ভারতের ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বাংলাদেশের পতাকায়ও আগুন দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে ভারত ভিয়েনা কনভেনশন অন ডিপ্লোমেটিক রিলেশন, ১৯৬১ লঙ্ঘন করেছে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সোমবার রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। এতে ওই কনভেনশন লঙ্ঘনের কথা বলা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সোমবার আগরতলার হিন্দু সংগ্রাম সমিতির বিক্ষোভকারীদের দ্বারা বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনের প্রাঙ্গণে হিংসাত্মক বিক্ষোভ ও আক্রমণের জন্য বাংলাদেশ সরকার গভীরভাবে ক্ষুব্ধ।
এতে আরও বলা হয়, প্রাপ্ত তথ্য চূড়ান্তভাবে প্রমাণ করে যে, বিক্ষোভকারীরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের প্রধান ফটক ভেঙে প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে। এ সময় স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের উপস্থিতিতে তারা পতাকার খুঁটি ভাঙচুর করে, বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননা করে এবং সহকারী হাইকমিশনের অভ্যন্তরের সম্পত্তিও ক্ষতিগ্রস্ত করে। দুঃখের বিষয়, হাইকমিশন প্রাঙ্গণ রক্ষার দায়িত্বে থাকা স্থানীয় পুলিশ সদস্যরা শুরু থেকেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় ভূমিকা রাখেনি। সহকারী হাইকমিশনের সব সদস্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
বাংলাদেশ সরকার আরও জানাতে চায় যে, বাংলাদেশের একটি কূটনৈতিক মিশনের ওপর এই জঘন্য হামলা এবং বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অসম্মান একটি প্যাটার্নে এসেছে, গত ২৮ নভেম্বর কলকাতায় একই ধরনের হিংসাত্মক বিক্ষোভ হয়েছিল।
এতে আরও বলা হয়, যেহেতু কূটনৈতিক মিশনগুলোতে যেকোনো ধরনের অনুপ্রবেশ বা ক্ষতি থেকে রক্ষা করা সেই দেশের সরকারের দায়িত্ব, তাই বাংলাদেশ সরকার ভারত সরকারকে এ ঘটনায় ব্যবস্থা নেওয়া এবং ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করার জন্য আহ্বান জানায়। ভারতে বাংলাদেশের কূটনীতিকদের নিরাপত্তা ও অকূটনীতিক সদস্য এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং কূটনৈতিক মিশনে যেকোনো সহিংসতা প্রতিরোধ করতে আহ্বান জানায়।
প্রসঙ্গত, ১৯৬১ সালে অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় কূটনীতিকদের আচরণ বিষয়ে জাতিসংঘের উদ্যোগে বিভিন্ন দেশের অংশগ্রহণে সই করা হয় ভিয়েনা কনভেনশন অন ডিপলোম্যাটিক রিলেশন। এতে মোট ৫৩টি আর্টিকেল বা ধারা রয়েছে।
এ চুক্তির উদ্দেশ্য ছিল কিছু নিয়ম-নীতি এবং সেগুলো অনুসরণের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক উন্নয়ন। সেসময় স্বাধীন দেশগুলো ওই চুক্তিতে সই করেছিল। পরে ধাপে ধাপে যেসব দেশ স্বাধীন হতে থাকে তারাও এই চুক্তিতে নিজেদের অন্তর্ভূক্ত করে।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর এই চুক্তিতে সই করে ১৯৭৮ সালে। এই চুক্তির ১২নং ধারায় বলা হয়েছে, কূটনীতিক মিশনের নিরাপত্তা বিধান করতে হবে গ্রাহক দেশকে। আর মিশনের অফিস এলাকায় বিদেশি কূটনীতিক মিশন প্রধানের অনুমতি ছাড়া গ্রাহক দেশের সরকারও প্রবেশ করতে পারবে না।
More Stories
আনন্দবাজারের রিপোর্ট: নব্য আওয়ামী লীগের প্রস্তুতি, নেতৃত্বে থাকবেন না শেখ হাসিনা?
নতুন কৌশল। আওয়ামী লীগ থাকবে, নেতৃত্বে শেখ হাসিনা থাকবেন না। তার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত নেতারাও বাদ যাবেন। আওয়ামী লীগের পরিচিত...
যে যাই বলুক নির্বাচন জুন অতিক্রম করবে না: আইন উপদেষ্টা
আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে যত...
প্রধান উপদেষ্টাকে দেওয়া বিএনপির চিঠিতে কী আছে
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস একটি চিঠি দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বুধবার দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায়...
টাইম ম্যাগাজিনের ১০০ প্রভাবশালীর তালিকায় ড. ইউনূস
২০২৫ সালে টাইম ম্যাগাজিনের ১০০ জন শীর্ষ প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় স্থান করে নিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ...
কবি রফিক আজাদের বাড়ি ভেঙে ফেলার ঘটনায় যা বলছে গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ
‘ভাত দে হারামজাদা/তা না হলে মানচিত্র খাবো’- জনপ্রিয় এই পঙক্তির স্রষ্টা, একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রয়াত কবি ও বীরমুক্তিযোদ্ধা রফিক আজাদের স্মৃতিবিজড়িত...
লন্ডনে তারেক রহমানের বাসায় গিয়েছিলেন জামায়াত আমির!
জামায়াতে ইসলামী নেতাদের সঙ্গে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার লন্ডনে সাক্ষাৎ হয়েছে। তাদের মধ্যে কী আলোচনা হয়েছে তা...