প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের তাণ্ডবে মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে ইউরোপের দেশগুলো। ইতালি, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও জার্মানিতে করোনার বিষাক্ত ছোবলে মৃত্যু হয়েছে হাজার হাজার মানুষের।
তবে গত কয়েকদিন ধরে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা কমছে। মনে করা হচ্ছে, লকডাউন মেনে চলায় নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা কমেছে।
গত সপ্তাহ থেকে ইতালিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা কমা শুরু হয়েছে। ফ্রান্সেও গত সপ্তাহে সবচেয়ে কম মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। জার্মানিতে মূত্যুর হার ৬০ শতাংশ কমেছে। যুক্তরাজ্যে গত রবিবার সবচেয়ে কম প্রাণহানি হয়েছে।
রবিবার ইতালিতে ৪৩৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। গত ৭ দিন ধরে সবচেয়ে কম প্রাণহানি হয়েছে এদিন। দেশটির সিভিল প্রটেকশন এজেন্সি এই তথ্য জানিয়েছে। তবে ১৪ এপ্রিল গত ৭ দিনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। ওই দিন ৬০২ জন মানুষ মারা যান।
ফ্রান্সেও কমেছে মৃত্যুর সংখ্যা। মার্চের ২৯ তারিখের পর সবচেয়ে কম প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে রবিবার। এদিন ৩৯৫ জন মানুষ করোনায় প্রাণ হারান। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
গত রবিবার জার্মানিতেও সবচেয়ে কম প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। দেশটিতে ১০৪ করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারান। জার্মানির ফেডারেল রোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা রবার্ট কোচ ইনস্টিটিউট (আরকেআই) জানিয়েছে, জার্মানিতে ৭০ বছরের বেশি বয়সী মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি মারা গেছেন।
যুক্তরাজ্যে কমেছে করোনার প্রাণহানির সংখ্যা। দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত শনিবার ৮৮৮ জনের মৃত্যু হয়। কিন্তু রবিবারে এই সংখ্যাটি অনেকটাই কমে আসে। রবিবার ৫৯৬ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। গত সপ্তাহে ৭২০ থেকে ৮৫০-এর দিকে সংখ্যাটি ঘোরাফেরা করে। কিন্তু শনিবার থেকে কমতে শুরু করে।
এদিকে, ইতালি, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও জার্মানিতে করোনায় নতুন করে আক্রান্তের হারটিও কমেছে। চলতি সপ্তাহ থেকে করোনার আক্রান্তের হার নিচের দিকে নামতে শুরু করেছে। কড়া বিধি-নিষেধ আরোপ আর সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার জন্যই করোনায় আক্রান্তের হার নিচের দিকে নামছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।
সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার কিছুটা কমার পর ইউরোপের দেশগুলোতে বিধি-নিষেধ শিথিল করা শুরু হয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ দেশেই লকডাউন চালু থাকবে। গত সপ্তাহে ইতালি কিছু দোকান খুলে দেয়। দেশটিতে মার্চের ৯ তারিখ থেকে কড়া লকডাউন শুরু হয়। এখনও চলছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী জিউসেপ কন্টি জানিয়েছেন, লকডাউন তুলের নেওয়ার মতো পরিস্থিতি এখনও আসেনি।
এই সপ্তাহ থেকেই জার্মানিতে কিছু দোকান খুলে দেওয়া হয়েছে। মে মাসের ৪ তারিখ স্কুল-কলেজ খোলা হতে পারে বলে জানিয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মের্কেল। ফ্রান্সেও কমেছে করোনার সংক্রমণ। ফরাসি প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড ফিলিপ জানিয়েছেন, খুব ধীর গতিতে করোনার সংক্রমণ কমছে। তার দেশে মে মাসের ১১ তারিখ পর্যন্ত চলতে পারে লকডাউন।
যুক্তরাজ্যেও করোনার সংক্রমণ কমেছে। কিন্তু লকডাউন তুলতে রাজি নয় দেশটির সরকার। ব্রিটেনের সরকার এক ঘোষণায় জানিয়েছে, সংক্রমণ ঠেকাতে আরও কয়েক সপ্তাহ লকডাউন চলবে। কারণ করোনা ঠেকানোর আর কোনও উপায় নেই কারও হাতেই।
More Stories
পেন্টাগন থেকে ইরানের ওপর ইসরায়েলি হামলার পরিকল্পনার নথি ফাঁস
ইসরায়েলে ১ অক্টোবর ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরানের ওপর ইসরায়েলি হামলার পরিকল্পনার নথির সামাজিক মাধ্যমে ফাঁস হয়েছে। এতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও...
হামাসপ্রধান সিনওয়ার নিহতের গুঞ্জন, খতিয়ে দেখছে ইসরায়েল
হামাসের নতুন প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ার দখলদার ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হামলায় নিহত হওয়ার গুঞ্জন উঠেছে। বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) বেশ কয়েকটি ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমে...
বাংলাদেশিসহ সব শান্তিরক্ষীকে সরিয়ে নিতে বললেন নেতানিয়াহু
লেবাননে শান্তিরক্ষী হিসেবে দায়িত্বরত সব সেনাকে সীমান্তবর্তী অঞ্চল থেকে সরিয়ে নিতে জাতিসংঘকে অনুরোধ জানিয়েছেন দখলদার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। রোববার...
ইয়েমেনে সম্মিলিত বিমান হামলা চালালো যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য
ইয়েমেনের হোদেইদাহ বিমানবন্দর, সানা এবং ধামার সিটিকে লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। ইয়েমেনের হুথি সমর্থিত টেলিভিশন চ্যালেন...
মুসলিমদের শত্রু এক: খামেনি
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে মুসলিম বিশ্বকে এক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছেন, আমরা যদি এক হতে পারি...
ইসরাইলকে আরও কঠোর জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি
ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ইসরাইল যদি ‘সর্বনিম্ন ভুল’ করে তাহলে তেহরান নিশ্চিতভাবে আরও ‘শক্তিশালী এবং কঠোর প্রতিক্রিয়া’...