Read Time:4 Minute, 39 Second

নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বিপর্যস্ত মানুষ। টেস্টিং কিটের জন্য হাহাকার সব দেশে। এবার বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত কুকুরের মাধ্যমে এই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের শনাক্ত করা হবে। যুক্তরাজ্যের ‘মেডিকেল ডিটেকশন ডগস’ নামের একটি দাতব্য সংস্থা এই উদ্যোগ নিয়েছে। প্রশিক্ষিত এসব কুকুর ঘণ্টায় ৭৫০টি করোনা টেস্ট করতে পারবে!

ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড ডেইলি মিরর জানিয়েছে, লন্ডন স্কুল অফ হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিকাল মেডিসিন (এলএসএইচটিএম), ডারহাম ইউনিভার্সিটি এবং মেডিকেল ডিটেকশন ডগস নামের একটি সংগঠন সম্মিলিতভাবে কুকুরের মাধ্যমে করোনাভাইরাস শনাক্তের সম্ভাবনাটি অনুসন্ধান করছে।

গবেষকরা জানিয়েছেন, তারা করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের চিহ্নিত করতে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুরের সাহায‌্য নিতে চান।

বিশেষজ্ঞদের দাবি, সব অসুখ ও ভাইরাসের নিজস্ব কিছু গন্ধ থাকে। করোনাভাইরাস আক্রান্ত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর শরীরের কিছু নমুনার গন্ধ প্রথমে শুঁকতে দিতে হবে কুকুরদের। তারপর তাদের নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে রোগীদের দ্রুত শনাক্ত করার চেষ্টা করা যেতে পারে।

এর আগে ম্যালেরিয়া, ক্যানসার, পার্কিনসন্স ও ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন আক্রান্ত রোগীদের গায়ের গন্ধ শুঁকে বা তাদের শরীর থেকে নেওয়া কোনো নমুনার গন্ধ শুঁকে অসুখ চিহ্নিত করেছে লন্ডনের ওই সংগঠনের প্রশিক্ষিত কুকুরেরা। কুকুরের এই ঘ্রাণশক্তির সাহায্যে অসুখের গন্ধ বিচারের বিষয়টিও তাই এবার করোনার সংকটে কাজে লাগাতে চায় ব্রিটেন।

লন্ডনের মেডিকেল ডিটেকশন ডগস সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ক্লেয়ার গেস্টের কথায়, ‘প্রশিক্ষণ দিলে কুকুর কভিড-১৯ ভাইরাস চিহ্নিত করতে পারবে। এ ব‌্যাপারে আমরা নিশ্চিত। তবে কীভাবে সংক্রামিত রোগীর কাছ থেকে ভাইরাস সংগ্রহ করে আমরা নিরাপদে তা কুকুরের সামনে তুলে ধরব, এখন সেটাই দেখার। আমাদের লক্ষ্য, কুকুরকে এমনভাবে ট্রেনিং দেওয়া যাতে তারা করোনা রোগীর পাশাপাশি করোনা সংক্রমণের প্রাথমিক অবস্থায় থাকা রোগীদেরকেও চিহ্নিত করতে পারে। এর ফলে ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসও উপকৃত হবে।’

সংগঠনের কর্মকর্তাদের দাবি, কুকুরদের করোনার গন্ধ বিচারের জন্য আগামী ছ’সপ্তাহ বিশেষ ট্রেনিং দেওয়া হবে। তারপরই মহামারির আকার নেওয়া এই অসুখকে প্রতিহত করতে তাদের কাজে লাগানো শুরু হবে।

বিজ্ঞানীদের দাবি, কুকুর গন্ধ শুঁকে নির্ভুল শনাক্ত করে। এ ক্ষেত্রে তারা পারদর্শী হয়ে উঠলে রোগীদের গায়ের গন্ধ শুঁকিয়ে দেখানো হবে। এর ফলে কোনো ইঞ্জেকশন বা অন্য কোনো কিটের সাহায্যে করোনাভাইরাস চিহ্নিত করার দরকার পড়বে না।

ব্রিটেনে এরই মধ্যে মহামারি আকার নিয়েছে করোনাভাইরাস। আক্রান্তের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৪ হাজার ২১৭ জনে। মৃত্যু হয়েছে ১৫ হাজার ৪৬৪ জনের। এদিকে এর মধ্যেই করোনা টেস্টের কিটের অভাব দেখা দিয়েছে ব্রিটেনে। এই অবস্থায় কুকুরদের ঘ্রাণশক্তি কাজে লাগানো গেলে তা অনন্য নজির গড়বে।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post ‘অভাবী মানুষ ত্রাণ পাচ্ছে কিনা, নজরদারি করবেন সচিবরা’
Next post ‘ভেবেছিলাম মরে যাচ্ছি, কোনোদিন আর জাগব না’
Close