Read Time:6 Minute, 9 Second

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেছেন, বোট ক্লাব হয়েছে, জিয়াউর রহমান তো স্টিমার ক্লাব করেছিলেন। মদ-জুয়া বাংলাদেশে বন্ধ করে দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। পরে জিয়াউর রহমান এ মদ-জুয়ার লাইসেন্স দিয়েছিলেন।

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের এক আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন শেখ সেলিম।

চিত্রনায়িকা পরী মণির ঘটনার সূত্র ধরে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু পয়েন্ট অব অর্ডারে আলোচনায় বলেন, কয়েক দিন ধরে একজন চিত্রনায়িকার বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। উত্তরা বোট ক্লাবে যে ঘটনা ঘটেছে, সেই বোট ক্লাব কে করেছে? এই ক্লাবের সদস্য কারা হন? শুনেছি ৫০-৬০ লাখ টাকা দিয়ে এর সদস্য হতে হয়। এত টাকা দিয়ে কারা এর সদস্য হন? আমরা তো সারা জীবনে এত টাকা ইনকামও করি না।

সাবেক প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, রাজধানীর গুলশান ক্লাব, ঢাকা ক্লাব, উত্তরা ক্লাবসহ কয়েকটি ক্লাবে মদ খাওয়া হয়। জুয়া খেলা হয়। বাংলাদেশে মদ খেতে হলে লাইসেন্স লাগে। অথচ এসব ক্লাবে গ্যালন–গ্যালন মদ বিক্রি হয়। লাইসেন্স নিয়ে খেতে হলে এতো মদ তো বিক্রি হওয়ার কথা নয়। এত টাকা কোথা থেকে আসে? গ্রামে কেউ মদ খেলে পুলিশ ধরে নিয়ে আসে, কিন্তু এসব ক্লাবে মদ খাওয়ার পরও পুলিশ কোনো গ্রেপ্তার অভিযান চালায়নি।

চুন্নুর বক্তব্যের পর গোপালগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ সেলিম ফ্লোর নিয়ে বলেন, এটা তো বোট ক্লাব হয়েছে, কিন্তু জিয়াউর রহমান তো স্টিমার ক্লাব করেছিলেন। মদ-জুয়া বাংলাদেশে বন্ধ করে দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। জিয়াউর রহমান এ মদ-জুয়ার লাইসেন্স দিছে। তিনি ছেলেদের নিয়ে, মেয়েদের নিয়ে স্টিমার ক্লাব করে নৌযাত্রা করেছিলেন। যেটা ছিল হিজবুল বাহার, এটার নাম হয়তো সবাই জানেন। সুতরাং অপরাধ যেখান দিয়ে হয়েছে, সেখান থেকে তাদের আগে বিচার হওয়া উচিত। বিদেশিদের কথা বলে মদের অনুমোদন দেওয়া এবং ইসলামের কথা বলে যারা অপকর্ম করে, তারাই এ অপরাধ করেছিল। সুতরাং মাননীয় স্পিকার, আমার কথা হলো অপরাধীদের ধরতে হলে ওইখান দিয়েই ধরতে হবে। ওই খানে কারা অপরাধ করেছে? আমাদের সরকার সব সময় এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে অবস্থান করে।

এ সময় শেখ সেলিমের বক্তব্যের বিরোধিতা করে বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ স্পিকারের কাছ থেকে ফ্লোর নিয়ে বলেন, বোটক্লাব ও মদ নিয়ে মুজিবুল হক চুন্নু যে বক্তব্য দিয়েছেন তা আজকে আমাদের সমাজের বাস্তবচিত্র ও হাহাকার। তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছেন এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য। অথচ মাননীয় সিনিয়র সদস্য (শেখ সেলিম) বিষয়টিকে অন্যদিকে টেনে নিয়ে কোথায় গেলেন? তিনি ৪০ বছর আগে টেনে নিয়ে বললেন, ওই সময়ে মদের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল। ওই সময়ে জিয়াউর রহমান নিয়ন্ত্রিতভাবে মদের লাইসেন্স দিয়েছিলেন। কেননা আমাদের দেশে ফরেইন লোকজনও থাকে। অন্যান্য ধর্ম যেমন হিন্দু, সাওঁতাল, ডোম এবং যারা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের কাজ করে তাদের মদ খেতে হয়। সুতরাং যাদের জন্য মদের প্রয়োজন হয়, তাদের আইনের বৈধতা দেওয়ার জন্যই জিয়াউর রহমান আইন করেছিলেন। কোনো মুসলমানের জন্য আইনে অনুমতি নেই। জিয়াউর রহমান যদি মুসলমানদের মদের লাইসেন্স দিয়ে থাকেন যদি প্রমাণ করতে পারেন আমি সদস্য পদ ছেড়ে দেব।

হারুনুর রশীদের সদস্য পদ ছেড়ে দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করে তরিকত ফেডারেশনের সংসদ সদস্য নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে বলেন, জিয়াউর রহমান মুসলমানদের মদ খাওয়ার পারমিশন দেননি। উনি দেখাক, আইনে কোথায় বলা আছে, মুসলমানরা মদ খেতে পারবেন না। আইন এখানে এনে দেখাক। পদ ছেড়ে দিক।

পরে সংসদ সদস্য মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, এখানে রাষ্ট্রীয় কিছু বিষয় আছে। বঙ্গবন্ধু লাইসেন্স দেননি। ২১ বছরে আইনকে মিসইউজ করে এটা করা হয়েছে। বিদেশিদের অ্যারেঞ্জমেন্টের জন্য এটা করেছে। ক্লাবগুলোতে একজন ডাক্তার দিয়ে সার্টিফিকেট নিয়ে নেয়, দৈনিক মদ খেতে হবে। তারপর লাইসেন্স নেওয়া হয়। বিএনপি এই লাইসেন্স দিয়েছিল। এখন কোনো মুসলমান যদি মদ খায় সেখানে সরকারের কিছু করার নেই।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post যুক্তরাষ্ট্রে ছড়াচ্ছে করোনার ‘ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট’, বাড়ছে উদ্বেগ
Next post বিএফসি ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাঠিয়ে গাড়ি জিতলেন প্রবাসী
Close