ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রকেই সন্ত্রাসী রাষ্ট্র বানিয়ে ফেলেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সেমিনারে এ কথা বলেন তিনি।
‘কৃষি উপকরণ ও খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি: সরকারের অব্যবস্থাপনা- কৃষক এবং জনগণের নাভিশ্বাস’ শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজন করে সোনালি দল, ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।
সেমিনারে মির্জা ফখরুল বলেন, রাষ্ট্রযন্ত্রকে পুরোপুরি সন্ত্রাসের রাজত্ব বানিয়ে দিয়ে আপনারা ক্ষমতায় টিকে থাকতে চান।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, এখন নতুন সুর শুরু করেছেন, বিএনপি সন্ত্রাসী দল। গতকাল (বৃহস্পতিবার)ও প্রধানমন্ত্রী বলেছেন। বিএনপি সন্ত্রাসী দল হলে আপনারা কী? আপনারা তো সন্ত্রাসের বাবা।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জনজীবনে নাভিশ্বাস উঠে গেছে জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এখন একেবারে মৃত্যুবরণ করার মতো অবস্থা হয়ে গেছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নজিরবিহীন। সব দেশেই কিছু কিছু দাম বেড়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে যেটা বেড়েছে, এটা অবিশ্বাস্য, নজিরবিহীন দাম বেড়েছে। এর পেছনে কারণ অনেকগুলো। মূল কারণ জবাবদিহিবিহীন সরকার।
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, প্রজেক্ট অনেক করা হচ্ছে। প্রজেক্টের মূল লক্ষ্য চুরি করা। এমন চুরি, যেটা এক কোটি টাকায় হবে, সেটা তিন কোটি টাকা। যেটা ১০ কোটি টাকায় হবে, সেটা ২০ কোটি টাকা।
সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, সবাই (সরকারি কর্মকর্তা) কোন না কোন প্রজেক্টের সঙ্গে জড়িত। প্রজেক্টের সঙ্গে জড়িত থাকলে পয়সা আসে। অবস্থা এখন এমন, সাধারণ মানুষ ডিম কিনতে পারছে না, ডাল কিনতে পারছে না, শাক কিনতে পারছে না। কিন্তু নির্বাচনে ঘুষ দেওয়ার জন্য ইউএনও এবং ডিসিদের জন্য ৩৬৫ কোটি টাকা দিয়ে নতুন গাড়ি কেনা হচ্ছে। তাঁদের টাকা দেয়া হচ্ছে আলাদা করে। শোনা যাচ্ছে, ইতিমধ্যে যাঁরা ডিসি–এসপি, যাঁরা নির্বাচন পরিচালনা করবেন, তাঁদের কাছে টাকা পৌঁছে গেছে।
বিএনপি শান্তিপূর্ণভাবে, নিয়মতান্ত্রিকভাবে, গণতান্ত্রিক উপায়ে আন্দোলন করছে জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, আমাদের তো উপায় নেই, আমরা খালি হাতে আছি। আমাদের হাতে তো বন্দুক- পিস্তল নেই যে আপনাকে ভয় দেখাব, গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসব। আপনাকে আমি ডিবিতে নিয়ে গিয়ে অত্যাচার নির্যাতন করব। সেই ক্ষমতা তো আমার নেই। আমার একটাই ক্ষমতা আছে, মানুষকে সংগঠিত করা, মানুষকে বলা যে এই অবস্থা থেকে বেরোতে চাইলে, মুক্তি পেতে চাইলে কোনো উপায় নেই, রাস্তায় বেরিয়ে আসতে হবে। এই রাস্তায় বেরিয়ে আসাই তো বড় কথা।
সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক তাজমেরি এস এ ইসলাম, আবদুস সালাম প্রমুখ।
ময়মনসিংহের বাংলাদশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সোনালি দলের সভাপতি অধ্যাপক গোলাম হাফিজ সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন। সঞ্চালনা করেন আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ।
More Stories
এক বছরের মধ্যে নির্বাচন চায় ৬১ শতাংশ মানুষ
৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অগাস্টের ৮ তারিখ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে একটি অন্তর্বর্তী...
নির্বাচনে যত দেরি হবে, ষড়যন্ত্র তত বাড়বে : তারেক রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, নির্বাচন যত দেরি হবে, ষড়যন্ত্র তত বাড়বে। সাবেক স্বৈরাচার দেশি-বিদেশি প্রভুদের সঙ্গে মিলে ষড়যন্ত্র...
অন্তর্বর্তী সরকার ফেল করলে আমাদের বিপদ আছে : এ্যানি
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেছেন, হারিয়ে যাওয়া গণতন্ত্রের ভিতকে শক্তিশালী করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করাই...
উগ্রবাদীদের সাথে সরকারের একটি অংশ মিলে হিন্দুদের উচ্ছেদে চেষ্টা চালাচ্ছে: চিন্ময় কৃষ্ণ দাস
বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী অভিযোগ করেছেন, ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পরে যেখানেই আন্দোলন হয়েছে, সেখানেই...
আ.লীগের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে: নুর
আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে জানিয়ে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, তাদেরকে বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে...
গুমের সঙ্গে জড়িত কেউ রাজনীতিতে ফিরতে পারবে না: প্রেস সচিব
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, গুমের সঙ্গে জড়িত কেউ রাজনীতিতে ফিরতে পারবে না। বিশ্বের কোথাও গুমের সঙ্গে জড়িতরা...