Read Time:5 Minute, 20 Second

চার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের মামলায় পৃথক দুই ধারায় সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে (এসকে সিনহা) ১১ বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

পাচারের মামলায় এসকে সিনহাকে সাত বছর কারাদণ্ড, ৪৫ লাখ টাকা জরিমানা অনদায়ে আরও ছয় মাস কারাদণ্ড এবং অর্থ আত্মসাতের মামলায় চার বছর এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে তাকে আরও ছয় মাস কারাভোগ করতে হবে। মামলার আট আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় দুই জনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলমের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।

ফারমার্স ব্যাংকের সাবেক এমডি এ কে এম শামীমকে চার বছর কারাদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে তাকে আরও ৬ মাস কারাগারে থাকতে হবে।

ফারমার্স ব্যাংকের অডিট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুল হক চিশতী (বাবুল চিশতী), রণজিৎ চন্দ্র সাহা ও তার স্ত্রী সান্ত্রী রায়কে তিন বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে তাদের আরও ৩ মাস কারাগারে থাকতে হবে।

ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট স্বপন কুমার রায়, ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. লুৎফুল হক, সাবেক এসইভিপি গাজী সালাহউদ্দিন ও ফারমার্স ব্যাংকের ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সাফিউদ্দিন আসকারীকে তিন বছর কারাদণ্ড, ২৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৩ মাস কারাগারে থাকতে হবে।

টাঙ্গাইলের বাসিন্দা মো. শাহজাহান এবং একই এলাকার বাসিন্দা নিরঞ্জন চন্দ্র সাহার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের খালাস দেওয়া হয়েছে।

আসামিদের মধ্যে মাহবুবুল হক চিশতি কারাগারে ছিলেন। রায় ঘোষণার আগে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। সুরেন্দ্র কুমার সিনহা, সাফিউদ্দিন আসকারী, রণজিৎ চন্দ্র সাহা ও তার স্ত্রী সান্ত্রী রায় পলাতক রয়েছেন। অপর ছয় আসামি জামিনে ছিলেন। তারা আদালতে হাজির হন। এদের মধ্যে শাহজাহান ও নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা বাদে অপর আসামির সাজা হয়। রায় ঘোষণার পর সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাদের কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

দুদকের আইনজীবী মীর আহাম্মেদ আলী সালাম বলেন, ‘আদালত সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহাকে পৃথক দুই ধারায় ১১ বছর সাজা দিয়েছেন। একাধিক সাজা হলে যে ধারায় সর্বোচ্চ সাজা, সেই সাজাই তাকে খাটতে হবে। অর্থাৎ তাকে সাত বছর কারাভোগ করতে হবে।’

গত ১৪ সেপ্টেম্বর দুদক ও আসামিপক্ষের আইনজীবীর যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত রায়ের তারিখ ৫ অক্টোবর ধার্য করেন। কিন্তু ওইদিন বিচারক অসুস্থ হয়ে ছুটিতে থাকায় তা পিছিয়ে ২১ অক্টোবর ধার্য করা হয়। এরপর ২১ অক্টোবর রায় প্রস্তুত না হওয়ায় তা পিছিয়ে ৯ নভেম্বর ধার্য করেন আদালত।

২০১৯ সালের ১০ জুলাই ৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে একই বছরের ৯ ডিসেম্বর চার্জশিট দাখিল করেন দুদক পরিচালক বেনজীর আহমেদ।

গত বছর ১৩ আগস্ট একই আদালত ১১ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। এর আগে গত ২৪ আগস্ট মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। মামলায় ২১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত। গত ২৯ আগস্ট মামলাটিতে আত্মপক্ষ শুনানি হয়। তবে এসকে সিনহাসহ চার জন পলাতক থাকায় আত্মপক্ষ শুনানিতে অংশ নেননি। অপর সাত আসামি নিজেদের নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার চান। পলাতক চার আসামির পক্ষে যুক্তিতর্কও উপস্থাপন হয়নি।

 

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post সকল সীমান্তপথ খুলে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র
Next post বৃহত্তর কুমিল্লা জাতীয়তাবাদী ফোরাম ইউরোপ’র জার্মান কমিটি
Close