Read Time:5 Minute, 46 Second

ইসলাম নির্দিষ্ট কোনো জনপথ ও জাতির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; বরং একজন দায়িত্বশীল মুসলিম বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে সুযোগ পাবেন, সেখানেই ইসলামের আলো ছড়িয়ে দেবেন। ঠিক এ কাজটিই করছেন স্পেনের প্রসিদ্ধ শহর বার্সেলোনার তারিক বিন জিয়াদ মসজিদের ইমাম ও খতিব বাংলাদেশী তরুণ আলেম আব্দুল কাদির আল মাহদি। ইসলামকে ছড়িয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে তার যে আন্তরিক প্রচেষ্টা তার ফলাফল দেখা গেল গত সপ্তাহে; মাত্র ছয় দিনের ব্যবধানে তার কাছে কালিমা পড়ে ইসলাম গ্রহণ করলেন ডানিয়েলা (৪০) নামের এক নারী ও ডেভিড (২২) নামের এক যুবক।

ডানিয়ালা গত রোববার (২৩ অক্টোরব) এবং ডেভিড শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) তারিক বিন জিয়াদ মসজিদে এসে আনুষ্ঠানিকভাবে ইসলাম গ্রহণ করেন। যুবকের বাড়ি আফ্রিকার মাদাগাস্কারে হলেও মাত্র দুই বছর বয়সে বাবা-মায়ের সাথে স্পেনে আসেন এবং বর্তমানে স্প্যানিশ ভাষায় কথা বলেন। আর মধ্যবয়সী নারী ডানিয়েলা কলম্বিয়ার নাগরিক। স্পেনে বসবাস করছেন দীর্ঘদিন ধরে।

ডানিয়েলার ইসলাম গ্রহণ প্রসঙ্গে বাংলাদেশী আলেম আব্দুল কাদির আল মাহদি নয়া দিগন্তকে জানান, ‘তিনি প্রথমে অনলাইনে ইসলাম নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন এবং যত পড়েন, ততই ইসলামের প্রতি অনুপ্রাণীত হন। একদিন ডানিয়েলার দেখা হয়, আরবের এক ট্যুরিস্ট নারীর সাথে। তার কাছে তিনি মুসলমানদের ধর্মীয় ইবাদতখানার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করেন। তখন ওই আরব নারী নিজে তাকে আমাদের মসজিদে নিয়ে আসেন।’

আব্দুল কাদির আল মাহদি বলেন, ‘ডানিয়েলা মসজিদে আসার পর আমার সাথে তার সাক্ষাৎ হয়। আমি তাকে ইসলামের মৌলিক বিষয়াবলী ও শ্বাশত এ ধর্ম নিয়ে বিভিন্ন প্রোপাগান্ডার কথা বলি এবং সেগুলোর জবাব দেই। এতে তিনি ইসলাম গ্রহণের ব্যাপারে নিজের ইচ্ছার কথা ব্যক্ত করেন। এরপর রোববার আসরের পর তারিক বিন জিয়াদ মসজিদে কালিমা পড়ে ইসলামে দীক্ষিত হন ডানিয়েলা।’

আর ডেভিডের ইসলাম গ্রহণ সম্পর্কে বার্সেলোনার তারিক বিন জিয়াদ মসজিদের ইমাম আব্দুল কাদির আল মাহদি জানান, ‘তিনি এখনো পড়াশোনা করছেন। সাথে পার্ট টাইম জব করেন। কোনো ধর্মে বিশ্বাসী ছিলেন না। মানে একটু উদার নাস্তিক ছিলেন। বিগত কিছুদিন থেকে তিনি ইসলাম নিয়ে পড়াশোনা করছেন কিন্তু তার মনে অনেক প্রশ্ন ছিল। কোথায় কাকে প্রশ্ন করবেন খুঁজে পাচ্ছিলেন না।’

আব্দুল কাদির জানান, ‘পরে বার্সেলোনার একটি মুসলিম দোকানে কেনাকাটা করতে যান ডেভিড। সেখানে বার্সেলোনার সবচেয়ে পুরাতন মসজিদ ‘মসজিদ তারিক বিন জিয়াদের’ ইভিনিং মাদরাসার পোস্টার লটকানো ছিল। সেখান থেকে তিনি আমার নাম্বার সেইভ করেন। আমাকে ওয়াটসঅ্যাপে ম্যাসেজ করেন। এভাবে ম্যাসেজে কথাবার্তা হতে থাকে এবং আমি তাকে একদিন মসজিদে আসার আমন্ত্রণ জানাই।’

এরপর আমন্ত্রণের নির্দিষ্ট সময়ে ডেভিড মসজিদে চলে আসেন এবং ইমাম আব্দুল কাদিরকে নানারকম প্রশ্ন করেন। আব্দুল কাদির জানান, ‘তার সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে যাচ্ছিলাম এবং অনুভব করছিলাম যে, তিনি আমার উত্তরে সন্তুষ্ট। পরে আরো কয়েকদিন সময় দিই তাকে এবং বলি যদি আমার কথা আপনার ভালো লাগে, তাহলে শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) মসজিদে আসুন। সেদিন তিনি মসজিদে এলেন এবং ইসলাম গ্রহণ করলেন। আলহামদুলিল্লাহ।’

ডেভিডের ইসলাম গ্রহণের পর আব্দুল কাদির আল মাহদি তাকে স্প্যানিশ ভাষায় পবিত্র কুরআনের একটি প্রতিলিপি ও ইসলামের মৌলিক বিষয়ের কয়েকটি বেই উপহার দেন এবং ডেভিড নামের বদলে যুবকের নতুন নাম রেখে দেন দাউদ।

উল্লেখ্য, আব্দুল কাদির মাহদি সৌভাগ্যবান এক বাংলাদেশী তরুণ আলেম। যিনি ইউরোপের মাটিতেও মানুষকে ইসলামের দিকে আহ্বান করছেন। এ পর্যন্ত তার কাছে কালিমা পড়ে সর্বমোট ১৮ জন অমুসলিম ইসলামের সুশীতল ছায়ায় আশ্রয় গ্রহণ করেছেন।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post সন্ত্রাসী হামলায় দ. আফ্রিকায় বাংলাদেশি খুন
Next post ফোবানার ইসি মিটিং এ ইউথ চ্যাপ্টারের কার্যক্রমের ঘোষণা
Close