Read Time:5 Minute, 11 Second

পারিবারিক অবস্থা, সামাজিক অস্থিরতা এবং বৈশ্বিক যুদ্ধ পরিস্থিতিতে মানসিক চাপে নেই এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কম-বেশি সবাই মানসিক চাপ, অস্থিরতা, চাপা হতাশা, উদ্বেগ এবং দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। এসব অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি যেনো এখন মানুষের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে হিজাব পরা নারীদের সুসংবাদ দিয়েছে মার্কিন গবেষকদল।

ইসলামের বিধি মেনে মাথা-চুল ঢেকে রাখায় কর্মস্থল, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান, গণপরিবহনসহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে বিভিন্নভাবে হেয় বা হেনস্তার শিকার হয়ে থাকেন অনেক নারী। এর পরেও অনেক নারী-তরুণী এসব বাধা-বিপত্তিকে জয় করে শালীন সাজে প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হয়ে থাকেন। এবার এসব মর্যাদাশালী ও শালীন নারীদের সুসংবাদ দিলেন মার্কিন গবেষকরেরা। তারা জানিয়েছেন, যেসব নারী নিয়মিত হিজাব পরে থাকেন তারা মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত বা হতাশায় ভোগেন না। তারা অনেক বেশি উজ্জ্বীবিত ও প্রাণবন্তভাবে জীবনযাপন করেন।

যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটির স্কুল অফ সোশ্যাল ওয়ার্কের অধ্যাপক এবং ইউনিভার্সিটি অফ পেনসিলভানিয়ার রিলিজিয়ন অ্যান্ড আরবান সিভিল সোসাইটির গবেষণার প্রোগ্রামের সিনিয়র অনাবাসিক ফেলো ডেভিড আর হাজ এমন দাবি করেছেন। তিনি আধ্যাত্মিকতা, ধর্ম এবং সংস্কৃতি বিষয়ে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বিশেষজ্ঞ। বিজ্ঞান, আধ্যাত্মিকতা, এবং সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য এবং নিপীড়ন ইস্যুতে কর্মশালা পরিচালনা করে থাকেন।

গবেষণা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমিসহ আমার কয়েকজন সহকর্মী যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী মুসলিম নারীদের সঙ্গে কথা বলি। পর্দা বা হিজাবের সঙ্গে বিষণ্নতার কোনো সম্পর্ক আছে কী না তা আমরা খতিয়ে দেখেছি। হিজাব পরার সঙ্গে নারীর বিষণ্ণতার কোনো ধরনের সম্পর্ক আমরা খুঁজে পায়নি। তবে আমরা বিপরীত অবস্থান খুঁজে পেয়েছি। যেসব মুসলিম নারীরা হিজাব পরে থাকেন তাদের মধ্যে খুবই কম মাত্রায় বিষণ্নতার উপসর্গগুলো দেখা গেছে। আমরা গবেষণায় দেখতে পেয়েছি, হিজাব বা বোরখা আদতে মুসলিম নারীদের বিষণ্নতা থেকে সুরক্ষা দেয়।

মুসলিম নারীদের কথা গুরুত্বের সঙ্গে শোনায় আমাদের ফলাফল অনেক বেশি পরিপূর্ণতা পেয়েছে। মুসলিম নারীদের পর্দা বা হিজাব পরা থেকে নিরুৎসাহিত করার অপচেষ্টা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মানবাধিকারের লঙ্ঘন। জাতিসংঘের সার্বজনীন মানবাধিকার সনদের অনুচ্ছেদ-১৮ তে স্পষ্টভাবে সব মানুষকে যেকোনো পরিবেশে তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস প্রকাশ করার অধিকারকে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। যে নারীরা হিজাব পরাকে সাবলিলভাবে বেছে নিয়েছেন তারা তাদের সেই মৌলিক অধিকারকে সহজভাবে প্রকাশ করার অধিকার পাচ্ছেন।

এদিকে, গবেষকদলকে নিজেদের মতামত দিয়েছেন এমন একাধিক নারী জানিয়েছেন, হিজাব পরলে আমরা নিজেদের অধিনস্ত মনে করি না। আমরা বরং নিজের মুক্ত বা স্বাধীন মনে করি। এর মাধ্যমে আমাদের আত্মিক অবস্থায় উন্নয়ন হয়। শালীনভাবে নিজেকে উপস্থাপন করার মধ্যে আমরা সম্মানবোধ করি। নিজেদেরকে মুসলিম হিসেবে উপস্থাপন করে আত্মতৃপ্তি পাই। এর মাধ্যমে যেকোনো পরিবেশে নারীর ক্ষমতায়ন ও মর্যাদাকর সম্পৃক্ততা আমরা অনুভব করি। সেই সঙ্গে পশ্চিমাদের চাপিয়ে দেয়া সংস্কৃতিকে এড়িয়ে নিজেদের ধর্মীয় চর্চা স্বাধীনভাবে প্রকাশের অধিকার চর্চা করতে পারি।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post ২০২৩ সালে ১৬ লাখ বাংলাদেশিকে ভিসা দিয়েছে ভারত
Next post জাদু দেখানো পিটার হাসও অভিনন্দন জানিয়েছেন, এখন কাকে নিয়ে খেলবেন: বিএনপিকে ওবায়দুল কাদের
Close