Read Time:3 Minute, 58 Second

জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন ছাড়া বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, “এই সমঝোতার পথেই আমাদের এগোতে হবে। এখান থেকে বের হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। দেশ ও জাতির শান্তির জন্য এটিই একমাত্র পথ।”

রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের তৃতীয় দফার সংলাপের দ্বিতীয় দিনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ড. ইউনূস বলেন, “আমরা হয়তো অনেক যুক্তি দেখাতে পারি। কিন্তু এসব যুক্তির মধ্যে থেকে বেরিয়ে সমাধানের পথেই থাকতে হবে। অনেকের কষ্ট হলেও মেনে নিতে হবে—কারণ, এই কষ্টই পরে শান্তি দেবে, দেশের জন্য তা হবে বড় শান্তি।”

তিনি বলেন, ছাত্র–জনতার গণ–অভ্যুত্থান আমাদের যে নবযাত্রার সুযোগ করে দিয়েছে, সেটির একমাত্র সমাধান সমঝোতার মধ্য দিয়ে নতুন বাংলাদেশ গঠন।

ড. ইউনূস বলেন, “এই নির্বাচন (২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে নির্ধারিত) হবে একটি মহোৎসবের নির্বাচন। এটা শুধু নির্বাচন নয়, এটা হবে জাতির সত্যিকার নবজন্ম। আমরা যদি এই নবজন্ম লাভ করতে পারি, তাহলে অতীতের ত্যাগ, রক্ত, আত্মাহুতি—সবই সার্থক হবে।”

তিনি বলেন, ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থান আমাদের হাতে যেন এক ‘আলাদিনের চেরাগের দৈত্য’ তুলে দিয়েছে। এখন আমরা চাইলে শুধু এক কাপ চা নয়, বরং গোটা দুনিয়া পাল্টে দিতে পারি।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “স্বৈরাচার আসার সব পথঘাট বন্ধ করতে হবে। এখানে দ্বিমতের কোনো জায়গা নেই। আমরা যদি একমত না হই, তাহলে সমাধান অসম্ভব হয়ে পড়বে।”

তিনি বলেন, “আমাদের ঐক্যের দরকার। কী চাই, সেটা ঠিক করতে হবে। কীভাবে হবে, সেটা দৈত্য ঠিক করে দেবে। এই একবারের জন্য আমাদের হাতে এমন সুযোগ এসেছে, যা হয়তো আর আসবে না।”

ড. ইউনূস আশা প্রকাশ করে বলেন, “এই ঐকমত্য কমিশন বিশ্বের জন্য একটি দৃষ্টান্ত হবে। এমন নিখুঁত ও নির্দোষভাবে কাজটি শেষ করতে হবে, যাতে করে সত্যিকার অর্থে একটি নতুন জাতি জন্ম নিতে পারে।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা হাইওয়ে তৈরি করে ফেলেছি, এখন শুধু সামনে এগিয়ে যাওয়ার পালা। আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে যদি সব কাজ শেষ করতে পারি, তাহলে শুধু আমরা নয়, গোটা পৃথিবী আমাদের কাছ থেকে শিখতে আসবে।”

কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় আয়োজিত এই বৈঠকে বক্তব্য দেন: আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ, এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন, ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post জাকসুর ভিপি স্বতন্ত্রের জিতু, জিএস শিবিরের মাজহার
Next post সমৃদ্ধ, স্বনির্ভর ও ন্যায়ভিত্তিক বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার তারেক রহমানের
Close