Read Time:4 Minute, 53 Second

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ গত মে মাসে ভারতের সঙ্গে সংঘাতে যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভূমিকার প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘ট্রাম্প সত্যিই একজন শান্তির মানুষ।’

জাতিসংঘে ভাষণ দিতে গিয়ে শুক্রবার শেহবাজ বলেন, ‘আমাদের বিশ্ব আজ আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে জটিল। সংঘাত বাড়ছে, আন্তর্জাতিক আইন খোলাখুলিভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে, মানবিক সংকট বাড়ছে, সন্ত্রাসবাদ শক্তিশালী হুমকি রয়ে গেছে, ভুয়া খবর ও বিভ্রান্তি মানুষের আস্থা নষ্ট করছে, জলবায়ু পরিবর্তন আমাদের টিকে থাকার জন্য হুমকি-বিশেষত পাকিস্তানের মতো দেশের জন্য।’

তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘আজ বহুপাক্ষিক সহযোগিতার কোনো বিকল্প নেই, এটি সময়ের দাবি। পাকিস্তানের পররাষ্ট্রনীতি শান্তি, পারস্পরিক সম্মান ও সহযোগিতার ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে।’

শেহবাজ মনে করিয়ে দেন, গত বছর এই মঞ্চ থেকেই তিনি বলেছিলেন যে পাকিস্তান যেকোনো বহিঃশত্রুর আগ্রাসনের বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে। তার বক্তব্য অনুযায়ী, মে মাসে ভারতের অঘোষিত আগ্রাসনের মুখে পাকিস্তান সেই প্রতিশ্রুতিই বাস্তবায়ন করেছে।

তিনি বলেন, ‘আমাদের শত্রু অহংকারে আচ্ছন্ন হয়ে এসেছিল, আর আমরা তাদের অপমানিত করে ফেরত পাঠিয়েছি। পেহেলগামের ঘটনায় আমার আন্তরিক প্রস্তাব ছিল ‘আন্তর্জাতিক তদন্ত’। কিন্তু ভারত আমার আন্তরিক প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে রাজনৈতিক সুবিধা নিতে চেয়েছিল। পরিবর্তে তারা আমাদের শহরে হামলা চালায় এবং নিরীহ নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু বানায়। আমাদের ভৌগোলিক অখণ্ডতা ও জাতীয় নিরাপত্তা লঙ্ঘিত হলে আমরা জাতিসংঘ সনদের ৫১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রতিক্রিয়া জানাই।’

শেহবাজ পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীর ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরের নেতৃত্বে সশস্ত্র বাহিনী অসাধারণ পেশাদারিত্ব ও সাহসিকতা দেখিয়েছে। এয়ার চিফ মার্শাল জহির বাবর সিদ্দিকীর নেতৃত্বে পাকিস্তানের পাইলটরা আকাশে ভারতের সাতটি যুদ্ধবিমান ধ্বংস করে ইতিহাস তৈরি করেছে।’

প্রধানমন্ত্রী জানান, চার দিনের তীব্র সংঘাতের পর পাকিস্তান শক্তির অবস্থান থেকেই যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছিল। তিনি বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার টিমকে, যারা সক্রিয়ভাবে যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করতে ভূমিকা রেখেছিলেন।

শেহবাজ বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ায় সম্ভাব্য ভয়াবহ যুদ্ধ ঠেকাতে ট্রাম্পের প্রচেষ্টা অত্যন্ত কার্যকর ছিল। তিনি সময়মতো এবং দৃঢ় পদক্ষেপ না নিলে এর পরিণতি ভয়াবহ হতো। এজন্য শান্তি প্রতিষ্ঠায় তার অসাধারণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ পাকিস্তান তাকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত করেছে। আমি মনে করি, তিনি সত্যিই একজন শান্তির মানুষ।’

এছাড়াও তিনি পাকিস্তানের বন্ধু রাষ্ট্র চীন, তুরস্ক, সৌদি আরব, কাতার, আজারবাইজান, ইরান, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং জাতিসংঘ মহাসচিবকে ধন্যবাদ জানান মে মাসের উত্তেজনার সময় কূটনৈতিক সহায়তা দেওয়ার জন্য।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতির দাবি ড. ইউনূসের
Next post মোদিকে তীব্র আক্রমণ ওয়াইসির, ‘আপনার ঢাকার বোন দিল্লিতে বসে আছে’
Close