Read Time:5 Minute, 56 Second

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে যতটুকু সংস্কার করা দরকার, ততটুকু সংস্কার করে নির্বাচনের মাধ্যমে বিদ্যমান সমস্যার সমাধান করতে হবে।

শুক্রবার (২১ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর লেডিস ক্লাবে পেশাজীবীদের সম্মানে বিএনপি আয়োজিত ইফতার মাহফিলে তিনি এ কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকের এই পেশাজীবী সমাবেশ এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের। আমরা অনেক দিন পর, প্রায় ১৫ বছর পরে একটা মুক্ত পরিবেশে, ফ্যাসিবাদ মুক্ত পরিবেশে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করতে পেরেছি।

তিনি বলেন, একটু ভারাক্রান্ত এ জন্য; আজকে আমাদের মধ্যে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এবং একই সঙ্গে দলের চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার উপস্থিত থাকাটা অত্যন্ত প্রত্যাশিতই ছিল। কিন্তু আপনারা জানেন, আমাদের নেত্রী চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে আছেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানও আছেন। তিনি এখনো বিভিন্ন মামলা সমস্যার কারণে বিদেশে নির্বাসিত অবস্থাতেই আছেন। দেশে ফিরে আসতে পারছেন না শিগগিরই।

বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, আপনারা সবাই এখানে যারা উপস্থিত আছেন, তারা দেশের অত্যন্ত উচ্চশিক্ষিত এবং জাতির বিবেক। আপনারাই দেশের মত-অভিমতকে প্রভাবিত করেন। আমরা আজকে একটা অত্যন্ত কঠিন সময় অতিক্রম করছি। আপনারা সবাই জানেন, একটা ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট সরকারের হাত থেকে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে তাদের পরাজিত করে, বিতাড়িত করে আজকে একটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে এবং একটা নতুন গণতান্ত্রিক পার্লামেন্ট এবং সরকার গঠিত হবে সে প্রত্যাশায় এ দেশের জনগণ অপেক্ষায়।

তিনি বলেন, এ সময়টা আমরা সবাই যে যেখানে আছি, দায়িত্বশীলতার সঙ্গে আমাদের ভূমিকা পালন করব। আমরা যারা রাজনীতি করছি, তারা যারা বিভিন্ন পেশাতে আছি, বিভিন্নভাবে সরকার অথবা জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছি, সবাই এমনভাবে কথা বলব, কাজ করব যাতে তা আমাদের এই গণতন্ত্রের উত্তরণের পথকে আরও সুগম করে। আপনারা সবাই জানেন, যে সংস্কারের জন্য রাষ্ট্র ব্যবস্থা ভেঙে পড়ছে, সে কারণে প্রায় দুই বছর আগে আমাদের নেতা তারেক রহমান সংস্কারের জন্য একত্রিশ দফা কর্মসূচি দিয়েছেন। সে কর্মসূচির মধ্যে আমাদের সংস্কারের যে কথাগুলো বলা আছে, সে কাজগুলো আমরা মনে করি যথেষ্ট দেশের পরিবর্তনের জন্য।

ফখরুল বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংস্কার কমিশন গঠন করেছে। আমরা তাদের সঙ্গে সম্পূর্ণ যোগাযোগ রাখছি এবং তাদের যে প্রস্তাব সে প্রস্তাবগুলোকে আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। আমাদের মতামতগুলো সেভাবে প্রদান করছি।

তিনি বলেন, আবেগের মধ্য দিয়েও সমস্যার সমাধান করা যাবে না। আমরা বাস্তববাদী চিন্তা করে ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করি। পরিবর্তনকে সামনে নিয়ে একটা নতুন বাংলাদেশ, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার জন্যই আমাদের ওই লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। আমি সবাইকে আবার অনুরোধ করব, আপনার সবাই অত্যন্ত সচেতনতার সঙ্গে সতর্কতার সঙ্গে আপনাদের ভূমিকা পালন করবেন। বিশেষ করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের সঙ্গে যারা আমরা জড়িত আছি, তারা যেন এমন কোনো পদক্ষেপ না নেই, যে পদক্ষেপ আমাদের কোনো ভুল পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।

ইফতার মাহফিলে যোগ দেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন, উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. মোরশেদ হাসান খান প্রমুখ।

পেশাজীবীদের মধ্যে অংশ নেন- যায়যায়দিনের সম্পাদক শফিক রেহমান, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও কালের কণ্ঠ সম্পাদক কবি হাসান হাফিজ, অর্থনীতিবিদ মাহবুব উল্লাহ, যুগান্তর সম্পাদক কবি আবদুল হাই শিকদার, সিনিয়র সাংবাদিক এমএ আজিজ, সৈয়দ আবদাল আহমেদ, চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন প্রমুখ।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post সংবাদ সম্মেলনে এনসিপি: আ. লীগের নিবন্ধন বাতিল ও রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে
Next post ব্যাংককে ইউনূস-মোদির মধ্যে বৈঠক হচ্ছে না: রিপোর্ট
Close