সরকার আবারও একতরফা নির্বাচনের পাঁয়তারা করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, সরকার সব কিছু চুরি করছে। তারা জনগণের ভোটাধিকার চুরি করে ২০২৪ সালে আবার একতরফা নির্বাচনের পাঁয়তারা করছে।
রোববার তারুণ্যের রোডমার্চ কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে নওগাঁর জেলখানা রোড মোড়ে জেলা বিএনপি আয়োজিত সংক্ষিপ্ত পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগই একসময় তত্ত্বাবধায়ক সরকার চেয়ে আন্দোলন করেছিল। এখন তারাই সংবিধান দেখায়। জনগণ আর ভুল করবে না। এই সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত বিএনপি ঘরে ফিরবে না। বিএনপির সঙ্গে এই দেশের অধিকার বঞ্চিত জনগণ আছে।
নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তিনি (শেখ হাসিনা) থাকলে নাকি ভালো নির্বাচন হয়, শেয়ালের কাছে মুরগি দিলে কী হয় তা সবাই জানে। জনগণ আর শেয়ালের কাছে মুরগি দেবে না।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ভোটের অধিকার রক্ষা ও গণতন্ত্র মুক্তির যে যুদ্ধ শুরু হয়েছে, এই যুদ্ধে হেরে গেলে বিএনপির খুব বেশি ক্ষতি হবে না। কিন্তু এই যুদ্ধে হেরে গেলে দেশের জনগণের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হবে। এই যুদ্ধে হেরে গেলে হেরে যাবে বাংলাদেশ।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা বারবার শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের দাবিগুলো তুলে ধরেছি। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে দেশের মানুষ ভোট দিতে পারেনি। আওয়ামী লীগ বারবার জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। যে সরকারের অধীনে নির্বাচনে গেলে জনগণ ভোট দিতে পারে না, ভোট চুরি হয়ে যায়, ডাকাতি হয়ে যায়, সেই সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাওয়া যায় না।
শুধু বিএনপি নয়, দেশের সব রাজনৈতিক দল, গণতন্ত্রকামী সমস্ত জনগণ অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট চায় বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, সরকার পতনের চূড়ান্ত আন্দোলন শুরু হয়ে গেছে। তারুণ্যের রোডমার্চের লক্ষ্য তরুণ-যুব সমাজকে জাগিয়ে তোলা এবং সরকার হটানোর চূড়ান্ত আন্দোলনে সম্পৃক্ত করা। ২০১৪ সালের আগে ভোটার হয়েছেন এমন লাখ লাখ তরুণ ভোট দিতে পারেনি। এই তরুণরা উম্মুখ হয়ে আছে। লাখ লাখ তরুণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য এই রোডমার্চ।
তিনি আরও বলেন, আগামী দিনে যেসব আন্দোলন কর্মসূচির ডাক আসছে, সেসব আন্দোলনে সাধারণ জনগণকে সঙ্গে রাজপথে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। এই লড়াই গণতন্ত্র ফিরিয়ে পাবার লড়াই। এই লড়াই জনগণের ভোটের অধিকার রক্ষার লড়াই। এই লড়াইয়ে জিততেই হবে।
ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে মুক্তির মাধ্যমে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দিতে হবে। অন্যথায় যেকোনো পরিস্থিতির জন্য সরকার দায়ী থাকবে।
তিনি বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে লাখ লাখ মামলা। সরকার মামলা ও জেল-জুলুমের মাধ্যমে বিএনপিকে আগামী নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে চায়।
পথসভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও যুবদল সভাপতি সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু।
এ সময় নওগাঁ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু বক্কর সিদ্দিক ওরফে নান্নু, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সমবায়বিষয়ক সম্পাদক নজমুল হক সনি, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ধলু, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আমিনুল ইসলাম, মামুনুর রহমান রিপন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
More Stories
শাহজাহান ওমরের হুংকার, ‘আমি আবারও এমপি-মন্ত্রী হব’
গ্রেপ্তারের পর ঝালকাঠি-১ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর হুংকার দিয়ে বলেছেন, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা, এসব মামলা আমার...
মুহাম্মদ ইউনূসকে যেতে দেবেন না, ধরে রাখুন : শফিক রেহমান
অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে কাজ করতে সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক শফিক রেহমান। তিনি বলেন, “তাকে...
বিচারের পর আওয়ামী লীগকে নির্বাচন করতে দেওয়া হবে : ড. ইউনূস
ক্ষমতায় থাকাকালে আওয়ামী লীগ যেসব হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে সেগুলোর বিচার শেষে দলটিকে নির্বাচন করতে দেওয়া হবে বলে...
সেনাকুঞ্জে হাস্যোজ্জ্বল খালেদা জিয়া
ছয় বছর পর প্রকাশ্যে কোনো অনুষ্ঠানে দেখা গেল হাস্যাজ্জ্বল খালেদা জিয়াকে। সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পাশের আসনে...
শেখ হাসিনাকে ফেরানোর নির্দেশনা নিয়ে যা জানালেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র তৌফিক হাসান বলেছেন, ভারতে অবস্থানরত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানোর বিষয়ে দুই দেশের বৈঠকে আলোচনার সুযোগ...
খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে কথা বললেন উপদেষ্টা মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে কথা বলেছেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ...