Read Time:4 Minute, 46 Second

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ছাত্ররা রাজনৈতিক দল গঠন করবে। এ লক্ষ্যে তারা দেশজুড়ে লোকজনকে সংগঠিত করছে।

চলতি মাসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিতে সুইজারল্যান্ডে যান প্রধান উপদেষ্টা। সেখানে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের একটি পডকাস্টে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) পডকাস্টটির কথোপকথন লিখিত আকারে প্রকাশ পেলে এ তথ্য জানা যায়।

‘র‌্যাচম্যান রিভিউ’ নামের ওই পডকাস্টে বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ড. ইউনূসকে প্রশ্ন করা হয়।

জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনের সম্ভাব্য যে দুটি সময়ের কথা বলেছি, তা ভালো সময়। কারণ, আমি জাতীয় ঐক্য ধরে রাখছি আর এটা থেকে বিচ্যুত হতে চাই না।

আলোচনার একপর্যায়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, একটি সম্ভাবনা হলো, ছাত্ররা নিজেরাই একটি দল গঠন করবে। শুরুতে যখন তারা উপদেষ্টা পরিষদ সভা গঠন করছে, তখন আমি তিনজন ছাত্রকে আমার উপদেষ্টা পরিষদে নিয়েছিলাম। আমি বলেছিলাম, যদি তারা দেশকে ‘জীবন’ দিতে পারে, তাহলে তারা উপদেষ্টা পরিষদে বসতে পারে এবং জীবন দেওয়ার জন্য কী করছে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

তিনি বলেন, ছাত্ররা ভালো কাজ করছে। এখন তারা বলছে, কেন আপনি আপনার–আমাদের নিজস্ব দল গঠন করেন না, আমরা একটা সুযোগ নেব। তারা বলেছে, আপনার কোনো সুযোগ নেই, এমনকি সংসদে আপনার একটিও আসন থাকবে না। কেন? কারণ, কেউ আপনাকে চেনে না। আমি তাদের বললাম, পুরো জাতি তাদেরকে চেনে। তারা যা করতে চায়, সে বিষয়ে তাদেরকে একটা সুযোগ দিই। সুতরাং, তারা এটা করবে।

দল গঠনের প্রক্রিয়ার মধ্যে হয়তো ছাত্ররা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে উল্লেখ করে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, এটাও একটা বিপদ। কারণ, রাজনীতি শুরু করলে সব ধরনের রাজনীতিবিদ তাদের সঙ্গে মিশে যাবে। তাই আমরা জানি না তারা আমাদের দেশে যে রাজনীতি, তা থেকে নিজেদের দূরে রাখতে পারবে কি না। এ ধরনের সুযোগ আছে, যা আমাদের নিতে হবে। তবে ছাত্ররা প্রস্তুত। তারা প্রচারণা চালাচ্ছে। তারা দেশজুড়ে লোকজনকে সংগঠিত করছে।

পডকাস্টে উপস্থাপক গিডেয়েন র‌্যাচম্যান প্রধান উপদেষ্টাকে বলেন, ভারতীয়রা যেসব বিষয় বলছেন, তার একটি বিষয়ে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। তারা বলছে, বাংলাদেশের অবস্থা খুবই নাজুক। অধ্যাপক ইউনূস হয়তো না–ও ঠিক থাকতে পারেন। কিন্তু সেখানে ইসলামিস্টরা রয়েছে, যারা দেশের নিয়ন্ত্রণ নিতে যাচ্ছে। এ বিষয়ে আপনি কী বলবেন?

জবাবে তিনি বলেন, আমরা এমন লক্ষণ দেখি না। অন্তত আমি এখন কোনো লক্ষণ দেখি না। তরুণেরা সত্যিই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাদের খারাপ কোনো কিছুর সঙ্গে সংস্পর্শ নেই বা নিজেদের রাজনৈতিক আখের গোছানোর ব্যক্তিগত আকাঙ্ক্ষা নেই।

ড. ইউনূস বলেন, ছাত্ররা এই পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক দল গঠন করছে বা রাজনীতিতে যুক্ত হচ্ছে, এটা দরকার। কারণ, রক্ত দিয়ে তারা যেগুলো অর্জন করেছে, সেগুলো তাদেরকে রক্ষা করতে হবে। অন্যথায় সেগুলো সেসব ব্যক্তি নিয়ে যাবে, যারা বিগত প্রশাসন ও অন্যান্যের মতো সব কিছুর পুনরাবৃত্তি করার সুযোগ খুঁজছে। এটাই বাংলাদেশে আমাদের রাজনৈতিক পরিবেশ। সুতরাং তারা এটা রক্ষা করার চেষ্টা করছে। তাই আমি বলব, ছাত্রদের স্বচ্ছ অভিপ্রায় থাকবে।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post বিশ্বব্যাপী জীবনরক্ষাকারী ওষুধ সহায়তা বন্ধ যুক্তরাষ্ট্রের
Next post যারা সংস্কারের কথা বলেছেন তাদের প্রত্যেককে ধন্যবাদ দেওয়া উচিত: তারেক রহমান
Close