কাজী মশহুরুল হুদা
আগামী ১১ ডিসেম্বর ২০২১ লিটল বাংলাদেশ আমেরিকার বুকে মাইলস্টোন গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব হবে। এনিয়ে অনেকের মনে নানা জল্পনা-কল্পনা চলছে। চিলে কান নিয়ে যাওয়ার গুজব রটেছে। কারণ লিটল বাংলাদেশ সৃষ্টির প্রক্রিয়ায় ক্রেডিটের দাবিদার অনেকেই। গ্রন্থটি একটি ইতিহাস ভিত্তিক ডকুমেন্ট, প্রত্যেকেই তাদের স্ব স্ব অবস্থান ঐতিহাসিক করে রাখতে চান। এখন গুঞ্জনের কারণ হচ্ছে- গ্রন্থটিতে কি লেখা হয়েছে? কাকে কিভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে? এনিয়েই অনেকের মনে দুঃশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে। এখানে গ্রন্থটির প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। সীমিত সংখ্যক গ্রন্থ সবার দৃষ্টিতে পড়েনি। সবার পক্ষে পড়ে দেখাও সম্ভব হয়নি। তাই এই চিন্তা!
আমি গ্রন্থটি লিখেছি কাউকে তুলে ধরার জন্য নয়। কমিউনিটির অস্তিত্ব তুলে ধরাই ছিল মূখ্য এবং ‘লিটল বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার প্রক্রিয়ায় যেভাবে যা ঘটেছে তা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। বাংলাদেশ সৃষ্টির ইতিহাসের মত লিটল বাংলাদেশের ইতিহাস মুখে মুখে বিকৃত হয়েছে, এ কথা অস্বীকার করব না। কেউ কেউ গ্রন্থটি পড়ে হতাশও হতে পারেন। কারণ ব্যাক্তি বিশেষ নিজেদেরকে যেভাবে উপস্থাপন করেছেন তারা সেভাবে চিহ্নিত হননি। আমি পূর্বেও বলেছি অনুরোধের ঢেঁকি গেলা থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করেছি। যার কারণে এখনও আমার বন্ধু কম। বন্ধু থাকলেই গেলার প্রসঙ্গ চলে আসে। না থাকলে নিরাপদ। সত্য কথা কেউ পছন্দ করে না। সত্য তুলে ধরলে শত্রুর সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। আমার নামের পেছনে ‘সাংঘাতিক’ শব্দটা জুড়ে দেওয়া হয়। গত ৩০ বছর যাবত লস এঞ্জেলেস কমিউনিটিতে শৌখিন সাংবাদিকতা করে আসছি। আমাকে অনেকেই পছন্দ করেন না, এই লেখা লেখির কারণে। লেখা যদি কারও বিপক্ষে যায় তাহলেই কর্ম সাবার। সাংবাদিক থেকে হয়ে যাই ‘সাংঘাতিক’। আসলে বস্তুনিষ্ট সংবাদ, বাস্তবতা অনেকেই পছন্দ করেন না। পাম্প দিয়ে ফোলানো সবারই পছন্দ। সমালোচনা সহ্য করার সক্ষমতা অনেকেরই থাকেনা।
একবার কুদ্দুস খান তার প্রতিক্রিয়ায় লিখেছিলেন- ‘হুদা তুমি কার?’ কারণ আমি কারও পক্ষে ছাফাই গাইনা। কোন দলভূক্ত নই। নিরপেক্ষতাও কিন্তু কেউ পছন্দ করে না। ইদানিং অপছন্দনিয় লেখা লেখি ছেড়ে দিয়েছি। কারণ শত্রুর সংখ্যা বেশি হলে আমার জানাযায় লোক হবে না। তবে একথা বড় গলায় বলতে পারি প্রকাশিত গ্রন্থে কাউকে শত্রুভাবাপন্নভাবে দেখাইনি। কোন অনুরোধের ঢেঁকি গেলা হয়নি। লিটল বাংলাদেশ গঠনের ক্ষেত্রে যা ঘটেছে ৯৯% তাই লেখা হয়েছে। ১% সমঝোতা করতে হয়েছে। কারণ ব্যাক্তিমহদয় ঘোর আপত্তি জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এমন ঘটনা ঘটেনি আমি তাকে হেও প্রতিপন্ন করার জন্য উল্লেখ করেছি। কথাটা একটু ঘুরিয়ে ভদ্রভাবে লিখেছি যদিও সঠিক নয়। কারণ প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে আমার মত আরও অনেককেই পাব সাক্ষী হিসেবে। তবে আমি ঘটনা পরিবর্তন বা বিকৃত করিনি। শুধু ভদ্রভাবে ব্যাখ্যা দিয়েছি। এতে ইতিহাস পরিবর্তন হয়নি এ কথা বলতে পারি।
পরিশেষে, সবাইকে আহ্বান করি- উৎসবে অংশগ্রহণ করে স্মরণীয় ঘটনা সৃষ্টি করার। এখন যে সময় চলছে তা হলো সমঝোতা, ঐক্যের ও সৌহার্দ্যের। এই প্র্যাক্টিস চালু হোক আগামীর জন্য। গ্রন্থ পাঠের পর যদি কারও কোন তথ্য সংযোজন বা পরিবর্তন করার প্রয়োজন হয় তবে আমাকে জানাতে পারেন। প্রমাণ সাপেক্ষে তা আমার দ্বিতীয় সংস্করণে সংযোজন করবো।
তবে এখানে বলে রাখা ভালো যে- এই গ্রন্থের প্রতিটি লাইন মুদ্রনের আগে আমি ফেসবুক ও আমার পত্রিকায় প্রকাশ করেছি। এর উদ্দেশ্য ছিল কারও কোন জায়গাতে বিরোধ থাকলে সে যেনো আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে।
দেখা হবে আগামী ১১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টায়। বাংলাদেশ একাডেমীতে। শুভ কামনা রইল।
শান্তি শান্তি শান্তি।
More Stories
জাতিসংঘের কার্যক্রমে যুক্ত হলো বাংলা ভাষা
এখন থেকে জাতিসংঘের সব ধরনের কার্যক্রমের তথ্য ইংরেজি, ফরাসি, রুশ ভাষার পাশাপাশি বাংলাতেও পাওয়া যাবে। সাধারণ অধিবেশনের ৭৬তম সভায় গত...
অ লী ক প্র তি বি ম্ব
শামসুল আরিফীন বাবলু জানো স্বপ্নগুলোকে অন্ধকুঠীরে বন্ধ করে রেখেছিলাম! কাতরাতে কাতরাতে মৃতপ্রায়। আর সুখপাখিটা আমায় ছেড়ে চলে গেছে কবে, মনে...
মনে পড়ে
শা ম সু ল আ রি ফী ন বা ব লু সূর্যোদয়ের সাথে ঘুম থেকে উঠে প্রথম যাকে মনে পড়ে,...
মনে পড়ে
শা ম সু ল আ রি ফী ন বা ব লু সূর্যোদয়ের সাথে ঘুম থেকে উঠে প্রথম যাকে মনে পড়ে,...
বাংলা একাডেমিতে যোগ দিলেন কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন
প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন ৩ বছরের জন্য বাংলা একাডেমির সভাপতি পদে যোগদান করেছেন। সোমবার বাংলা একাডেমির শহিদ মুনীর চৌধুরী সভাকক্ষে...
বাঙলা মূকাভিনয়
কাজী মশহুরুল হুদা বাঙালীর ইতিহাস, হাজার বছরের ইতিহাস। বাঙলা একটি জাতির স্বত্তা। এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, এই বাঙালী...