রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে হানিফ ফ্লাইওভারের টোলপ্লাজায় ফলের দোকানি ফরিদ শেখকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ২১ জনের বিরুদ্ধে মামলার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাকিল আহম্মেদের আদালতে মামলাটি করা হয়। নিহত যুবক ফরিদ শেখের বাবা সুলতান মিয়ার জবানবন্দি গ্রহণ করে আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ৪ আগস্ট বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আন্দোলন চলাকালে ফরিদ শেখ যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভারের টোলপ্লাজার দক্ষিণ পাশের রাস্তা দিয়ে তার ফলের দোকানে যাচ্ছিলেন। এসময় শেখ হাসিনার নির্দেশে গণহত্যা চালানোর সময় পুলিশের গুলির আঘাতে মারাত্মক জখম হয়ে রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন। আশপাশের লোকজন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাকে মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। ফরিদ শেখের পাকস্থলির ডান পাশে লেগে বাম পাশ দিয়ে বেরিয়ে যায় গুলি। মুগদা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৬ আগস্ট বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে ফরিদ শেখ মারা যান।
অভিযোগে আরও বলা হয়, শেখ হাসিনা তার স্বৈরাচারী শাসন কায়েম রাখার জন্য ২০০৯ সাল থেকে বাংলাদেশের নিরীহ জনগণের ওপর অন্য আসামিদের সহায়তায় হত্যা, গুম, অপহরণ, বিকলাঙ্গসহ নানান ধরনের অমানবিক অপরাধ সংঘটন করে আসছিলেন। সজীব ওয়াজেদ জয়, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, শেখ রেহানা, শেখ হাসিনার যথাক্রমে পুত্র, কন্যা ও সহোদর বোন। আসামিদের নিজস্ব কোনো পেশা নেই বা কোনো ব্যবসায় জড়িত নন। তাদের একমাত্র কাজ হচ্ছে শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রীর পদে বহাল রেখে তার মাধ্যমে বাংলাদেশের টাকা লুট করে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে পাচার করা এবং লুটের টাকা দিয়ে উন্নত জীবনযাপন করা। আসামিদের কুপ্ররোচনায় ও পরামর্শে ১ নম্বর আসামি শেখ হাসিনা তার পোষ্য বাহিনী দিয়ে নির্বিচারে মানুষ হত্যা করে আসছিলেন। আসামিরা অসৎভাবে অর্থ লুট করার জন্য এবং রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ভোগ করার জন্য ২০০৯ সাল থেকেই শেখ হাসিনাকে যেকোনো উপায়ে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য উৎসাহ দিয়ে আসছেন। প্রয়োজনে গণহত্যার জন্যও শেখ হাসিনাকে তার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়, কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল ও বোন শেখ রেহানা টেলিফোন, মোবাইল ফোন ব্যবহার করে পরামর্শ দেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক আবদুল্লাহ আল মামুন, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি সৈয়দ নুরুল ইসলাম, সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ, অতিরিক্ত যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার, সাবেক কমিশনার ডিএমপি হাবিবুর রহমান, জাসদের হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেনন, ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ. আরাফাত, যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল হাসানসহ অজ্ঞাতনামা ২৫০ জন।
More Stories
পুরোপুরি পুড়ে ছাই ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে নববর্ষ উদ্যাপনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে তৈরি হওয়া দুটি প্রতীকী মোটিফে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আজ শনিবার সকালে...
‘মার্চ ফর গাজা’য় অংশ নিতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনতার ঢল
চারুকলায় নববর্ষের শোভাযাত্রার জন্য তৈরি করা ভাস্কর্যে আগুন দেওয়া হয়েছে। কে বা কারা এই আগুন দিয়েছে তা এখনো শনাক্ত করতে...
বদলে গেছে বাংলাদেশ পুলিশের লোগো
বদলে গেছে বাংলাদেশ পুলিশের লোগো। পূর্বে লোগোতে থাকা পাল তোলা নৌকা নতুন লোগোতে বাদ পড়ছে। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বাংলাদেশ পুলিশের...
বাংলা বর্ষবরণে ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’র নাম পরিবর্তন
বাংলা বর্ষবরণে ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’র নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। এর নতুন নাম করা হয়েছে ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’। এই নামে এবার বর্ষবরণের অনুষ্ঠান...
দেশে এতোদিন বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ ছিল না: প্রধান উপদেষ্টা
বিদেশি বিনিয়োগের জন্য দেশে আগে কখনো এত অনুকূল পরিবেশ ছিল না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।...
নাসার সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি, মহাকাশ গবেষণায় নতুন অধ্যায়ের সূচনা
বাংলাদেশ এখন ‘আর্টেমিস অ্যাকর্ডস’র ৫৪তম স্বাক্ষরকারী দেশ, যা যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার নেতৃত্বে শান্তিপূর্ণ ও অসামরিক মহাকাশ অনুসন্ধানকে উৎসাহিত...