Read Time:5 Minute, 56 Second

ছয় বছর পর প্রকাশ্যে কোনো অনুষ্ঠানে দেখা গেল হাস্যাজ্জ্বল খালেদা জিয়াকে। সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পাশের আসনে বসে তিনি উপভোগ করলেন সশস্ত্র বাহিনী দিবসের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। এ সময় তার পড়নে ছিল হালকা বেগুনি রঙের শাড়ি আর গলায় সাদা মুক্তার মালা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বেলা ৩টা ৩৫ মিনিটে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে পৌঁছান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। গাড়ি থেকে নেমে তিনি হুইল চেয়ারে বসে অনুষ্ঠানস্থলে যান। কারামুক্ত হওয়ার পর এই প্রথম কোনো অনুষ্ঠানে অংশ নিতে ঘরের বাইরে বের হলেন। গত এক যুগের মধ্যে এই প্রথম অংশ নেন সেনাকুঞ্জের বার্ষিক আয়োজনে।

সেখানে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান এবং বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন তাকে অভ্যর্থনা জানান।

এর ৫/৬ মিনিট পর প্রধান উপদেষ্টা অনুষ্ঠান স্থলে পৌঁছান। ঠিক চারটায় জাতীয় সঙ্গীত বাজার মধ্য দিয়ে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শুরু হয়। খালেদা জিয়ার বসার ব্যবস্থা হয়েছিল অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের পাশের আসনে। খালেদা জিয়া তার আসনে বসার পর প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। এই সময়ে তাদেরকে হাসোজ্জাল দেখাচ্ছিল।

জাতীয় সঙ্গীতের পর প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুস বক্তব্য রাখেন। বক্তব্যের শুরুতে সশ্বস্ত্র বাহিনী দিবসে সশ্বস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের অভিনন্দন জানান এবং মুক্তিযুদ্ধে বীর শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন প্রধান উপদেষ্টা।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুস সশ্বস্ত্র বাহিনী দিবসে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অসুস্থতার মধ্যে আসায় বিএনপি চেয়ারপারসনকে শুভেচ্ছা জানান। তিনি বলেন, অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আনতে পেরে আমরা গর্বিত।

তিনি বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া এখানে এসেছেন। ১২ বছর তিনি আসার সুযোগ পাননি। তাকে এই সুযোগ দিতে পেরে আমরা গর্বিত। দীর্ঘদিনের অসুস্থতা সত্ত্বেও বিশেষ দিনে সবার সঙ্গে শরিক হওয়ার জন্য আপনাকে আবারও ধন্যবাদ। আপনার আশু রোগমুক্তি কামনা করছি।

বিকালে ৫টা ২৫ মিনিটে বেগম খালেদা জিয়া ফিরোজা’য় ফিরে আসেন সেনা স্কটেই। এর আগে বিকেলে সাড়ে ৩টায় গুলশানের বাসা ফিরোজা থেকে সেনাকুঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা হোন। নিজের সাদা গাড়িতে চড়ে সেনাবাহিনীর প্রটোকল পাহারায় সেনানিবাসের উদ্দেশে রওনা হন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। আর তার গাড়ির সামনে ছিল মিলিটারি পুলিশের (এমপি) পাইলট কার, পেছনে সেনাবাহিনীর একটি অ্যাম্বুলেন্স। খালেদা জিয়া এদিন বাসা থেকে বেরিয়ে গাড়িতে ওঠার সময় রাস্তায় জড়ো হওয়া বিএনপিকর্মীরা পুরো এলাকা স্লোগানে স্লোগানে মুখর করে তোলেন।

বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে তার প্রয়াত ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান এবং ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেন অনুষ্ঠানে আসেন। এর আগেই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে পৌঁছান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও তার স্ত্রী রাহাত আরা বেগম। অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়াকে দেখতে পেয়েই অঝোরে কেঁদে ফেলেন মির্জা ফখরুল।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সেলিমা রহমান, হাফিজ উদ্দিন আহমেদসহ আমন্ত্রিত সিনিয়র নেতারাও আগেই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে পৌঁছান। অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা ছাড়াও জেএসডির আসম আবদুর রব, জামায়াতে ইসলামীর শফিকুর রহমানসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post শেখ হাসিনাকে ফেরানোর নির্দেশনা নিয়ে যা জানালেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র
Next post বিচারের পর আওয়ামী লীগকে নির্বাচন করতে দেওয়া হবে : ড. ইউনূস
Close