সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বিদেশে পলাতকদের ফিরিয়ে আনতে ইন্টারপোলের সহায়তা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম।
রোববার (১৩ অক্টোবর) ধানমন্ডিতে ট্রাইব্যুনালের কার্যালয়ে এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।
তাজুল ইসলাম বলেন, বিচারক নিয়োগ হওয়া মাত্রই ট্রাইব্যুনাল ফাংশনাল হবে। এরপর আমরা নেসেসারি কিছু অর্ডারস চাইব। এ বিচার শুরুর আগে যেগুলো দরকার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা, আসামিদের বিদেশ যাওয়া বন্ধ করা, অনেক রকমের তথ্য-উপাত্ত এগুলো সিজ করার জন্য অর্ডার লাগবে। তাদের দ্রুততার সঙ্গে গ্রেপ্তারের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাহায্য লাগবে। সে ব্যাপারে ট্রাইব্যুনালের পক্ষ থেকে আদেশ আসবে। ইমপ্লিম্যান্ট করার দায়িত্ব কিন্তু ট্রাইব্যুনালের হাতে না, এর দায়িত্ব রাষ্ট্রকে নিতে হবে।
তিনি বলেন, মূলত যাদের নির্দেশে ও যাদের কারণে এই গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছিল, তাদের বিষয়গুলো যারা টপ কমান্ডারস… তাদের আমরা প্রায়োরিটির তালিকায় শুরুতে নিয়ে এসেছি। আইন অনুযায়ী তাদের গ্রেপ্তারে ইন্টারপোলের সাহায্য চাওয়া হবে। কোনো অপরাধী বিশ্বের যে কোনো প্রান্তে থাকলে, ইন্টারপোলের সিস্টেমের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পৃক্ততা থাকায় তাদের গ্রেপ্তারে বাংলাদেশ ইন্টারপোলে রেড নোটিশ পাঠাতে পারে।
তাজুল ইসলাম আরও বলেন, বিচারক নিয়োগ হলে এ সপ্তাহেই জুলাই গণহত্যায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ও দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হবে। শেখ হাসিনাসহ বিদেশে পলাতকদের ফিরিয়ে আনতে ইন্টারপোলের সহায়তা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ, ১৪ দলের নেতা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত গুম, হত্যা, গণহত্যাসহ ৬০টির বেশি অভিযোগ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জমা পড়েছে।
এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গেল জুলাই ও আগস্ট মাসে গণহত্যার অভিযোগ ওঠে। এসব অভিযোগের বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করার সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। এরই অংশ হিসেবে নতুন প্রসিকিউশন টিম ও তদন্ত সংস্থা গঠিত হয়েছে। বিচারের জন্য আইন সংশোধন ও ভবন মেরামতের কাজও চলমান। এমন পরিস্থিতিতেই আগামী সপ্তাহের মধ্যেই ট্রাইব্যুনালের বিচারক নিয়োগ হবে। স্বাধীনতার ৩৯ বছর পর ২০১০ সালে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়।
ওই বছরের ২৫ মার্চ ট্রাইব্যুনালের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। পরে ২০১২ সালের ২২ মার্চ ট্রাইব্যুনাল-২ নামে আরেকটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। তবে ২০১৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর দুটিকে একীভূত করে আবার একটি ট্রাইব্যুনাল বহাল রাখা হয়। ফলে একটি ট্রাইব্যুনালে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারকার্য চলমান ছিল।
More Stories
‘মার্চ ফর গাজা’য় বাংলাদেশের পাসপোর্টে ‘এক্সসেপ্ট ইসরাইল’ পুনর্বহালের দাবি
গাজায় ইসরাইলের আগ্রাসন ও ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রকাশের কর্মসূচি ‘মার্চ ফর গাজা’র ঘোষণাপত্রে বাংলাদেশের পাসপোর্টে ‘এক্সসেপ্ট ইসরাইল’ (ইসরাইল ব্যতীত) লেখাটি...
সরকারের একমাত্র কাজ শেখ হাসিনার বিচার করা: মৎস্য উপদেষ্টা
শেখ হাসিনার বিচার এই মাটিতে এই সরকারের আমলেই হতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একমাত্র কাজ যদি কিছু থাকে, সেটা হবে শেখ...
‘প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করুন’
দেশ ও জাতির কল্যাণে প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক...
ডিসেম্বরে নির্বাচনের লক্ষ্যে সংস্কারের তাগিদ প্রধান উপদেষ্টার
চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসে জাতীয় নির্বাচনের লক্ষ্য নিয়ে সংস্কার কার্যক্রম দ্রুত এগিয়ে নেয়ার তাগিদ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা এবং জাতীয় ঐকমত্য...
পুরোপুরি পুড়ে ছাই ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে নববর্ষ উদ্যাপনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে তৈরি হওয়া দুটি প্রতীকী মোটিফে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আজ শনিবার সকালে...
‘মার্চ ফর গাজা’য় অংশ নিতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনতার ঢল
চারুকলায় নববর্ষের শোভাযাত্রার জন্য তৈরি করা ভাস্কর্যে আগুন দেওয়া হয়েছে। কে বা কারা এই আগুন দিয়েছে তা এখনো শনাক্ত করতে...