Read Time:4 Minute, 15 Second

ফিরোজ আলম :

গত ৩০ ডিসেম্বর যে জাতীয় নির্বাচন হয়ে গেলো, সে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জিতবে এটা মুটামুটি সবারই একটা ধারণা ছিল। তবে অনুকূল প্রশাসন ও বিরোধীদের কার্যকরী ভূমিকার অভাবে আওয়ামীলগের এক বিস্ময়কর বিজয় হয়েছে। এই বিস্ময়কর বিজয়ের চেয়ে আরো বিস্ময়কর বঙ্গবন্ধু কন্যার নতুন মন্ত্রিসভা ঘোষণা। এই মন্ত্রিসভায় বাদ পড়েছে গতবারের ছত্রিশ জন মন্ত্রী যার মধ্য রয়েছে বাংলাদেশের অনেক বাঘা রাজনীতিবিদ।

এ ছাড়াও মন্ত্রী পরিষদে তিনি পরিবারের কাউকে স্থান দেননি। জনগণ এটাকে খুবই ইতিবাচক হিসাবে নিয়েছেন। বলা যায় জনতার হৃদয়ের চাওয়া তিনি অনুধাবন করেছেন। এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিশ্রুতি দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স। এই জিরো টলারেন্স বাস্তবায়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একটা সৎ ও চৌকষ মন্ত্রীসভা সময়ের দাবি। মন্ত্রিসভার আমূল পরিবর্তনের মাঝে দেশের মানুষ আলো দেখছে। তারা মনে করছে বঙ্গবন্ধু কন্যা উন্নয়নের পাশাপাশি সরকারের স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠায় এবার নতুন চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করলেন। নতুন ঘোষিত অনেকের পরিছন্ন ইমেজ রয়েছে। তাদের দেখে প্রত্যাশায় আস্থা পাই, যদিও অতীতে সততার পরীক্ষায় অনেকেই ব্যর্থ হয়েছে। তবুও নতুনদের মাঝে আমি স্বপ্ন দেখি, এই কারণে আনন্দিত।

তাহলে প্রশ্ন আসে শঙ্কা কেন? শঙ্কা আছে! বাংলাদেশের ৪৮ বছরের রাজনীতিতে আমরা বহু ষড়যন্ত্র দেখেছি। ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে নিহত হয়েছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। অথচ এই মহান নেতা কল্পনাও করতে পারতোনা বাঙালি তাকে হত্যা করতে পারবে। কিন্তু তার হত্যার পিছনে অন্যতম ষড়যন্ত্রকারী ছিল তারই দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সহকর্মী মুস্তাক। বাংলাদেশের রাজনীতিতে যাদেরকে হেভিওয়েট বা বাঘা রাজনীতিবিদ বলা হয়, তাদের যেমন বাংলাদেশ সৃষ্টিতে ইতিবাচক ভূমিকা রয়েছে, আবার ক্ষমতার রাজনীতিতে এই বাঘাদের অনেককে ষড়যন্ত্রে জড়িত হতে অথবা নীতিবিচ্যুত হতে দেখেছি।

ইতিহাস বলে আওয়ামী লীগের বড় শত্রু আওয়ামী লীগ। মন্ত্রিসভা থেকে যারা বাদ পড়েছেন, তারা অনেকেই স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় বাদ পড়েছেন, আবার অনেকে বাদ পড়েছেন বিতর্ক অথবা অসততার কারণে। এই বাদপড়াদের মাঝে আছে অনেক ক্ষমতালিপ্সু নেতা। ক্ষমতা প্রিয়তার কারণে অনেকে দুর্নীতি ষড়যন্ত্রে জড়িয়ে পড়ে। দুর্বৃত্তদেরও একটা সংঘবদ্ধ চক্র থাকে। এই চক্র সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু উদাসীন ছিলেন। এই দিক দিয়ে আমি বঙ্গবন্ধু কন্যাকে অনেক সচেতন এবং সতর্ক মনে করি। তিনি বন্ধু ও শত্রু সম্পর্ক নির্ণয়ে বঙ্গবন্ধুকে ছাড়িয়ে গেছেন। তবুও একটা আশঙ্কা থেকেই যায়!

পরিশেষে অভিনন্দন জানাই হারনামানা যোদ্ধা বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা ও তার স্বপ্ন বাস্তবায়নের নব সহচরীদের। আশাকরি জাতির প্রত্যাশা পূরণ হবে।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post নতুন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল
Next post পাইলটদের খোলা চিঠি : ট্রাম্পের কারণে নিরাপত্তাঝুঁকিতে যুক্তরাষ্ট্র
Close