বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে আছেন, না কি অন্য দেশে চলে গেছেন, তা নিয়ে কিছুদিন ধরেই জল্পনা চলছে। বাংলাদেশের কোনো কোনো গণমাধ্যমে বলছে, তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতে চলে গেছেন। আবার বলা হয়, ভারত সরকার তার ‘ট্রাভেল ডকুমেন্ট’ ইস্যু করেছে। এমন নানান জল্পনার মাঝে অবশেষে শেখ হাসিনা অবস্থান সম্পর্কে জানালেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে জুলাই ও আগস্টে সংঘটিত গণহত্যার বিচার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এরইমধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জারি করা হয়েছে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। বিষয়টি উঠে এসেছে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিকবৃহস্পতিবারের (১৭ অক্টোবর) ব্রিফিংয়েও।
ব্রিফিংয়ে গৌতম লাহিরি নামে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে এবং তাকে আগামী মাসের মধ্যে ট্রাইবুনালে হাজিরের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে ভারতের অবস্থান কী?
তিনি আরও জানতে চান, শেখ হাসিনা ভারতে আছেন নাকি অন্য দেশে চলে গেছেন তা নিয়ে নানা আলোচনা চলছে। এছাড়া বাংলাদেশি বিভিন্ন মিডিয়ায় খবর এসেছে যে, ভারত সরকার হাসিনাকে ট্রাভেল ডকুমেন্ট দিয়েছে। শেখ হাসিনার বিষয়ে কি ভারতের অবস্থান পরিবর্তন হয়েছে? নাকি তিনি আগের স্ট্যাটাসেই এখানে অবস্থান করছেন?
এসব প্রশ্নের জবাবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন,
আমরা কিছু প্রতিবেদন (শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা সংক্রান্ত) দেখেছি, যা সম্প্রতি এসেছে। তবে এ বিষয়ে আমার এখনই কিছু বলার নেই।
শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান প্রসঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন,
আমি আগেই বলেছি যে, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী (হাসিনা) নিরাপত্তার খাতিরে স্বল্প সময়ের নোটিশে ভারতে এসেছিলেন এবং তিনি এখানেই থাকবেন।
ভারতীয় ভিসা বিষয়ে জবাবে রণধীর জয়সওয়াল বলেন, আপাতত বাংলাদেশিদের চিকিৎসার এবং জরুরি প্রয়োজনে ভিসা দেয়া হচ্ছে, কার্যক্রম চলছে। যখন বাংলাদেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, তখন পূর্ণমাত্রায় কাজ শুরু হবে এবং ভিসা প্রদানও স্বাভাবিক হবে।
উল্লেখ্য, একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠিত হয়। এই ট্রাইব্যুনালে ইতিমধ্যে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অনেকের বিচার ও সর্বোচ্চ শাস্তি কার্যকর হয়েছে। মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত আরও কয়েকজনের বিচার ট্রাইব্যুনালে চলছিল।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন। এরপর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এই আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
More Stories
ভারতে মহানবীকে নিয়ে কটূক্তিকারী পুরোহিত ‘আটক’
মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)-কে নিয়ে কটূক্তি করায় ভারতে ইয়াতি নরসিংহানন্দ নামের এক হিন্দু পুরোহিতকে আটক করা হয়েছে। ইন্ডিয়ান...
মোদির ভাষণে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী প্রসঙ্গ, উঠছে ‘অজস্র’ প্রশ্ন
ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যে নির্বাচনের আগে বারবার বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের বিষয়টি সামনে নিয়ে আসছে বিজেপি। বুধবার (২ অক্টোবর) স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও...
বাংলাদেশের সঙ্গে ইতিবাচক সম্পর্ক থাকবে ভারতের, আশা জয়শঙ্করের
বাংলাদেশ ও শ্রীলংকায় নতুন সরকার এলেও প্রতিবেশী দেশ দুটির সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক ‘ইতিবাচক ও গঠনমূলক’ই থাকবে বলে মনে করেন দেশটির...
ভারতের বিখ্যাত ইসলামী ব্যক্তিত্ব মাওলানা কালিম সিদ্দীকীর যাবজ্জীবন কারদণ্ড
ভারতের বিখ্যাত ইসলামী ব্যক্তিত্ব মাওলানা কালিম সিদ্দীকীকে যাবজ্জীবন কারদণ্ড দিয়েছে স্থানীয় একটি আদালত। বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) দেশটির জাতীয় তদন্ত সংস্থা...
পদত্যাগে রাজি মমতা
চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠকের জন্য নবান্নের সভাঘরে বৃহস্পতিবার দু’ঘণ্টার বেশি সময় বসে ছিলেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু বৈঠক হয়নি।...
শেখ হাসিনার পতনে কর্তৃত্ব হারাচ্ছে ভারত: শ্রীলঙ্কা গার্ডিয়ানের নিবন্ধ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে সংঘটিত গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয়ে এই মুহূর্তে ভারতে অবস্থান করছেন শেখ হাসিনা। গণমাধ্যমসহ সব...