Read Time:4 Minute, 29 Second

ঢাকার সাভারে একটি মাদ্রাসায় প্রফেসর মাহমুদুর রহমান পরিচয়ে যাকে দাফন করা হয়েছিল তিনিই বিএনপির বহুল আলোচিত প্রভাবশালী নেতা হারিছ চৌধুরী। ডিএনএ টেস্টের রিপোর্টে এ তথ্য উঠে এসেছে।
প্রায় আড়াই বছর পর অবশেষে নিশ্চত হওয়া গেল, লাশটি মাহমুদুরের নয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীর।
সাভার থানার ওসি মো. জুয়েল মিয়া ও হারিছ চৌধুরীর মেয়ে সামিরা তানজিন চৌধুরী আজ বুধবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে পলাতক অবস্থায় তিনি ২০২১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ঢাকার একটি হাসপাতালে মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৮ বছর। তখনকার প্রেক্ষাপটের কারণে পলাতক হারিছের লাশ দাফনেও পরিচয় গোপনে বাধ্য হন ঘনিষ্ঠরা।
পুলিশ জানায়, গত ৬ নভেম্বর আদালতে সেই ডিএনএ রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে। সিআইডির এ রিপোর্ট পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার কামারুন মুনিরা গণমাধ্যমকে জানান, বিষয়টি আদালতের, তাই আদালতই এ ব্যাপারে তথ্য দেবেন।
স্বজনরা জানান, হারিছ চৌধুরীর বিরুদ্ধে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ও শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে মামলা ছিল। পাশাপাশি দুদকের দুর্নীতি মামলা ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজা ও জরিমানা হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়, ইন্টারপোলে রেড নোটিশ ইস্যু হয়। এমন প্রেক্ষাপটে হারিছ চৌধুরী নাম ও চেহারা পাল্টে আত্মগোপনে চলে যান। মাহমুদুর রহমান পরিচয়ে ঢাকায় গোপন জীবনযাপন শুরু করেন।
সিলেটের জকিগঞ্জের হারিছ চৌধুরী বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব ছিলেন। নিজ দল বিএনপি ও সরকারে তার প্রচণ্ড প্রভাব ছিল। ওয়ান-ইলেভেনে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হলে আড়ালে চলে যান তিনি। এরপর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে হারিছ চৌধুরী নাম পাল্টে হয়ে যান প্রফেসর মাহমুদুর রহমান। ২০২১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ঢাকার একটি হাসপাতালে মারা যান তিনি। প্রফেসর মাহমুদুর পরিচয়েই সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের কমলাপুর জালালাবাদ এলাকার জামিয়া খাতামুননাবিয়ান মাদ্রাসা কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হয়।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর গত ৫ সেপ্টেম্বর বাবার পরিচয় শনাক্তে মেয়ে সামিরা তানজিম চৌধুরী হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন। আদালত লাশ উত্তোলন করে ডিএনএ পরীক্ষার অনুমতি দেন। আদালতের নির্দেশে গত ১৬ অক্টোবর হারিছ চৌধুরীর লাশ উত্তোলন করে নমুনা সংগ্রহ করে সিআইডি।
তবে হারিছ চৌধুরীর মেয়ে সামিরা তানজিন চৌধুরী জানান, তিনি এখনো আইনিভাবে কোনো তথ্য-উপাত্ত পাননি। তার আইনজীবী উচ্চ আদালতের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের সঙ্গে আলোচনা করে এ ব্যাপারে ব্রিফ করবেন।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post তাকসিমের দেশত্যাগে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা
Next post শেখ মুজিবুর রহমান একটা ফ্যাসিস্ট মতাদর্শ কায়েম করেছিলেন: ফরহাদ মজহার
Close