কূটনীতিকদের উদ্দেশে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, যে কোনো সময় জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। এ সময় একটু ধৈর্য ধরা প্রয়োজন। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের মন্তব্য সরকার পছন্দ করছে না।
বুধবার (৮ নভেম্বর) ঢাকায় নিয়োজিত বিদেশি কূটনীতিকদের বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে প্রতিনিয়ত মন্তব্যের বিষয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরসঙ্গী হিসেবে সৌদি আরব সফর শেষে প্রতিমন্ত্রী আজ সকালে দেশে ফেরেন। বিকেলে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তার দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, সরকার অনেকবার ভিয়েনা সনদের প্রসঙ্গ টেনে রাষ্ট্রদূতদের তাদের সীমার মধ্যে দায়িত্ব পালন করার কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। তারপরও তারা অবাধ বিচরণ করছেন। যে কোনো কিছুতে বিবৃতি দিচ্ছেন। গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশের বিষয়ে তাদের চিঠি পাঠানো এবং ব্রিফ করার পরও তাদের পক্ষ থেকে বক্তৃতা ও বিবৃতি দেওয়া হচ্ছে। সরকার এটাকে চাপ মনে করছে কি না! আর রাষ্ট্রদূতদের সীমার মধ্যে থাকার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে কিছু বলা হবে কি না?
জবাবে শাহরিয়ার আলম বলেন, এটাকে তো আমরা চাপ কখনোই বলি না। অতীতেও বিষয়টি বলেছি। অতীতের উদাহরণ টেনে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগের ও পরের পরিস্থিতি…। খুবই দুঃখজনক হলেও সত্য।
কূটনীতিকদের তৎপরতায় সরকারের অসন্তুষ্ট হওয়ার কথা তুলে ধরে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিষয়টি আমরা পছন্দ করি না, এটা হলো প্রথম কথা। তারপরও তাদের আমরা কালচারাল স্পেস দিয়েছি। কারণ, এই কালচার (সংস্কৃতি) বাংলাদেশে আছে অনেক দিন থেকেই। কিন্তু আমরা চাই, সামনের দিনে এই কালচার থেকে সরে আসবেন (কূটনীতিকেরা)। বাংলাদেশের সিদ্ধান্ত বাংলাদেশই নেবে।
এ প্রসঙ্গে আলোচনায় বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে সমালোচনামুখর দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি নিয়েও কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। তিনি বলেন, ওই সব দেশের প্রতিষ্ঠানের গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গ্রহণযোগ্যতা আছে ৭০ শতাংশ কিংবা তারও বেশি। অপর দিকে সেই সব রাষ্ট্রে এসব সংস্থা জরিপ করে দেখছে যে তাদের দেশের (যেসব দেশ বাংলাদেশের সমালোচনায় মুখর) অভ্যন্তরীণ গণতান্ত্রিক কাঠামো ভেঙে পড়ছে বলে মনে করছেন প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ। এমন পরিসংখ্যানও কিন্তু উঠে এসেছে। তো এখানে যে (তাদের) নৈতিক ভিত্তি (মোরাল গ্রাউন্ড) নেই, সেটা পরিষ্কারভাবেই বলা যায়।
রাষ্ট্রদূতদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমি তারপরও বলব যে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা প্রায় হয়েই যাবে যে কোনো সময়। এ সময় একটু ধৈর্য ধরারও প্রয়োজন আছে। রাষ্ট্রদূত যারা আছেন, তারা আমাদের অতিথি। তারা যদিও ভিয়েনা সনদ না মানেন, আমাদের রাষ্ট্র হিসেবে দায়িত্ব আছে।
এক্ষেত্রে রাজনৈতিক নেতাকর্মীদেরও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের সুযোগ রয়েছে বলে মনে করেন শাহরিয়ার আলম। তিনি বলেন, আমি অনুরোধ করব সব রাজনৈতিক দলের নেতা ও কর্মীদের, তারা যেন আমাদের কাজে সহায়তা করেন। আমরা যেন কথা বলি দায়িত্ব নিয়ে।
More Stories
উগ্রবাদীদের সাথে সরকারের একটি অংশ মিলে হিন্দুদের উচ্ছেদে চেষ্টা চালাচ্ছে: চিন্ময় কৃষ্ণ দাস
বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী অভিযোগ করেছেন, ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পরে যেখানেই আন্দোলন হয়েছে, সেখানেই...
আ.লীগের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে: নুর
আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে জানিয়ে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, তাদেরকে বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে...
গুমের সঙ্গে জড়িত কেউ রাজনীতিতে ফিরতে পারবে না: প্রেস সচিব
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, গুমের সঙ্গে জড়িত কেউ রাজনীতিতে ফিরতে পারবে না। বিশ্বের কোথাও গুমের সঙ্গে জড়িতরা...
আনন্দবাজারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করলেন জামায়াত আমির
সমান মর্যাদা এবং সম্মানের ভিত্তিতে জামায়াতে ইসলামী ভারতসহ সব প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চায় বলে জানিয়েছেন দলটির আমির...
শাহজাহান ওমরের হুংকার, ‘আমি আবারও এমপি-মন্ত্রী হব’
গ্রেপ্তারের পর ঝালকাঠি-১ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর হুংকার দিয়ে বলেছেন, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা, এসব মামলা আমার...
মুহাম্মদ ইউনূসকে যেতে দেবেন না, ধরে রাখুন : শফিক রেহমান
অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে কাজ করতে সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক শফিক রেহমান। তিনি বলেন, “তাকে...