গণতন্ত্র বিকশিত করতে সব রাজনৈতিক দলকে পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। রাজনীতিতে সহমত সংস্কৃতি গড়ে তোলা অপরিহার্য বলে মনে করেন রাষ্ট্রপ্রধান।
সোমবার সন্ধ্যায় দুটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপকালে রাষ্ট্রপতি এই কথা বলেন। এদিন বঙ্গভবনে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন ও গণতন্ত্রী পার্টির সঙ্গে পৃথক আলোচনা করেন আবদুল হামিদ।
রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন জানান, রাজনৈতিক নেতাদের উদ্দেশে রাষ্ট্রপতি বলেন, সুস্থ রাজনীতির বিকাশে দল পরিচালনায় নীতি ও আদর্শের প্রতিফলন ঘটাতে হবে।
নেতাদের বঙ্গভবনে স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন কমিশন যাতে গঠন করা যায় সেজন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সুচিন্তিত মতামত খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তাই সব রাজনৈতিক ব্যক্তি ও দলকে জনকল্যাণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে।
সন্ধ্যায় বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের চেয়ারম্যান মাওলানা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী এবং মহাসচিব মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজীর নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল আলোচনায় অংশ নেন।
অন্যদিকে গণতন্ত্রী পার্টির সভাপতি ব্যারিস্টার আরশ আলী এবং সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেনের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বঙ্গভবনের দরবার হলে আলোচনায় অংশ নেন।
সংলাপে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নেতারা নির্বাচন কমিশনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর লক্ষ্যে ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রস্তাব দেন। তারা বলেন, ধর্মবিদ্বেষী, চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ, কালো টাকার মালিক, অবৈধ সম্পদের অধিকারী, সন্ত্রাসী, সাজাপ্রাপ্ত অপরাধী, ঋণখেলাপির সাথে জড়িত পরিবারবর্গকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের অযোগ্য ঘোষণা করতে হবে।
সংলাপে গণতন্ত্রী পার্টির নেতারা বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ নিয়োগের ক্ষেত্রে একটি সাংবিধানিক কাউন্সিল গঠনের ও প্রস্তাব করেন।
তারা প্রস্তাব করেন যে, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলের নেতা, স্পিকার, প্রধান বিচারপতি ও অ্যাটর্নি জেনারেলকে নিয়ে একটি সাংবিধানিক কাউন্সিল গঠন করা যেতে পারে এবং এই কাউন্সিল রাষ্ট্রপতির কাছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে নাম প্রস্তাব করবেন।
তারা নির্বাচন কমিশন গঠনের ক্ষেত্রে যোগ্য, দক্ষ, নির্মোহ, সৎ ও জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসীদের নিয়োগ দেওয়ার প্রস্তাব করেন।
আগামী ফেব্রুয়ারিতে শেষ হচ্ছে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ। এর আগে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করেছেন। গত ২০ ডিসেম্বর শুরু হওয়া এই সংলাপে এখন পর্যন্ত মোট ১১টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করেছেন রাষ্ট্রপতি। নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ৩৯টি দলের সঙ্গেই পর্যায়ক্রমে বৈঠক করতে চান রাষ্ট্রপ্রধান। তবে ইতিমধ্যে বিএনপিসহ কয়েকটি দল এই সংলাপে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
More Stories
শাহজাহান ওমরের হুংকার, ‘আমি আবারও এমপি-মন্ত্রী হব’
গ্রেপ্তারের পর ঝালকাঠি-১ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর হুংকার দিয়ে বলেছেন, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা, এসব মামলা আমার...
মুহাম্মদ ইউনূসকে যেতে দেবেন না, ধরে রাখুন : শফিক রেহমান
অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে কাজ করতে সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক শফিক রেহমান। তিনি বলেন, “তাকে...
বিচারের পর আওয়ামী লীগকে নির্বাচন করতে দেওয়া হবে : ড. ইউনূস
ক্ষমতায় থাকাকালে আওয়ামী লীগ যেসব হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে সেগুলোর বিচার শেষে দলটিকে নির্বাচন করতে দেওয়া হবে বলে...
সেনাকুঞ্জে হাস্যোজ্জ্বল খালেদা জিয়া
ছয় বছর পর প্রকাশ্যে কোনো অনুষ্ঠানে দেখা গেল হাস্যাজ্জ্বল খালেদা জিয়াকে। সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পাশের আসনে...
শেখ হাসিনাকে ফেরানোর নির্দেশনা নিয়ে যা জানালেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র তৌফিক হাসান বলেছেন, ভারতে অবস্থানরত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানোর বিষয়ে দুই দেশের বৈঠকে আলোচনার সুযোগ...
খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে কথা বললেন উপদেষ্টা মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে কথা বলেছেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ...