Read Time:5 Minute, 25 Second

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ও তাঁর দোসরদের বিচার নিশ্চিত করতে দেশের সব মানুষকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, ‘দেশের মানুষকে নানা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বিভক্ত করার চেষ্টা চলছে। সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকলে আমাদের কেউ আলাদা করতে পারবে না।’

গণ–অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের সহায়তার জন্য আজ শনিবার রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে আয়োজিত কনসার্ট ‘ইকোস অব রেভল্যুশন’–এ বক্তারা এ কথাগুলো বলেন। সেখানে বক্তব্য দেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’-এর সিইও মীর মাহাবুবুর রহমান, আন্দোলনে এক হাত হারানো গাজী আতিকুল ইসলাম, মুখে গুলি লেগে আহত খোকন চন্দ্র বর্মণ, শহীদ আহনাফের মা এবং শহীদ সৈকতের বোন।

সারজিস আলম বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থান-২৪–এ দুই হাজার শহীদ হন। অর্ধলক্ষ আহত হন। নতুন এই বাংলাদেশের মঞ্চে দাঁড়িয়ে সবচেয়ে বেশি ভার অনুভব করছি।’

দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে সারজিস বলেন, ‘দেশের ও মানুষের স্বার্থে জীবন ও রক্তদানকারী ভাই–বোনদের স্বার্থে রাজনৈতিক বিভাজনের সৃষ্টি করবেন না। সবকিছুর ঊর্ধ্বে দেশ ও দেশের মানুষকে রাখবেন। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে খুনি হাসিনা ও তাঁর দোসরদের কোনো চিহ্ন এ দেশে থাকবে না।’

সারজিস আলম আরও বলেন, ‘খুনি হাসিনা স্বৈরাচারী শাসন প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে দেশের সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে। প্রতিষ্ঠানগুলো মানুষদের হয় দালাল, না হয় দাস বানিয়েছে, নয়তো নিশ্চুপ করিয়ে রেখেছে। প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বাধীন সত্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। হাসিনা স্বৈরাচার শাসন টিকিয়ে রাখতে পুলিশকে সর্বোচ্চ ব্যবহার করেছে। তাই জনগণের আস্থা ফিরে আসে, পুলিশকে এমন কাজ করতে হবে।’

পরে কনসার্টের মঞ্চে ওঠা অন্যদের পরিচয় করিয়ে দেন সারজিস আলম। সঙ্গে ছিলেন আন্দোলনে এক হাত হারানো গাজী আতিকুল ইসলাম, শহীদ মীর মাহফুজুর রহমানের (মুগ্ধ) ভাই মীর মাহাবুবুর রহমান (স্নিগ্ধ), শহীদ আহনাফের মা এবং শহীদ সৈকতের বোন। ছিলেন মুখে গুলি লেগে আহত হওয়া খোকন চন্দ্র বর্মণ।

মীর মাহাবুবুর রহমান বলেন, ‘যুদ্ধ এখনো শেষ হয়নি। আহত এবং শহীদেরা ত্যাগের বিনিময়ে তাঁদের দায়িত্ব পালন করেছেন। এখন দেশের মানুষের দায়িত্ব তাঁদের পাশে দাঁড়ানো।…ইংরেজদের মতো আমাদের নিয়ে “ডিভাইড অ্যান্ড রুল” খেলা হচ্ছে। আলাদা করার চেষ্টা হচ্ছে। সবাইকে একত্রে থাকতে হবে। গণ–অভ্যুত্থান যেভাবে সফল করেছি, বাংলাদেশের বিজয় অর্জন করবই।’

গাজী আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘স্বৈরাচার হাসিনা ও তার দোসররা দেশে খুন, গুম, লুট, অর্থ পাচার করেছে। তাকে ও তার দোসরদের ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে হত্যা করতে হবে। আমরা মরে যাইনি, এখনো বেঁচে আছি। আমরাই এ দেশে শেখ হাসিনার বিচার করব।’

খোকন চন্দ্র বর্মণ বলেন, ‘পুলিশ পাখির মতো গুলি করে মানুষ হত্যা করেছে। স্বৈরাচার হাসিনা রক্তচোষা পিশাচ ছিল।…রক্তরাঙা বাংলাদেশে কোনো স্বৈরাচারের জায়গা হবে না।’

গত ১৯ জুলাই রাজধানীর মোহাম্মদপুরের নূরজাহান রোডে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান কলেজশিক্ষার্থী মাহামুদুর রহমান (সৈকত)। আজকের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে বক্তব্য দেন সৈকতের বোন। তিনি ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা ও তাঁর দোসরদের বিচারের দাবি করেন।

গত ৪ আগস্ট রাজধানীর মিরপুর ১০ নম্বরে গুলিতে নিহত হয় ১৭ বছর বয়সী শাফিক উদ্দিন আহমেদ আহনাফ। অনুষ্ঠানে তার মা বলেন, ‘খুনি হাসিনার বিচার চাই। সবাই পাশে থাকবেন।’

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি, শুধু চাঁদাবাজের পরিবর্তন হয়েছে: হাসনাত আবদুল্লাহ
Close