Read Time:5 Minute, 7 Second

যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ফিলিস্তিনের পক্ষে প্রতিবাদে অংশ নেওয়ায় প্রায় তিন শতাধিক বিদেশি শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করা হয়েছে। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) গায়ানায় এক সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এ তথ্য জানান।

শুক্রবার (২৮ মার্চ) ডয়চে ভেলের এক প্রতিবেদনে এ খবর প্রকাশিত হয়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্ক রুবিও বলেন, ‘আমরা প্রতিদিনই এটা করছি৷ যখনই আমি এই উন্মাদদের (বিক্ষোভকারীদের) কাউকে পাচ্ছি, তাদের ভিসা নিয়ে নিচ্ছি৷’ এভাবে ভিসা বাতিলের ধারাবাহিকতা থাকলে এক পর্যায়ে বিক্ষোভকারী আর কোনো শিক্ষার্থী থাকবে না বলেও জানান তিনি।

শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষতি করছে দাবি করে রুবিও বলেন, ‘আমরা তাদের এই দেশে আসার জন্য এবং পড়াশোনার জন্য ভিসা দিয়েছি, সামাজিক অ্যাক্টিভিস্ট (আন্দোলনকর্মী) হওয়ার জন্য নয়, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ক্ষতি করার জন্য নয়৷’

ক্ষমতায় আসার পর থেকে ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রের নীতি, বিশেষ করে ইসরায়েল নিয়ে ভিন্নমত পোষণকারী বিদেশিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছেন৷ এর মধ্যে অনেককে গ্রেপ্তার ও ডিপোর্ট বা জোরপূর্বক ফেরত পাঠানোর চেষ্টা করা হয়েছে৷

রুবিও এই বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের নীতি তুলে ধরে বলেন, কেউ আমাদের মিথ্যা বলে ভিসা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করে সেই ভিসার মাধ্যমে এই ধরনের কর্মকাণ্ডে যুক্ত হলে আমরা তার ভিসা প্রত্যাহার করবো৷

যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের ফার্স্ট অ্যামেন্ডমেন্ট বা প্রথম সংশোধনীতে বাকস্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেওয়া হলেও ট্রাম্প প্রশাসন বলছে—বিদেশি নাগরিকদের জন্য তা প্রযোজ্য নয়, যদিও এ নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে চরম দ্বিমত রয়েছে৷

সবশেষ ম্যাসাচুসেটসে টাফটস বিশ্ববিদ্যালয়ের তুর্কি ডক্টরাল শিক্ষার্থী রুমেইসা ওজতুর্ককে তার বাড়ি থেকে গত মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) গ্রেপ্তার করেছেন অভিবাসন কর্মকর্তারা৷ তিনি ক্যাম্পাসের একটি পত্রিকায় গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধকে গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতির আহ্বান জানিয়ে নিবন্ধ লিখেছিলেন৷ তবে অন্য বন্দিদের মতোই তার বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের কোনো অভিযোগ নেই৷ কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র দাবি করেছেন, তিনি ‘আমেরিকানদের হত্যায় উৎসাহ দেওয়া বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন হামাসকে সমর্থন দেওয়ার কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত৷’

ঐ রাজ্যের ডেমোক্র্যাট কংগ্রেস সদস্য আয়ান্না প্রেসলি রুমেইসার আটককে ‘মত প্রকাশের সাংবিধানিক অধিকারের ভয়াবহ লঙ্ঘন’ বলে অভিহিত করেছেন৷ ট্রাম্প প্রশাসন ‘বৈধ প্রক্রিয়ায় থাকা শিক্ষার্থীদের অপহরণ’ করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি৷ রুমেইসাকে তিনি ‘রাজনৈতিক বন্দি’ বলেও উল্লেখ করেন৷

এর আগে গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি থাকা ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী মাহমুদ খালিল এবং ভারতের পোস্টডক্টরাল গবেষক বদর খান সুরিসহ অনেক শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন৷ তারাও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য অভিযুক্ত নন৷ আদালত এই দুইজনেরই ডিপোর্ট সাময়িকভাবে স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছে।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post মিয়ানমারে বাংলাদেশি নাগ‌রিকরা নিরাপদ রয়েছেন : রাষ্ট্রদূত
Next post নির্বাচনের পরে সংস্কার হবে না: নাহিদ ইসলাম
Close