সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ২০ দিন পর কারাগার থেকে বাড়ি ফিরেছেন। বৃহস্পতিবার বিকালে তিনি নিজের বাড়িতে আসেন। বৃহস্পতিবার বিকালে সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলায় এম এ মান্নানের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় ঘরভর্তি মানুষের ভিড়। এম এ মান্নান নামাজ শেষ করে সবার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।
এম এ মান্নান বলেন, জুলাই মাসের ২৪ তারিখ থেকে আজ পর্যন্ত আমি আমার গ্রামের বাড়ি শান্তিগঞ্জে অবস্থান করছি। মাঝে ২০ দিন কারাগারে ছিলাম। আমাকে অ্যারেস্ট করে নিয়ে গিয়েছিল সুনামগঞ্জের একটি মামলায়। ৪ আগস্ট নাকি সুনামগঞ্জে কী ঝামেলা হয়েছে। সেই ঝামেলায় আমিসহ অনেক লোকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলার ব্যাপারটা আমার অজানা ছিল। গায়েবি মামলা কি না জানি না। আমি কাউকেই চিনি না।
তিনি বলেন, আমি গত তিন মাসে একবারও সুনামগঞ্জ শহরে যাইনি। সুনামগঞ্জে আমার কোনো ঘরবাড়ি নেই, আমি সেখানে বাস করি না। আমি সুনামগঞ্জ আওয়ামী লীগের কোনো নেতাও না। আমি সুনামগঞ্জ তথা বাংলাদেশের আওয়ামী লীগের কোনো কমিটিতেও নেই। তবে হ্যাঁ, আমি আওয়ামী লীগকে সমর্থন করি। আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রী ছিলাম এটা ঠিক। কিন্তু সুনামগঞ্জের আওয়ামী লীগের সঙ্গে আমার সরাসরি কোনো যোগাযোগ ছিল না। কিন্তু হঠাৎ দেখি আমার নামেও মামলা হলো।
সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আমি নির্ভয়ে বাড়িতেই ছিলাম। আমি পালাইনি, পালাব কেন? মামলা দায়েরের কিছুদিন পর ১৯ সেপ্টেম্বর রাত ১১টায় সুনামগঞ্জের এসপি সাহেব এসে আমাকে ধরে নিয়ে গেলেন। সেদিন থেকে একটানা জেলে ছিলাম। প্রথমে সুনামগঞ্জের জেলে, পরে বাদাঘাটের জেলে ছিলাম। শেষ দুই দিন আমি ওসমানী মেডিকেলে অসুস্থতার জন্য ভর্তি ছিলাম। গতকাল আদালত আমাকে দয়া করে জামিন দিয়েছেন।
আপনার সমর্থনে একপক্ষ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে আবার অন্য একটি পক্ষ আপনার শাস্তি চেয়েছে, এই ব্যাপারটাকে কীভাবে দেখছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার সমর্থনে সমর্থকরা মানববন্ধন করেছেন, আমি শুনেছি। আমার কাছে মোবাইল বা এমন কিছু ছিল না জানা বা দেখার মতো। আমার হাতের ঘড়ি, আমার মোবাইল সবকিছু প্রথম দিনই এসপি সাহেব নিয়ে গেছেন।
সুস্থতার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পুলিশ প্রশাসন ও হাসপাতালের ডাক্তাররা আমার সঙ্গে ভালো আচরণ করেছেন। আমি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভালো চিকিৎসা পেয়েছি। বড় বড় ডাক্তাররা আমার চিকিৎসা করেছেন। গতকাল থেকে আজ সারাদিন যাবত তারা আমাকে নানা চিকিৎসা, পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন। তারা মনে করেছেন আমি ভালো আছি। তবে আমাকে শারীরিকভাবে ভালো দেখলেও মানসিকভাবে অবসাদে আছি, বিধ্বস্ত আছি।
তিনি আরো বলেন, আমি ঘুণাক্ষরেও ভাবিনি আমি জেলে যাব। এটা আমার দোষ হতে পারে কারণ আমি বোকা। বোকা, কারণ আমি মনে করিনি আমি জেলে যাব। আমি মনে মনে কষ্ট পেয়েছি এই ভেবে যে, আমি কেন জেলে গেলাম। আমি কিছু করি নাই তো। আর যে মামলায় আমি জেলে গেলাম সেই মামলা দোয়ারাবাজারের এক লোক করেছে। তাকে আমি চিনিই না। আর আমি ঘটনার দিন সুনামগঞ্জ শহরেই ছিলাম না।
জামিন পাওয়ার ব্যাপারে এম এ মান্নান বলেন, আমাকে আদালত বিবেচনা করেছেন। জামিন মঞ্জুর করেছেন। আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। সুনামগঞ্জের সুশীল সমাজ, নিজ এলাকার মানুষ দোয়া করেছেন বলেই আমি জামিন পেয়েছি।
More Stories
সকল রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ যাতে নিরাপদে থাকে: সালাহউদ্দিন
ওসমান হাদির ওপর হামলাকে বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা হিসেবে দেখা হচ্ছে না বরে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।...
‘চারদিকে ছড়িয়ে থাকা লাখ লাখ হাদির মতো আমিও ভয় পাই না’
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টা ও পরবর্তী বাংলাদেশ নিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল...
দেশে ফিরছেন তারেক রহমান: প্রস্তুত হচ্ছে বাড়ি-কার্যালয়
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আগামী ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরছেন। এ উপলক্ষে তার বাসভবন ও কার্যালয়ের সংস্কার কাজ প্রায় সম্পন্ন...
হাদির পরিবারকে সান্ত্বনা প্রধান উপদেষ্টার, সর্বোত্তম চিকিৎসার আশ্বাস
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির পরিবারকে সান্ত্বনা ও সমবেদনা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর...
সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় ৬ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহত, লড়াই চলছে
সুদানে সন্ত্রাসীদের হামলায় ছয় বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহত হয়েছেন। বাংলাদেশের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) শনিবার খুদে বার্তায় এ কথা জানায়। আইএসপিআর...
‘হাদির অস্ত্রোপচারের সময় দুইবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ওসমান হাদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) অস্ত্রোপচারের সময় দুইবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট...
