Read Time:3 Minute, 57 Second

গুমের সঙ্গে নিজেদের সংশ্লিষ্টতা লুকাতে প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলের (জেআইসি) প্রমাণাদি নষ্ট করা হয়েছে বলে জানিয়েছে গুমের ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিশন। গত বছরের ৫ আগস্টের পর প্রমাণাদি নষ্ট করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল ‘আয়নাঘর’ হিসেবে পরিচিত।

সোমবার (২০ জানুয়ারি) গুম কমিশনের তদন্ত প্রতিবেদনের একটি অংশ প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং প্রকাশ করে।

কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছরের ৫ আগস্টের পর ডিজিএফআই সদর দপ্তরে ইন্টারোগেশন সেলের কাঠামোগত আংশিক পরিবর্তন করা হয়েছে, দেয়ালে রং করা হয়েছে, যেখানে বন্দিরা অনেক কিছু লিখেছিলেন।

কিছু প্রমাণ আমাদের (গুম তদন্ত কমিশন) পরিদর্শনের আগের দিনই নষ্ট করা হয়। পরিদর্শনের কথা জানানোর পরও আমরা পরিদর্শনের সময় দেয়ালে কাঁচা রং দেখতে পেয়েছি। ভেজা রং এবং অসম্পূর্ণ কাঠামোগত পরিবর্তন স্পষ্টই তাড়াহুড়ো করে অপরাধ গোপনের চেষ্টার ইঙ্গিত দেয়।

গুম তদন্ত কমিশন যখন ডিজিএফআই কার্যালয় পরিদর্শন করে তখন মেজর জেনারেল মুহাম্মদ ফয়জুর রহমান ডিজিএফআইয়ের মহাপরিচালক ছিলেন। পরে ১৭ অক্টোবর তাকে বদলি করা হয়। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল।

তৎকালীন ডিজি শক্ত যুক্তি দিয়েছিলেন যে তিনি তার মেয়াদের আগে সংঘটিত অপরাধের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন না। প্রমাণ নষ্টের ক্ষেত্রে তার এমন তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দায়মুক্তির সংস্কৃতির জবরদস্তিমূলক ক্ষমতার প্রকাশ। আগেকার অপরাধীদের রক্ষা করার জন্য তার এমন উদ্যোগ ছিল ব্যক্তিগত স্বার্থে এবং পেশাগত সততার বিরুদ্ধে।

শেখ হাসিনার শাসনামলে নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে দায়মুক্তির সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। বেসামরিক ও সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমাদের আলোচনায় এটা স্পষ্ট যে তাদের বেশিরভাগই নিজেদের অপরাধের জন্য কখনো জবাবদিহি করবেন বলে আশা করেননি। তারা অপরাধকে অপরাধ হিসেবেও দেখেননি।

প্রমাণ নষ্ট করার এবং অসহযোগিতার এমন ধরন শুধু ডিজিএফআই নয়, অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীগুলো গত ১৫ বছর ব্যবহার করেছে। এটি শুধু গত ৫ আগস্ট পর্যন্ত যারা ক্ষমতায় ছিলেন এবং নিজেদের অপরাধ লুকাতে চেয়েছিলেন তারাই নন, পরবর্তীতে যারা বিভিন্ন শীর্ষপদে বসেছেন তারাও করেছেন।

প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের গুমের ঘটনা তদন্তে গত ১৫ সেপ্টেম্বর গুম তদন্ত কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। পরে ২৬ সেপ্টেম্বর ডিজিএফআই কার্যালয়ের ভেতরে জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল (জেআইসি) পরিদর্শন করে কমিশন।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post বাইডেন বললেন ‘ওয়েলকাম হোম’ ট্রাম্প
Close