গুমের সঙ্গে নিজেদের সংশ্লিষ্টতা লুকাতে প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলের (জেআইসি) প্রমাণাদি নষ্ট করা হয়েছে বলে জানিয়েছে গুমের ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিশন। গত বছরের ৫ আগস্টের পর প্রমাণাদি নষ্ট করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল ‘আয়নাঘর’ হিসেবে পরিচিত।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) গুম কমিশনের তদন্ত প্রতিবেদনের একটি অংশ প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং প্রকাশ করে।
কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছরের ৫ আগস্টের পর ডিজিএফআই সদর দপ্তরে ইন্টারোগেশন সেলের কাঠামোগত আংশিক পরিবর্তন করা হয়েছে, দেয়ালে রং করা হয়েছে, যেখানে বন্দিরা অনেক কিছু লিখেছিলেন।
কিছু প্রমাণ আমাদের (গুম তদন্ত কমিশন) পরিদর্শনের আগের দিনই নষ্ট করা হয়। পরিদর্শনের কথা জানানোর পরও আমরা পরিদর্শনের সময় দেয়ালে কাঁচা রং দেখতে পেয়েছি। ভেজা রং এবং অসম্পূর্ণ কাঠামোগত পরিবর্তন স্পষ্টই তাড়াহুড়ো করে অপরাধ গোপনের চেষ্টার ইঙ্গিত দেয়।
গুম তদন্ত কমিশন যখন ডিজিএফআই কার্যালয় পরিদর্শন করে তখন মেজর জেনারেল মুহাম্মদ ফয়জুর রহমান ডিজিএফআইয়ের মহাপরিচালক ছিলেন। পরে ১৭ অক্টোবর তাকে বদলি করা হয়। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল।
তৎকালীন ডিজি শক্ত যুক্তি দিয়েছিলেন যে তিনি তার মেয়াদের আগে সংঘটিত অপরাধের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন না। প্রমাণ নষ্টের ক্ষেত্রে তার এমন তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দায়মুক্তির সংস্কৃতির জবরদস্তিমূলক ক্ষমতার প্রকাশ। আগেকার অপরাধীদের রক্ষা করার জন্য তার এমন উদ্যোগ ছিল ব্যক্তিগত স্বার্থে এবং পেশাগত সততার বিরুদ্ধে।
শেখ হাসিনার শাসনামলে নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে দায়মুক্তির সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। বেসামরিক ও সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমাদের আলোচনায় এটা স্পষ্ট যে তাদের বেশিরভাগই নিজেদের অপরাধের জন্য কখনো জবাবদিহি করবেন বলে আশা করেননি। তারা অপরাধকে অপরাধ হিসেবেও দেখেননি।
প্রমাণ নষ্ট করার এবং অসহযোগিতার এমন ধরন শুধু ডিজিএফআই নয়, অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীগুলো গত ১৫ বছর ব্যবহার করেছে। এটি শুধু গত ৫ আগস্ট পর্যন্ত যারা ক্ষমতায় ছিলেন এবং নিজেদের অপরাধ লুকাতে চেয়েছিলেন তারাই নন, পরবর্তীতে যারা বিভিন্ন শীর্ষপদে বসেছেন তারাও করেছেন।
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের গুমের ঘটনা তদন্তে গত ১৫ সেপ্টেম্বর গুম তদন্ত কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। পরে ২৬ সেপ্টেম্বর ডিজিএফআই কার্যালয়ের ভেতরে জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল (জেআইসি) পরিদর্শন করে কমিশন।
More Stories
আমাদের ভালো মানুষ দরকার : তারেক রহমান
২০ টাকা (ব্রিটিশ মুদ্রায় ১৫ পেন্স) দিয়ে নিজের প্রাথমিক সদস্য পদ নবায়ন করলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সোমবার (২০...
ভারত চিঠির জবাব না দিলেও শেখ হাসিনার বিচার চলবে: চিফ প্রসিকিউটর
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী মামলায় বহিঃসমর্পণ চুক্তি অনুযায়ী শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে দিতে...
আগামী নির্বাচন বিএনপির জন্য সহজ নয় : তারেক রহমান
আগামী নির্বাচন বিএনপির জন্য এতো সহজ নয়, জনগণ ম্যাটারস উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের জনগণের...
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা নেই: প্রেস সচিব
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলম বলেছেন, হত্যা, গুম ও খুনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের যাদের হাতে রক্তের...
অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন: ব্রিটিশ ব্যারিস্টারের শরণাপন্ন হয়েছিলেন হাসিনা
২০২১ সালে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ, তার পরিবার ও অন্যান্যদের নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ‘অল দ্য...
শিগগিরই ‘আয়নাঘর’ পরিদর্শন করবেন প্রধান উপদেষ্টা
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের সদস্যরা (দ্য কমিশন অব এনকোয়ারি অন এনফোর্সড ডিসাপিয়ারেন্স) বৈঠক করেছেন।...