বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাকশালের গুহা থেকে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
শনিবার বিকেলে ডাকসুর সাবেক ভিপি ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার লেখা ‘কারাগারে বাইশ মাস’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে নাগরিক প্রকাশনা।
রিজভী বলেন, দেশের কারাগারে জীবন ও সেখানকার নিত্যদিনের ঘটনাগুলো মাহমুদুর রহমান মান্নার বইয়ে তুলে ধরা হয়েছে। কিংবদন্তি ছাত্রনেতা হিসেবে ডাকসুর সাবেক ভিপি মান্না ভাইয়ের লেখা বইটিতে নানা ঘটনার সমাহার ঘটেছে। আজকে দেশে গণতন্ত্রের যে সঙ্কট সেই সঙ্কটে মান্না ভাইরা যে ভূমিকা রাখতেন সেই ভূমিকা দমন করতেই তাকে আটক করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, জেলখানায় চোর ডাকাতসহ নানা ধরনের লোক আছে। সেখানে আমাদের মতো রাজনীতিবিদদের রাখা হয় তাদের সাথে। এটা কি নিপীড়ন নয়? এটা সাঙ্ঘাতিক নিপীড়ন। এ সময় বর্তমান সরকার রাজনীতির সকল শিষ্টাচার ভঙ করেছে বলেও মন্তব্য করেন রিজভী।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব আরো বলেন, এক সময় রাজনীতিতে একটা শৃঙ্খলা ও সম্মানবোধ ছিল। কিন্তু এই সরকার সকল শৃঙ্খলা ও নিয়ম নষ্ট করে ফেলেছে। এখন মাদকসেবীর যে সম্মান রাজনীতিবিদদের সেটাও নেই। মান্না ভাইয়ের সাথে যেমন আচরণ করা হয়েছে তা অত্যন্ত নিদারুণ, নিষ্ঠুর ও নিন্দনীয়।
তিনি বলেন, দেশে কেবল ভিন্নমতের রাজনীতিবিদদের নির্যাতন করা হচ্ছে। অথচ উন্নত রাষ্ট্রে কারাগারকে বলা হয় সংশোধনাগার। আর বাংলাদেশের কারাগারের ভয়ংকর পৈশাচিক রুপ। তারা এতোটা ভীতু যে কারাগারের ভেতরে পড়ার জন্য বইও নিতে দেয় না। আমি কারাগারে থাকাকালে বিখ্যাত লেখক দস্তয়ভস্কির ‘ক্রাইম এন্ড পানিশমেন্ট’ শীর্ষক বইটি নিতে দেয়নি। মান্না ভাই যে বই লিখেছেন তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও প্রাসঙ্গিক। লেখকের যে অন্তর্দৃষ্টি সেটা প্রতিফলিত হয়েছে তার বইয়ে।
রিজভী বলেন, তবে বইয়ের ভেতরে জিয়াউর রহমান ও স্বৈরাচার এরশাদকে নিয়ে যে তুলনা করা হয়েছে এটা ঠিক নয়। জিয়াউর রহমান ও এরশাদ কখনোই এক হতে পারে না। কারণ জিয়াউর রহমান একজন সেক্টর কমান্ডার। তিনি জীবনের ঝুঁকি মোকাবিলা করে যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছেন। তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা থেকে শুরু করে দেশের সকল উন্নয়নের রুপকার। বাকশালের গুহা থেকে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছেন জিয়াউর রহমান। সুতরাং দেশ রক্ষা ও দেশের উন্নয়নে তার ভুমিকা ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা যাবে না।
এস এম এ কবীর হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক, বইয়ের লেখক মাহমুদুর রহমান মান্না, শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, নাগরিক ঐক্যের ডা: জাহেদ উর রহমান, শাকিলউজ্জামান প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব মো: আবদুর রহিম, ওমর ফারুক পাটোয়ারী, ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহবুব মাসুম শান্ত মো: আবুল হাসান সহ নাগরিক ঐক্যের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
More Stories
আনন্দবাজারের রিপোর্ট: নব্য আওয়ামী লীগের প্রস্তুতি, নেতৃত্বে থাকবেন না শেখ হাসিনা?
নতুন কৌশল। আওয়ামী লীগ থাকবে, নেতৃত্বে শেখ হাসিনা থাকবেন না। তার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত নেতারাও বাদ যাবেন। আওয়ামী লীগের পরিচিত...
যে যাই বলুক নির্বাচন জুন অতিক্রম করবে না: আইন উপদেষ্টা
আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে যত...
প্রধান উপদেষ্টাকে দেওয়া বিএনপির চিঠিতে কী আছে
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস একটি চিঠি দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বুধবার দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায়...
টাইম ম্যাগাজিনের ১০০ প্রভাবশালীর তালিকায় ড. ইউনূস
২০২৫ সালে টাইম ম্যাগাজিনের ১০০ জন শীর্ষ প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় স্থান করে নিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ...
কবি রফিক আজাদের বাড়ি ভেঙে ফেলার ঘটনায় যা বলছে গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ
‘ভাত দে হারামজাদা/তা না হলে মানচিত্র খাবো’- জনপ্রিয় এই পঙক্তির স্রষ্টা, একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রয়াত কবি ও বীরমুক্তিযোদ্ধা রফিক আজাদের স্মৃতিবিজড়িত...
লন্ডনে তারেক রহমানের বাসায় গিয়েছিলেন জামায়াত আমির!
জামায়াতে ইসলামী নেতাদের সঙ্গে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার লন্ডনে সাক্ষাৎ হয়েছে। তাদের মধ্যে কী আলোচনা হয়েছে তা...