Read Time:4 Minute, 54 Second

নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে পদ্মা সেতু নিজস্ব অর্থায়নে তৈরি করে ফেলাকে অপমানের প্রতিশোধ হিসেবে দেখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, পদ্মা সেতু আমাদের আত্মবিশ্বাস তৈরি করেছে। পদ্মা সেতু সক্ষমতা ও আত্মবিশ্বাসের প্রতীক এবং অপমানের প্রতিশোধ। এই সেতু শুধু সেতু নয়, এটি প্রকৌশলজগতে এক বিস্ময়।

বুধবার (৮ জুন ) রাতে জাতীয় সংসদে এসব কথা বলেন তিনি।

আগামী ২৫ জুন উদ্বোধন হচ্ছে পদ্মা সেতু। সেজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাতে এদিন সংসদে প্রস্তাব উত্থাপন হয়। প্রধান হুইপ নূর ই আলম চৌধুরীর উত্থাপিত এই প্রস্তাবের ওপর আলোচনা করেন সরকারি ও বিরোধী দলের ৩৮ জন সদস্য। শেষে প্রস্তাবটি সর্বসস্মতিক্রমে গ্রহণ করা হয়।

সেই প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়ন বন্ধসহ নানা ঘটনা তুলে ধরেন সরকার প্রধান শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই একটা সিদ্ধান্ত। যখন আমরা সেতু করতে শুরু করলাম, সবার টনক নড়লো। সবাই সমীহ করতে শুরু করলো যে, না বাংলাদেশ পারে। এই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এগিয়ে যাবে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি বলেছি, যেদিন নিজের টাকায় করতে পারবো, সেদিন করবো। কিন্তু আমার দেশকে অপমান করে টাকা নিয়ে করতে হবে! আমাকে ভয় দেখানো হয়েছে, যদি এটা না হয় আপনার ইলেকশনের কী হবে? আমার কথা, জনগণ ভোট দেবে না, ক্ষমতায় আসবো না। ২০০১ সালে তো আমাকে আসতে দেওয়া হয়নি।

নিজের পরিবারের ওপর চাপ আসার কথা তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, একটি মানসিক যন্ত্রণা আমার পরিবারের ওপরে। আমার মেয়েটাকে, আমার ছেলে, আমার বোন। তাদের ওপর যে মানসিক চাপ! জয়কে নিয়ে স্টেট ডিপার্টমেন্ট বলছে- তোমার মাকে বলো, না হলে তোমার বিরুদ্ধে অডিট হবে। সে বলেছিল- হ্যাঁ করো, আমার মাকে এটা বলতে পারব না, আমার বিরুদ্ধে যত এনকোয়ারি আছে করতে পারে, আমি এখানে কোনো অন্যায় করিনি, আমার সবকিছু লিগ্যাল, আমি কোনো ভয় পাই না।

সরকারপ্রধান বলেন, কাকে না তারা চাপ দিয়েছে। শুধু আমার ওপরে? সবার ওপরে। এ রকম অবস্থাতে আমি কিন্তু দমে যাইনি। সততা আমার শক্তি। আমার শক্তি বাংলাদেশের জনগণ। এই জনগণকে অপমান করে কোনো কিছু করবো? এটা নয়।

পদ্মা সেতুতে অর্থায়নের শর্তে বিশ্ব ব্যাংক ও যুক্তরাষ্ট্রের ‘ব্যাপক চাপ’ থাকার কথা জানিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, এত চাপ! এই মামলা, যে সমস্ত খেলা। মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি। এই যে অপমান! স্টেট ডিপার্টমেন্ট দুই দুই বার আমার ছেলেকে সজীব ওয়াজেদ জয়কে ডেকে নিয়ে থ্রেট করেছে যে তোমার মাকে বলো-এমডির পদ থেকে ইউনূসকে সরানো যাবে না।

তিনি বলেন, গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি ড. ইউনূস বেআইনিভাবে ৭১ বছর পর্যন্ত এমডি পদে ছিল। তাকে কোনো অপমান করা হয়নি বরং তাকে ব্যাংকের উপদেষ্টা ইমেরেটাস হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাকে এমডি থাকতে হবে।

‘এই যে দেশের বিরুদ্ধে কাজ করা। আমরা ওয়ার্ল্ড ব্যাংককে দোষ দিচ্ছি না। কিন্তু এই ওয়ার্ল্ড ব্যাংককে দিয়ে তো এটা করানো হয়েছে। ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট তার শেষ কর্মদিবসে এটার টাকা বন্ধ করে দিয়ে যায়।’

তিনি আরও বলেন, আমি, আমার বোন রেহানা, আমার ছেলে কেউ বাদ যায়নি। ড. মসিউর রহমান, আমাদের সচিব মোশাররফ, মন্ত্রী আবুল হোসেন এদের ওপর যে জুলুম তারা করেছে এবং যখন অসত্য অপবাদ দিয়ে যখন পদ্মা সেতুর টাকা বন্ধ করে দিলে, তখন আমরা বললাম, আমরা নিজের টাকায় করবো

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত, নিহত ৪
Next post দক্ষিণ আফ্রিকায় অপহরণের ৪ দিন পর বাংলাদেশি উদ্ধার
Close