আওয়ামী লীগ সরকার প্রত্যেকটি খাতে সীমাহীন দুর্নীতিতে লিপ্ত বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। দলটি বলেছে, গোটা দেশটাকে লুণ্ঠন করছে তারা। বিদেশে অর্থ পাচারেও দলটি শীর্ষে। আওয়ামী মার্কা দুর্নীতির কলঙ্ক তিলক বিশ্বের আর কোথাও নেই। দখলদার আওয়ামী সরকার শীর্ষ পর্যায় থেকে তৃণমূল পর্যন্ত দুর্নীতিকে ছড়িয়ে দিয়েছে।
বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী টিআইবি’র প্রতিবেদন নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের সমালোচনা করেন।
তিনি বলেন, কয়েকবার দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আওয়ামী সরকার। টিআইবি বলছে, এই দুর্নীতি বর্তমানে আরও অবনতিশীল হয়েছে। আর এজন্যই টিআইবিকে বিএনপির দালাল বলা হচ্ছে।
রিজভী বলেন, ‘দুর্নীতি সারা বিশ্বেই কমবেশি আছে। দুর্নীতির অপবাদটা যেভাবে বাংলাদেশকে নিয়ে দেওয়া হয়, তা মোটেও সত্য নয়। এ দেশে একটা বালিশের দাম ২৭ হাজার টাকা, বালিশের কভারের দাম ২৮ হাজার। কয়েকবার দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আওয়ামী সরকার। সাবেক এক অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, চার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি কিছুই না। এখন সরকারের কাছে প্রশ্ন- কত হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করলে সেটিকে আওয়ামী পরিভাষায় দুর্নীতি হিসেবে গণ্য করা হবে। ওবায়দুল কাদেরের কথায় মনে হচ্ছে- সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে দুর্নীতিকে পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া হচ্ছে।’
আবাসিক পর্যায়ে গ্যাসের প্রিপেইড মিটারের ভাড়া বৃদ্ধির সমালোচনা করে রিজভী বলেন, এমনিতেই আবাসিক পর্যায়ে গ্যাসের সরবরাহ মারাত্মক অবনতি হয়েছে। বাসা-বাড়িতে দিনে-রাতে অধিকাংশ সময় গ্যাস থাকে না। অথচ অবৈধ সরকার নানা কৌশলে গ্যাস ব্যবহারকারী সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা চুষে নিচ্ছে। মিটার ভাড়া এক লাফে দ্বিগুণ বৃদ্ধি জনগণকে শাস্তি দিতে করেছে সরকার। ৭ জানুয়ারি ভোট বর্জনের শাস্তি হিসেবে জনগণের ওপর এটা ধার্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন রিজভী।
তিনি আরও বলেন, জনগণকে বন্দুকের নলের মুখে দূরে ঠেলে ক্ষমতা দখলে রাখার একমাত্র লক্ষ্য গোটা দেশটাকে লুণ্ঠনের অভয়ারণ্য বানানো। আর এর ফলশ্রুতিতে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি অরাজকতার কালো আঁধারে আচ্ছন্ন। ভয়াবহ ডলার সংকটের কারণে রপ্তানি প্রবৃদ্ধিতে ধস নেমেছে। তৈরি পোশাক ও বস্ত্রখাতে নগদ সহায়তা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অবৈধ ‘ডামি সরকার’। এমনিতেই ক্রেতাদের কাছ থেকে পোশাকের অর্ডার অর্ধেকে নেমে এসেছে। এছাড়াও চামড়া, পাটজাত পণ্য, কৃষি পণ্যে নগদ সহায়তা অনেক কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে এসব পণ্যের রপ্তানি চরমভাবে হ্রাস পাবে।
নোবেল বিজয়ী ড. মুহম্মদ ইউনূসকে নিয়ে আওয়ামী সরকারের মন্ত্রীরা রাষ্ট্রশক্তিকে কব্জায় নিয়ে ‘ধরাকে সরা জ্ঞান’ করছেন উল্লেখ করে রিজভী বলেন, বাংলাদেশে নাকি বিচারপ্রক্রিয়া স্বচ্ছ। স্বচ্ছ বটে, তবে সেটি বর্তমানে বুড়িগঙ্গা নদীর পানির মতোই। রুচিহীন, আপত্তিকর ও বানোয়াট কথা বলার জন্য আওয়ামী মন্ত্রীদের পুরস্কৃত করা উচিত।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদীন ফারুক, কেন্দ্রীয় নেতা আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, অধ্যাপক ইমতিয়াজ বকুল প্রমুখ।
More Stories
শাহজাহান ওমরের হুংকার, ‘আমি আবারও এমপি-মন্ত্রী হব’
গ্রেপ্তারের পর ঝালকাঠি-১ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর হুংকার দিয়ে বলেছেন, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা, এসব মামলা আমার...
মুহাম্মদ ইউনূসকে যেতে দেবেন না, ধরে রাখুন : শফিক রেহমান
অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে কাজ করতে সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক শফিক রেহমান। তিনি বলেন, “তাকে...
বিচারের পর আওয়ামী লীগকে নির্বাচন করতে দেওয়া হবে : ড. ইউনূস
ক্ষমতায় থাকাকালে আওয়ামী লীগ যেসব হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে সেগুলোর বিচার শেষে দলটিকে নির্বাচন করতে দেওয়া হবে বলে...
সেনাকুঞ্জে হাস্যোজ্জ্বল খালেদা জিয়া
ছয় বছর পর প্রকাশ্যে কোনো অনুষ্ঠানে দেখা গেল হাস্যাজ্জ্বল খালেদা জিয়াকে। সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পাশের আসনে...
শেখ হাসিনাকে ফেরানোর নির্দেশনা নিয়ে যা জানালেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র তৌফিক হাসান বলেছেন, ভারতে অবস্থানরত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানোর বিষয়ে দুই দেশের বৈঠকে আলোচনার সুযোগ...
খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে কথা বললেন উপদেষ্টা মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে কথা বলেছেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ...