ ও পলিকার্বনেট দিয়ে তৈরি। শুধুমাত্র চালকের পাশের জানালা ছাড়া আর কোনো জানালার কাঁচ নামানোর নিয়ম নেই। সেই জানালার কাঁচও মাত্র তিন ইঞ্চি পর্যন্ত নামানো যায়। বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ভেদ করে যাবে এমন বুলেটও এই গাড়ির জাানালার কাঁচ ভেদ করতে পারে না।

গাড়ির মূল অংশ তৈরি করা হয়েছে স্টিল, টাইটেনিয়াম, অ্যালুমিনিয়াম ও সিরামিকস‌ দিয়ে। কাঠামোটি পাঁচ ইঞ্চি মোটা। পুরো কাঠামোই বোমা ও মাইন প্রতিরোধী।

গাড়িটির মধ্যে থাকে শটগান, কাঁদানো গ্যাস, জরুরি অবস্থার জন্য প্রেসিডেন্টের রক্তের গ্রুপের রক্ত। অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রও রয়েছে গাড়িটির মধ্যে।কোনো সাজোয়া গাড়ির থেকে কম নয় বাইডেনের নিরাপত্তায় থাকা এই গাড়ি। গাড়ির সামনে রয়েছে গ্রেনেড লঞ্চার এবং নাইট ভিশন ক্যামেরা। গাড়িটির পিছনের আসনে রয়েছে স্যাটেলাইট ফোন। যার সাহায্যে প্রেসিডেন্ট সরাসরি পেন্টাগনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারেন।

বিস্টের পিছনের আসনে প্রেসিডেন্ট ছাড়া আরও চার জন বসতে পারেন। চালক ও পিছনের আসনের মধ্যে একটি কাঁচের দেওয়াল রয়েছে। প্রেসিডেন্টের কাছে এই দেয়াল নিয়ন্ত্রণ করার সুইচ থাকে। এ ছাড়া প্রেসিডেন্টের আসনের সামনে রয়েছে একটি প্যানিক বোতাম এবং আপদকালীন পরিস্থিতির জন্য অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা।

বিস্টের জ্বালানি ট্যাঙ্ক বিস্ফোরণ প্রতিরোধক ফোম দিয়ে পরিপূর্ণ। সরাসরি ট্যাঙ্কের মধ্যে হামলা হলেও কোনও বিস্ফোরণ হবে না, এমন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। গাড়িটির স্টিল রিমের টায়ার কখনও ফেটে যাবে না। টায়ার ক্ষতিগ্রস্ত হলেও গাড়িটি চালাতে কোনও অসুবিধা হবে না।

দ্য বিস্টে অত্যাধুনিক সেন্সর লাগানো রয়েছে। নিউক্লিয়ার, কেমিক্যাল বা বায়োলজিক্যাল হামলা হওয়ার আগেই তা বুঝে নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে এই সেন্সরের।

বিস্টের ওপর রয়েছে একটি অ্যান্টেনা। যা যাতায়াতের রাস্তায় যে কোনও যোগাযোগের যন্ত্র ও রিমোটকে বিকল করে দিতে সক্ষম। ড্রোন শনাক্ত করতেও সক্ষম এই অ্যান্টেনা।

যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থার বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে চালক হিসাবে বেছে নেয়া হয়। সে চালক যে কোনো পরিস্থিতিতে দক্ষভাবে গাড়ি চালাতে সক্ষম। প্রেসিডেন্টের গাড়ির ঠিক পিছনের গাড়িতে থাকেন নিরাপত্তারক্ষী, গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা, চিকিৎসকসহ অন্যান্য প্রতিনিধিরা।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post অনাকাঙ্ক্ষিত হস্তক্ষেপ করছে পশ্চিমারা: রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যাভরভ
Next post ওয়াশিংটনে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যা বললেন কিরবি
Close