সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি নতুন অডিও কল রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সোমবার (১৮ নভেম্বর) এই ফোনালাপে শেখ হাসিনার কণ্ঠের মতো একজন দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে দেশের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে শোনা যায়। একই সঙ্গে তিনি কিছু কঠোর বক্তব্যও দেন।
অডিও থেকে জানা যায়, সুইডেন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দেশটিতে প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয় এবং সেখানে শেখ হাসিনা ফোনে দলীয় নেতাকর্মীদের বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দেন। অনুষ্ঠানের শেষে, শেখ হাসিনাকে উপস্থিত নেতাদের মধ্যে বাবু সুভাষ ঘোষ, লিংকন মোল্ল্যা, খোকন মজুমদার, নঈম বাবু, মোহাম্মদ শহীদ, মাহবুবুর রহমান, লিমন, কবির, সাব্বিরসহ অন্যান্য নেতাদের নাম ঘোষণা করতে শোনা যায়।
অডিওর শুরুতে শেখ হাসিনার কণ্ঠে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা এবং সমন্বয়কদের ‘খুনি’ আখ্যা দিয়ে তাদের ফোন কল রেকর্ড করার কথা বলা হয়। সেখানে শেখ হাসিনা বলেন, এই অবৈধ সরকারের অত্যাচারে সারা দেশের মানুষ জর্জরিত। তিনি আরও বলেন, কৃষক-শ্রমিকরা বেকার হয়ে গেছেন এবং শ্রমিক আন্দোলন করেছে, অথচ তাদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা এসময় ৭ জুলাই থেকে ছাত্রদের আন্দোলনের কথা উল্লেখ করেন এবং বলেন, ১৪ জুলাই পর্যন্ত তারা সহিংস হওয়ার আগে পর্যন্ত পুলিশের কোনো রকম সহিংস পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তিনি দাবি করেন, আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশ কোনো গুলি চালায়নি এবং তার নির্দেশ ছিল, পুলিশ যেন কোনো গুলি না চালায়।
এছাড়া, কোটা আন্দোলন সম্পর্কেও শেখ হাসিনার বক্তব্য শোনা যায়। তিনি বলেন, “এই কোটা তো আমিই বাতিল করে দিয়েছি। যেখানে কোনো কোটাই নাই, সেখানে আন্দোলনটা কিসের জন্যে ছিলো?” শেখ হাসিনা আরো বলেন, আন্দোলনকারীরা তাদের দাবি পূরণ হওয়ার পরেও পুনরায় আন্দোলন চালিয়ে যায় এবং তার মতে, আন্দোলনকারীদের টার্গেট ছিল তাকে হত্যা করা।
এ সময় তিনি আরো বলেন, “এখান আবার হত্যা মামলা দিয়ে বলে গণহত্যার বিচার হবে। গণহত্যার বিচার আমার না, বিচার হবে ইউনূসের।” তিনি অভিযোগ করেন যে, ইউনূস বাংলাদেশকে একটি জঙ্গি দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছেন এবং তিনি হত্যার সাথে জড়িত। শেখ হাসিনা বলেন, জেলখানায় থাকা জঙ্গিদের ইউনূস মুক্তি দিয়েছেন, যা থেকে তার একটি যোগসাজশ থাকার আভাস পাওয়া যায়।
অডিওতে শেখ হাসিনা দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, “শেয়ার মার্কেটের টাকা উধাও, ব্যাংকে টাকা নাই। ব্যাংকের টাকা উধাও।” পাশাপাশি তিনি দাবি করেন, “২০ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য আমি রেখে এসেছি, ১ কোটি পরিবারের জন্যে টিসিবি কার্ড দিয়েছি।”
শেষে তিনি বলেন, দেশে চলমান অরাজকতা ও দুর্নীতির বিচার হতে বাধ্য হবে এবং সেই বিচার নিজেই করবেন। “এইসবের বিচার আমি করবোই ইনশাল্লাহ,” বলেন শেখ হাসিনা।
More Stories
চীনা ঋণের সুদহার ১ শতাংশ করার প্রস্তাব পররাষ্ট্র উপদেষ্টার
চীনা ঋণের সুদের হার ২-৩ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১ শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।...
অতি বিপ্লবী চিন্তা-ভাবনা নিয়ে সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি কাম্য নয়: মির্জা ফখরুল
অতি বিপ্লবী কোনো চিন্তা-ভাবনা নিয়ে সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি করা কারোর জন্য কাম্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল...
জার্মান চ্যান্সেলরের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক
জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজের সঙ্গে বৈঠক করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। মঙ্গলবার সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম...
সুইজারল্যান্ডে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক সম্মেলনে যোগ দিতে সুইজারল্যান্ডের জুরিখে পৌঁছেছেন। মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় দুপুর...
‘আয়নাঘরের’ প্রমাণ নষ্ট করেছে ডিজিএফআই: গুম তদন্ত কমিশন
গুমের সঙ্গে নিজেদের সংশ্লিষ্টতা লুকাতে প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলের (জেআইসি) প্রমাণাদি নষ্ট করা হয়েছে বলে জানিয়েছে গুমের...
আমাদের ভালো মানুষ দরকার : তারেক রহমান
২০ টাকা (ব্রিটিশ মুদ্রায় ১৫ পেন্স) দিয়ে নিজের প্রাথমিক সদস্য পদ নবায়ন করলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সোমবার (২০...