মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বহনকারী গাড়িটি অন্য যে কোনো দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের থেকে আলাদা। ‘দ্য বিস্ট’ নামে সুপরিচিত গাড়িটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সরকারি যান। দেশটির আর সব প্রেসিডেন্টের মতো জো বাইডেনের নিরাপত্তার জন্যও ব্যবহৃত হয় বুলেট প্রতিরোধী ক্যাডিলাক গাড়িটি।
দিল্লিতে অনুষ্ঠেয় জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে ভারতে যাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। হোয়াইট হাউস থেকে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) ওয়াশিংটন থেকে দিল্লির উদ্দেশে রওনা হওয়া বাইডেন দিল্লি পৌঁছাবেন শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর)। আর একই সময় যুক্তরাষ্ট্র থেকে একটি বোয়িং বিমানে করে উড়ে আসবে প্রেসিডেন্টের গাড়ি ‘দ্য বিস্ট’।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়, দ্য বিস্টের ২০১৮ সালের মডেলটি বাইডেনের জন্য ব্যবহার করা হয়। গাড়িটিতে আছে অত্যাধুনিক সব সুবিধা।
এই ক্যাডিলাক গাড়ির জানালায় রয়েছে পাঁচটি স্তর। যা কাঁচ ও পলিকার্বনেট দিয়ে তৈরি। শুধুমাত্র চালকের পাশের জানালা ছাড়া আর কোনো জানালার কাঁচ নামানোর নিয়ম নেই। সেই জানালার কাঁচও মাত্র তিন ইঞ্চি পর্যন্ত নামানো যায়। বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ভেদ করে যাবে এমন বুলেটও এই গাড়ির জাানালার কাঁচ ভেদ করতে পারে না।
গাড়ির মূল অংশ তৈরি করা হয়েছে স্টিল, টাইটেনিয়াম, অ্যালুমিনিয়াম ও সিরামিকস দিয়ে। কাঠামোটি পাঁচ ইঞ্চি মোটা। পুরো কাঠামোই বোমা ও মাইন প্রতিরোধী।
গাড়িটির মধ্যে থাকে শটগান, কাঁদানো গ্যাস, জরুরি অবস্থার জন্য প্রেসিডেন্টের রক্তের গ্রুপের রক্ত। অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রও রয়েছে গাড়িটির মধ্যে।কোনো সাজোয়া গাড়ির থেকে কম নয় বাইডেনের নিরাপত্তায় থাকা এই গাড়ি। গাড়ির সামনে রয়েছে গ্রেনেড লঞ্চার এবং নাইট ভিশন ক্যামেরা। গাড়িটির পিছনের আসনে রয়েছে স্যাটেলাইট ফোন। যার সাহায্যে প্রেসিডেন্ট সরাসরি পেন্টাগনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারেন।
বিস্টের পিছনের আসনে প্রেসিডেন্ট ছাড়া আরও চার জন বসতে পারেন। চালক ও পিছনের আসনের মধ্যে একটি কাঁচের দেওয়াল রয়েছে। প্রেসিডেন্টের কাছে এই দেয়াল নিয়ন্ত্রণ করার সুইচ থাকে। এ ছাড়া প্রেসিডেন্টের আসনের সামনে রয়েছে একটি প্যানিক বোতাম এবং আপদকালীন পরিস্থিতির জন্য অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা।
বিস্টের জ্বালানি ট্যাঙ্ক বিস্ফোরণ প্রতিরোধক ফোম দিয়ে পরিপূর্ণ। সরাসরি ট্যাঙ্কের মধ্যে হামলা হলেও কোনও বিস্ফোরণ হবে না, এমন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। গাড়িটির স্টিল রিমের টায়ার কখনও ফেটে যাবে না। টায়ার ক্ষতিগ্রস্ত হলেও গাড়িটি চালাতে কোনও অসুবিধা হবে না।
দ্য বিস্টে অত্যাধুনিক সেন্সর লাগানো রয়েছে। নিউক্লিয়ার, কেমিক্যাল বা বায়োলজিক্যাল হামলা হওয়ার আগেই তা বুঝে নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে এই সেন্সরের।
বিস্টের ওপর রয়েছে একটি অ্যান্টেনা। যা যাতায়াতের রাস্তায় যে কোনও যোগাযোগের যন্ত্র ও রিমোটকে বিকল করে দিতে সক্ষম। ড্রোন শনাক্ত করতেও সক্ষম এই অ্যান্টেনা।
যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থার বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে চালক হিসাবে বেছে নেয়া হয়। সে চালক যে কোনো পরিস্থিতিতে দক্ষভাবে গাড়ি চালাতে সক্ষম। প্রেসিডেন্টের গাড়ির ঠিক পিছনের গাড়িতে থাকেন নিরাপত্তারক্ষী, গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা, চিকিৎসকসহ অন্যান্য প্রতিনিধিরা।
More Stories
বাংলাদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে কাজ করবে ভারতীয় আমেরিকানরা
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও দেশটির কংগ্রেসের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের চেষ্টা চালাবে ভারতীয় আমেরিকানরা। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে...
দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথম কাজ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করা: ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, জানুয়ারি মাসে দায়িত্ব গ্রহণের পর তার প্রথম কাজ হবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করা। শুক্রবার...
হোয়াইট হাউসে ফিরলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প
চার বছর পর যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এক নাটকীয় প্রত্যাবর্তনে ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প...
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন: ট্রাম্প ২১০, কমলা ১১৩
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট গণনা চলছে। ইতিমধ্যে কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে কে জয় পেতে যাচ্ছেন, এমন পূর্বাভাসও আসছে বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে। অ্যাসোসিয়েটেড...
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন: ফ্লোরিডায় ট্রাম্প এবং ম্যাসাচুসেটসে জয়ী কমালা হ্যারিস
ফ্লোরিডায় ট্রাম্প এবং ম্যাসাচুসেটসে জয়ী কমালা হ্যারিস মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণের পর ধীরে ধীরে ফলাফল আসতে শুরু করছে। যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যমগুলো...
রাশিয়ার বিরুদ্ধে নির্বাচনে হস্তক্ষেপের অভিযোগ মার্কিন গোয়েন্দাদের
রাশিয়াসহ ‘প্রতিপক্ষ’ দেশগুলো বিরুদ্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপ চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দাদের দাবি, তারা নির্বাচন নিয়ে জনগণের আস্থা...