‘আওয়ামী লীগ দেশকে ফোকলা বানিয়ে দিয়ে গেছে। অর্থনৈতিক সংকট, দ্রব্যমূল্য, মানুষের আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের সংগতি নেই। খেটে খাওয়া মানুষ বিপদে আছে।’
শুক্রবার বিকালে রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় যাদুঘরের সামনে গণসংহতি আন্দোলন আয়োজিত ‘ভাসানীর পথ ধরে জাতীয় সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ হোন’ শীর্ষক সমাবেশে এসব বলেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি।
তিনি বলেন, এসব সমস্যা সমাধান করা আপনাদের (অন্তর্বর্তী সরকারের) দ্বায়িত্ব। তিন মাস হয়ে গেছে, মানুষ আর বেশিদিন আপনাদের সময় দেবে না। অবিলম্বে মানুষ তাদের সমস্যার সমাধান চায়। মানুষের জানমালের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেন। দ্রব্যমূল্য কমান, অর্থনৈতিক চ্যলেঞ্জ মোকাবিলা করেন।
বাংলাদেশে কোনোভাবেই যেন ফ্যসিবাদের পুনরুত্থান না ঘটে, তার জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশে আর কোনোভাবেই ফ্যসিবাদের পুনরুত্থান চাই না। এজন্য ছাত্র, শ্রমিক, জনতার যে স্বপ্ন, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হতেই হবে। তার জন্য আমাদের ঐক্য দরকার। আমরা যদি জনগণের স্বপ্নকে সত্যে পরিণত করতে চাই, আর কাউকে ফ্যাসিস্ট হিসেবে দেখতে না চাই তাহলে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
সাকি বলেন, বিদেশি শক্তিকে ভুল বুঝিয়ে, আবারও ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন দেখছে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ। ট্রাম্পের পোস্টার নিয়ে মিছিল করে ক্ষমতায় ফেরা যাবে না। ফ্যাসিবাদকে বাংলার জনগণ আর কখনও মেনে নেবে না। দেশে যাতে আর কখনও ফ্যাসিস্টরা ফিরে আসতে না পারে; তার জন্য নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের ওপর গুরুত্বারোপও করেন তিনি।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে সাকি বলেন, ফ্যাসিস্টরা নানাভাবে এখনো ষড়যন্ত্র করছে। যার অধীনে (পাশ্ববর্তী দেশ) স্বৈরাচারী শাসন চালিয়েছে, তারাও চায় যে কোনোভাবে এ দেশের ক্ষমতা যাতে তাদের হাতে থাকে। এ কারণে আমরা আপনাদের বলি অভ্যুথ্যানের রাজনৈতিক শক্তি সংহত করতে হবে। অভ্যুথান যদি সফল করতে হয়, যে অভ্যুথান এখন দ্বিতীয় পর্যায়ে আছে নতুন রাষ্ট্র নির্মাণ, নতুন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নির্মাণ তবে তার শক্তি আপনাদের সংহত করতে হবে। আমরা গণসংহতি আন্দোলন বাংলাদেশের জনগণের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য, দেশের স্বাধীনতার সার্বভৌমত্বের জন্য আমরা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে সংবিধান, রাষ্ট্রব্যবস্থার সংস্কার একটা নতুন বন্দোবস্ত এবং গণতন্ত্রের ভিত্তিতে নির্বাচন ও তার জন্য লড়াই করতে হবে। আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধ হই। মাওলানা ভাসানীর দেখানো পথ অনুসরণ করি। এই দেশের খেটে খাওয়া মানুষ শ্রমিকেরা তাকিয়ে দেখুক শহিদের তালিকা। ১৬০০ এর ওপরে ছাত্র শ্রমিক শহিদ হয়েছেন। ৫০০ এর উপরে চোখ অন্ধ হয়ে গেছে। ৫০ হাজারের উপরে আহত। শহিদদের বেশিরভাগ শ্রমজীবী মানুষ। এ দেশের শ্রমিক খেটে খাওয়া মানুষদের মুক্তি না আসলে, জনগণের হাতে ক্ষমতা না থাকলে আর ক্ষমতা পাবে না। জনগণের কাছে জবাবদিহিতা না করলে কোনো সংবিধান গণতান্ত্রিক হতে পারে না। আর সেই কারণেই সমস্ত রাষ্ট্র নির্মাণ জনগণের ইচ্ছার ওপরে করতে হবে। যে ঐক্যে ৫ আগষ্ট সৃষ্টি হয়েছে সেই ঐক্যকে ধরে রাখতে হবে।
More Stories
১৫ বছরের শাসনকে কয়েক সপ্তাহে মোকাবিলা করা সহজ নয় : আসিফ নজরুল
ফ্যাসিবাদের শেকড় অনেক দূর ছড়িয়ে আছে, ১৫ বছরের শাসনকে কয়েক সপ্তাহে মোকাবিলা করা সহজ নয় বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার...
‘মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে ছিলাম না, ভারতের সহযোগিতায় স্বাধীনতার সুফল নিয়ে শঙ্কা ছিল’
জামায়াতের আমির জামায়াতে ইসলামী মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে ছিল না, তবে ভারতের সহযোগিতায় স্বাধীনতার সুফল না পাওয়ার শঙ্কা ছিল বলে দাবি করেছেন...
উপদেষ্টাদের বেশিরভাগই সুযোগসন্ধানী: মাহমুদুর রহমান
দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেছেন, ‘গত ১৬ বছর যারা ফ্যাসিস্ট শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন, বর্তমান সরকারে তাদের...
আজীবন রাষ্ট্রীয় খরচে চিকিৎসা পাবেন গণঅভ্যুত্থানে আহতরা
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহত রোগীদের তালিকা করে প্রত্যেক রোগীকে একটি ইউনিক আইডি কার্ড দেওয়া হবে। সেই কার্ড দেখিয়ে তারা দেশের সরকারি...
সংস্কারের গতির ওপর নির্ভর করবে কখন ভোটগ্রহণ করা সম্ভব: ড. ইউনূস
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, তার সরকারের মেয়াদ যতটা সম্ভব কম হওয়া উচিত। এ লক্ষ্যে তারা...
ভারতীয় গণমাধ্যম প্রতিদিন আমাদের সম্পর্কে অপপ্রচার চালাচ্ছে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
বরিশাল আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। ছবি : কালবেলা...