হরতাল-অবরোধের নামে বিভিন্ন সময় নাশকতার ঘটনায় সারাদেশে বিএনপি-জামায়াতের নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে মোট ৮ হাজার ১০৫টি মামলা হয়েছে। ২০১২, ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সাল এবং ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর থেকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের দিন পর্যন্ত এসব মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৯৬৭টি মামলায় ১ হাজার ২৪১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব তথ্য জানিয়েছেন।
এর আগে ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য শাজাহান খান এক প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চান, ২০১২, ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ এবং ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর থেকে ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের দিন পর্যন্ত তথাকথিত গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নামে বিএনপি-জামায়াতের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর থেকে চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ে করা মামলাগুলোর বিষয়ে তদন্ত চলছে। আন্দোলনের নামে বিএনপি-জামায়াতের ‘সন্ত্রাসীদের’ হাতে গাড়ির চালক, চালকের সহকারী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, সাধারণ মানুষসহ ১৮৮ জন নিহত হন। আহত ও পঙ্গুত্ব বরণ করেন ৪ হাজার ৯৭৩ জন।
তিনি বলেন, বিএনপি ও তার দোসররা আন্দোলনের নামে আগুন-সন্ত্রাস, নিরীহ মানুষ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের হত্যা এবং জনগণের সম্পদ বিনষ্ট করার অশুভ খেলায় মেতে উঠেছে। এই অশুভ শক্তি শুধু মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও সংবিধানকেই অস্বীকার করছে না, আইনের শাসন ও মানবাধিকার সুরক্ষার যে জনবান্ধব ধারার সৃষ্টি হয়েছে, তা বানচাল করে অতীতের ধারাবাহিকতায় একাত্তরের পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে চাইছে। বাংলাদেশকে তারা আবারও উগ্র জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস-লুটপাটের সেই দুঃসহ দিনগুলোতে ফিরিতে নিতে চায়।
লক্ষ্মীপুর-৪ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মো. আবদুল্লাহর প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি বিএনপি-জামায়াত ও তাদের দোসররা অগ্নিসংযোগ, হরতাল ও অবরোধের নামে দেশে সহিংস ও অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টির অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়। ট্রেনে অগ্নিসংযোগ করে পুড়িয়ে নিরীহ মানুষ হত্যা, ট্রেনের লাইন উপড়ে ফেলা ও ফিশপ্লেটের ক্ষতিসাধন, প্রধান বিচারপতির বাসভবন, রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন স্থাপনা ও যানবাহন ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, বিভিন্ন নাশকতামূলক ও অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তারা জনগণের জীবন ও সম্পদের বিপুল ক্ষতিসাধন করে।
শেখ হাসিনা জানান, গত বছরের ২৮ অক্টোবর থেকে সহিংস কর্মসূচির মাধ্যমে সারা দেশে ৬০০-এর বেশি যানবাহন ভাঙচুর করা হয়। ১৮৪টি যাত্রীবাহী বাস, ৪৮টি ট্রাক, ২৮টি কাভার্ড ভ্যান/মালবাহী লরি, ৩টি সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ৪টি প্রাইভেট কার, ১১টি পিকআপ, ৫টি ট্রেন, ১৫টি মোটরসাইকেল, ৩টি লেগুনা, ১টি ওয়ার্ড কাউন্সিলর অফিস, ১টি অটোরিকশা, ১টি উচ্চবিদ্যালয়, ১২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৪টি বসতঘর, ১টি বৌদ্ধমন্দির, ১টি নৌকাসহ ৩২৮টি যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করা হয়।
More Stories
রিউমর স্ক্যানারের প্রতিবেদন: ড. ইউনূসকে জড়িয়ে সংঘবদ্ধ অপপ্রচার
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে নিয়মিত হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর ঘটনা সে...
প্যানিক হওয়ার কিছু নেই, যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি বাড়বে: প্রেস সচিব
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রপ্তানি বাড়বে, কমবে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, প্যানিক হওয়ার...
যুক্তরাষ্ট্রের ১০০ পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেবে বাংলাদেশ
বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে যুক্তরাষ্ট্রে আরও ১০০ পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেবে বাংলাদেশ। সরকারে এমন উদ্যোগের কথা জানিয়ে সোমবার (৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায়...
ট্রাম্পকে চিঠি দিয়ে ৩ মাস সময় চাইলেন ড. ইউনূস
বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি পণ্যের ওপর আরোপিত পাল্টা শুল্ক কার্যকরের সিদ্ধান্ত তিন মাসের জন্য স্থগিত রাখার অনুরোধ জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড...
আগামী ৪৮ ঘণ্টায় যুক্তরাষ্ট্রকে দুটি চিঠি দেবে বাংলাদেশ
ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যে ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের পর সরকার কী ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে, তা জানাতে আগামী ৪৮...
এ মাসেই হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে চার্জশিট
প্রায় সোয়া তিনশ মামলার আসামি বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরমধ্যে একটি মামলার চার্জশিট এ মাসেই ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা হবে...