যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে শান্তি ও সমগ্র ইউরোপের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে ইউরোপীয় নেতাদের প্রতি জোরালো আহ্বান জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেইর স্টারমার। একই সঙ্গে নতুন জোট গঠনের মাধ্যমে প্রতিরক্ষা প্রচেষ্টা আরও জোরদার করার কথা বলেন তিনি।
রোববার লন্ডনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির প্রতি জোরালো সমর্থনের উদ্দেশ্যে আয়োজিত এক সম্মেলনে এ আহ্বান জানান স্টারমার।
জেলেনস্কি সম্প্রতি হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তীব্র মতবিরোধে জড়িয়ে তার ওয়াশিংটন সফর সংক্ষিপ্ত করেন। এর ঠিক দুই দিন পর লন্ডনে আয়োজিত এই সম্মেলনে ইউরোপীয় নেতারা জেলেনস্কিকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান এবং তাদের সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দেন।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এ সময় জেলেনস্কি ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর পাশে দাঁড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন এবং বলেন, এটি ইউরোপের জন্য এক ‘প্রজন্মে একবার আসা চ্যালেঞ্জ’।
স্টারমার বলেন, ইউক্রেনের জন্য একটি ভালো ফলাফল নিশ্চিত করা শুধু ন্যায়-অন্যায়ের বিষয় নয়, বরং এটি এখানকার প্রতিটি দেশের নিরাপত্তার জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এ সময় তিনি সম্মেলনের উদ্দেশ্য নিয়ে বলেন, ‘আজকের বৈঠকের উদ্দেশ্য হলো- সবাইকে একত্রিত করে কীভাবে একটি ন্যায্য ও স্থায়ী শান্তি নিশ্চিত করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা করা এবং ইউক্রেনকে ভবিষ্যতে যেকোনো রুশ হামলা প্রতিহত করার সক্ষমতা দেওয়া’।
শান্তি প্রতিষ্ঠার আশা পুনরুজ্জীবিত করার জন্য স্টারমার বলেন, গত শুক্রবার তিনি ট্রাম্প, জেলেনস্কি এবং ম্যাক্রোঁর সঙ্গে জরুরি আলোচনা করেছেন। এতে এই ধারণা আরও সুসংহত হয়েছে যে, ইউরোপের ‘আগ্রহীদের একটি জোট’ দ্রুত একটি শান্তি পরিকল্পনা তৈরি করবে এবং এটি যুক্তরাষ্ট্রের কাছে উপস্থাপন করবে।
স্টারমার ও ম্যাক্রোঁ ট্রাম্পকে বোঝানোর চেষ্টা করছেন যে, ইউরোপ তার সামরিক ব্যয় বাড়াতে পারে এবং নিজেকে রক্ষা করতে পারে। আর রাশিয়া শুধু তখনই একটি শান্তি চুক্তি মেনে নেবে, যদি এই জোটটি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন লাভ করে।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় একটি ‘ব্যাকস্টপ’ ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন স্টারমার, যেখানে ইউরোপীয় শান্তিরক্ষীদের জন্য ওয়াশিংটনের সহায়তা চাওয়া হয়েছে। এর মধ্যে থাকতে পারে বিমান প্রতিরক্ষা, গোয়েন্দা নজরদারি ও রাশিয়ার জন্য আরও বড় হুমকি সৃষ্টি করা। যদি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আবার নতুন ভূখণ্ড দখলের চেষ্টা করেন।
তবে ট্রাম্পের সম্মতি পাওয়ার জন্য ইউরোপের দেশগুলোকে তাদের সামরিক ব্যয় বাড়াতে হবে এবং যেকোনো শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নেওয়ার সংকল্প জানাতে হবে।
স্টারমার বলেন, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স এই পরিকল্পনার বিষয়ে সবচেয়ে অগ্রসর পর্যায়ে রয়েছে। আর এ কারণেই প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ ও আমি এই উদ্যোগে নেতৃত্ব দিচ্ছি।
তিনি বলেন, সম্ভবত আমাদের এখন ‘নতুন জোট’ গঠনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে এবং এটি বাস্তবায়ন করতে হবে। সূত্র: রয়টার্স
More Stories
যে কারণে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ‘কনুই দেখাচ্ছেন’ কানাডীয়রা
প্রথমে এটি এসেছিল হুমকি হিসেবে। এরপর বাস্তবে পরিণত হলো সেই শুল্ক (ট্যারিফ)। কিন্তু এখন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের কানাডাকে বলপূর্বক যুক্তরাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত...
বাংলাদেশিদের ওমরাহ্ ভিসা কমিয়েছে সৌদি আরব
বাংলাদেশিদের জন্য ওমরাহ্ ভিসা কমিয়ে দিয়েছে সৌদি আরব। চলতি মাস থেকে ভিসাপ্রত্যাশীদের জন্য কোটা পদ্ধতি চালু করেছে দেশটি। শতকরা ১০...
বাংলাদেশ অগ্রসর দেশ হওয়ার বড় সুযোগ পেয়েছে: মাইলাম
বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত উইলিয়াম বি মাইলাম বলেছেন, বাংলাদেশ এখন আরও বড় সুযোগ পেয়েছে আরও পরিচিত এবং অগ্রসর দেশ হওয়ার।...
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ‘যেকোনো যুদ্ধের’ জন্য প্রস্তুত চীন
যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে চীন। জানিয়ে দিয়েছে, তারা যেকোনো ধরনের যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের...
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের বিবৃতি: জাতিসংঘের প্রতিবেদন দায়বদ্ধতা ও বিচারকে ত্বরান্বিত করবে
বাংলাদেশের জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থান নিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের (ওএইচসিএইচআর) প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, এই প্রতিবেদনে প্রমাণ পাওয়া গেছে, বাংলাদেশের...
আ. লীগ সরকার ক্ষমতা আঁকড়ে রাখতে নৃশংসতা চালিয়েছিল: জাতিসংঘ
জনতার বিরোধিতার মুখে ক্ষমতা আঁকড়ে রাখতে সাবেক সরকার জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নৃশংসতা চালিয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার...