Read Time:5 Minute, 11 Second

খুনের দায়ে মৃত্যুদণ্ড হয়েছিলো ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি আসলাম ফকিরের। অবশ্য ‘মানসিক অসুস্থ’ হওয়ায় ২০১৭ সালে রাষ্ট্রপতির বিশেষ ক্ষমা লাভ করেন তিনি। কিন্তু জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার দুই বছর পর আবারো আরেক খুনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে এই ‘মানসিক রোগি’ আসলাম ফকির। এই খুনির ভয়ে তটস্থ হয়ে আছে মানিকদহ ইউনিয়নের বাসিন্দারা। অভিযোগ রয়েছে এই খুনিকে আশ্রয় প্রশ্রয় দিচ্ছেন কাজী জাফরউল্ল্যাহ।

বেশ নাটকীয়ভাবে মৃত্যুদণ্ড থেকে মুক্তি পান এই আসলাম ফকির। প্রথমবার ব্যর্থ হয়ে দ্বিতীয় দফায় অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে পাঁচ বছর আগে অর্থাৎ ২০১৫ সালে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা পেয়েছিলেন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি আসলাম ফকির। দুই দফায় প্রাণভিক্ষা, মানসিক অসুস্থতা এবং সর্বশেষ এক সংসদ সদস্যের পক্ষ থেকে বিশেষ দিবসে সাধারণ ক্ষমা লাভের আবেদনের মতো অনেক নাটকীয়তার পর ২০১৭ সালে ১৩ বছরের কারাভোগ শেষে মুক্ত হন তিনি। রাষ্ট্রপতির প্রাণভিক্ষায় সেবারের মতো বেঁচে ফিরলেও আবারো এক হত্যা মামলার প্রধান আসামি হলেন এই আসলাম ফকির।

মানিকদহ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সাহেব আলীকে হত্যার প্রধান আসামি আসলাম ফকির। তিনিসহ তার সমমনা ওসমান মাতুব্বর এবং জাহাঙ্গীর শেখের সাথে একই এলাকার শাজাহান মাতুব্বরের গ্রাম্য আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গত মঙ্গলবার (২১ এপ্রিল) সকালে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। এক পর্যায় আসলাম ফকিরের লোকজন শাজাহান মাতুব্বরের লোকজনের বেশ কয়েকটি বাড়িঘর লুটপাট করে দামি জিনিসপত্র নিয়ে যায়। এ সময় তাদেরকে বাধা দিলে আসলাম ফকিরের লোকজন শাজাহান মাতুব্বরের সমর্থক শহিদ শেখকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে জখম করে। তাকে স্থানীয় জনতা উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তি করলে সেখানে সে মারা যায়। নিহত শহিদ শেখ উক্ত গ্রামের জয়নাল শেখের পুত্র। এই হত্যাকাণ্ডের পর আসলাম ফকিরকে প্রধান আসামি করে ৫৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

অবশ্য স্থানীয় থানার একটি সূত্র জানায়, এই মামলা গ্রহণ না করার জন্যও তাদেরকে চাপ প্রয়োগ করেন কাজী জাফরউল্ল্যাহ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মামলা গ্রহণ করা হয়েছে এবং আসলাম ফকিরসহ তার সহযোগিদের আটকের চেষ্টা চলছে।

মানিকদহ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তারেক সাঈদ বলেন, উক্ত ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সাহেব আলীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যাকারীরাই এলাকাটিকে উত্তপ্ত করে রেখেছে। সাহেব চেয়ারম্যানকে হত্যার প্রধান আসামি আসলাম ফকিরের ফাঁসির আদেশ হয়। পরবর্তীতে রাজনৈতিক বিবেচনায় তাকে রাষ্ট্রপতি সাধারণ ক্ষমা প্রদান করেন। জেল থেকে বের হয়ে এসে আসলাম ফকির গ্রামে অপরাজনীতি শুরু করে। আজকের ঘটনায় আসলাম ফকির নিজে নেতৃত্ব দিয়ে গ্রামে একজন সাধারণ মানুষকে খুন করিয়েছে। আমরা গ্রামবাসী এসব খুনের সঠিক বিচার সহ এলাকার পরিবেশ শান্ত রাখতে প্রশাসনের সদয় দৃষ্টি কামনা করছি।

রাষ্ট্রপতির প্রাণভিক্ষা এবং দীর্ঘ কারাভোগের পর মুক্ত হয়ে আসলাম ফকিরের আবারো নতুন করে খুনের মামলায় জড়ানোর বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হয়েছি আমি। এটা রীতিমতো প্রতারণা। তখন তারা বলেছিল আসলাম ফকির মানসিক রোগী। যদি আসলাম ফকির এই খুনের সঙ্গে জড়িত থাকে, তবে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে কঠিন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post রমজানে নিউ ইয়র্কে ফ্রি খাবার পাচ্ছেন মুসলিমরা
Next post সেপ্টেম্বরে আসছে করোনার প্রতিষেধক, দাবি চীনের
Close