Read Time:5 Minute, 33 Second

ভারতের রাজ্য কর্ণাটকে চলছে হিজাব বিতর্ক। ইতিমধ্যে বিষয়টি গড়িয়েছে আদালত পর্যন্ত। আর এবার হিজাব ইস্যুতে জোরালো মন্তব্য করে আলোচনায় এসেছেন সর্বভারতীয় মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এআইএমআইএম) দলের প্রধান এবং হায়দ্রাবাদের প্রভাবশালী রাজনীতিক আসাদউদ্দিন ওয়াইসি।

তিনি বলেছেন, ভবিষ্যতে হিজাব পরিহিতা নারীই হবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। আজ রোববার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস নাউ এবং সিয়াসাত ডেইলি।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মুসলিম ছাত্রীদের হিজাব পরার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা নিয়ে চলমান বিতর্ক গড়িয়েছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। এর মাঝেই দেশটির উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের চলমান বিধানসভা ভোটের নির্বাচনী প্রচারণায় এই মন্তব্য করলেন ওয়াইসি। হিজাব ইস্যুতে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির তীব্র সমালোচনার পাশাপাশি নারী ক্ষমতায়ন নিয়েও সরব হয়েছেন তিনি।

উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের সমভল জেলায় নির্বাচনী প্রচারণার সময় দেওয়া বক্তব্যের একটি ভিডিও নিজের ভেরিফায়েড টুইটার অ্যাকাউন্টেও শেয়ার করেছেন আসাদউদ্দিন ওয়াইসি। ভিডিওতে হায়দ্রাবাদের প্রভাবশালী এই রাজনীতিককে বলতে শোনা যায়, ‘হিজাব পরিহিতা মেয়েরা চিকিৎসক হচ্ছেন, জেলা প্রশাসক হচ্ছেন, মহকুমাশাসক হচ্ছেন। তারা একদিন দেশের প্রধানমন্ত্রীও হবেন।’

এআইএমআইএম প্রধানের এই বক্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। এদিকে হিজাব ইস্যুতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারেরও ব্যাপক সমালোচনা করেছেন তিনি।

ওয়াইসির অভিযোগ, বিজেপি সরকার মুসলিম নারী ও মেয়েদের হিজাব পরতে দেয় না। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘তিনি (মোদি) নারীদের ক্ষমতায়নের কথা বলেন। ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’-এর প্রচার করেন। তিন তালাক নিষিদ্ধ করেন। হিজাব পরা নিষিদ্ধ করে বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াওয়ের প্রচার করছেন উনি?’

গত এক মাসের বেশি সময় ধরে কর্ণাটকের বিভিন্ন স্কুল কলেজে একদিকে হিজাব পরে ক্লাস করার অনুমতির দাবিতে আন্দোলন করছে মুসলিম ছাত্রীরা। অন্যদিকে হিন্দু শিক্ষার্থীরা গেরুয়া ওড়না পরে হিজাববিরোধী আন্দোলন শুরু করেছে।

কর্ণাটকের স্কুল-কলেজে হিজাব পরা মুসলিম মেয়েদের ঢুকতে না দেওয়াকে কেন্দ্র করে যে বিতর্ক শুরু হয়েছিল, তা বর্তমানে দক্ষিণ ভারতের এই রাজ্যটির সীমানা ছাড়িয়ে দেশটির বাকি অংশেও ছড়িয়ে পড়েছে। হিজাবে নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে বিক্ষোভ হয়েছে দিল্লি থেকে পশ্চিমবঙ্গে। মুখ খুলেছেন দেশটির বড় বড় রাজনীতিক ও আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্বরাও।

কর্ণাটকে এই আন্দোলনের সূত্রপাত হয়েছে গত মাসে উদুপি জেলার সরকারি বালিকা পিইউ কলেজে ছয়জন মুসলিম ছাত্রীকে হিজাব পরার কারণে শ্রেণিকক্ষের বাইরে বসতে বাধ্য করার পর। সেই সময় কলেজ প্রশাসন জানায়, ইউনিফর্মের অংশ নয় হিজাব এবং ওই ছাত্রীরা কলেজের নিয়ম লঙ্ঘন করেছে। ছাত্রীদের ক্লাসে হিজাব পরার বিষয়ে আপত্তি জানায় স্থানীয় ডানপন্থী বিভিন্ন গোষ্ঠী ও তাদের ছাত্র সংগঠন।

উদুপির এই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে রাজ্যের মান্দিয়া এবং শিভামোগগা এলাকায়। সেখানকার কলেজ কর্তৃপক্ষ হিজাব নিষিদ্ধ করে। যদিও আইনে হিজাব পরে মুসলিম ছাত্রীদের ক্লাসে আসতে কোনো বাধা নেই।

পরে উদুপির একটি প্রাক-বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ ছাত্রী হিজাব পরার ওপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আদালতের দ্বারস্থ হন। সেই বিষয়েই কর্ণাটকের হাইকোর্টে শুনানি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু হিজাব সংক্রান্ত পিটিশনটি শুনানির জন্য বৃহত্তর বেঞ্চে পাঠিয়েছে কর্ণাটক হাইকোর্ট।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post প্রবাসীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান মোমেনের
Next post ইনোসেন্ট কনভারসেশনকে পুঁজি বানানোর চেষ্টা হচ্ছে : আইনমন্ত্রী
Close