জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগে মোটা অঙ্কের ঘুষ লেনদেনের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
তিনি বলেন, ‘আমরা রক্ত দিচ্ছি আর সচিবালয়ে বসে টাকা ভাগা হচ্ছে।’
বৃহস্পতিবার (০৩ অক্টোবর) সন্ধ্যায় উত্তরা ফ্রেন্ডস ক্লাব মাঠে ছাত্র-নাগরিক মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, আমরা রক্ত দিয়ে যাচ্ছি আর সচিবালয়ে বসে টাকা ভাগা হচ্ছে। দ্য মেথড অব পেমেন্ট–৫ কোটি না ১০ কোটি। একজন বলতে, ‘আমি ভাই নির্লোভ মানুষ। আমার এত লোভ নাই। ৫ কোটি হলেই চলবে।’ অন্যজন বলছে ‘১০ কোটি।’ প্রথমজন বলছে, ‘তোমার যা মনে হয়’। হাসনাত আরও বলেন, ‘রাস্তায় শিক্ষার্থীরা রক্ত দিয়েছে, ছাত্র-জনতা রক্ত দিয়েছে, আর এই বার্ধক্যের নেতৃত্ব সচিবালয়ে বসে আমাদের রক্ত মাড়িয়ে টাকা ভাগ করছে। স্কাউন্ড্রেল…। এই বার্ধক্যের নেতৃত্বের জন্য আমরা (ছাত্র-নাগরিক) রক্ত দিতে প্রস্তুত নই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আমাদের জায়গা থেকে পরিষ্কার ভাবে বলতে চাই আপনারা যারা সচিবালয়ে বসে নীতিনির্ধারণ করছেন, আপনারা সচেতন হোন। কারণ, ছাত্র-নাগরিক ৫ তারিখ যেভাবে হাসিনাকে তার মসনদ থেকে নামিয়েছে, আপনাদের সচিবালয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চার মিনিটের ডিসটেন্স। আপনারা সচিবালয়ে বসে ৫ কোটি না ১০ কোটি ভাগ করবেন, আর আমরা বাজারে গিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসটা কিনতে পারব না, তা হবে না।’
এদিকে, ডিসি নিয়োগে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের বিরুদ্ধে ওঠা ঘুষের অভিযোগ তদন্তে তিন উপদেষ্টাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ। বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) সচিবালয়ে দেওয়া এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
ডিসি নিয়োগে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ সরকার তদন্ত করবে কি না; জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘অবশ্যই আমরা এটার তদন্ত করব, সরকার (তদন্ত) করবে। কিন্তু এখানে দুটি জিনিস মিডিয়াকে মাথায় নিতে হবে।
এটাও কিন্তু আমরা তলিয়ে দেখছি যে ক্লিপটা সোশ্যাল মিডিয়ায় বহুল প্রচারিত হয়ে গেল, সেটা কতখানি এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) প্রডিউসড। সেটা কতখানি রিয়েল, কতখানি ফেক আমাদের মতো সাধারণ মানুষ বলতে পারে না। ইমিডিয়েটলি যে সিদ্ধান্তটা হয়েছে এটার টেকনিক্যাল ইন্টিগ্রিটিটা কী সেটা জানার জন্য কেবিনেটে (উপদেষ্টা পরিষদে) কথা হয়েছে।’
উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেন, ‘সেটা ইনভেস্টিগেট করে ইমিডিয়েটলি দেখতে হবে। আমরা অবশ্যই তদন্ত করব।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘অত্যন্ত দায়িত্বশীল জায়গায় প্রতিষ্ঠিত কর্মকর্তাদের কোনো ধরনের দায়িত্বহীনতা মেনে নেওয়া যাবে না। এটাও আমাদের অনুশাসনের অধীনে আনতে হবে।’
More Stories
আগামী ৪৮ ঘণ্টায় যুক্তরাষ্ট্রকে দুটি চিঠি দেবে বাংলাদেশ
ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যে ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের পর সরকার কী ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে, তা জানাতে আগামী ৪৮...
এ মাসেই হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে চার্জশিট
প্রায় সোয়া তিনশ মামলার আসামি বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরমধ্যে একটি মামলার চার্জশিট এ মাসেই ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা হবে...
৪০ মিনিটের বৈঠক, আলাপ হলো কী নিয়ে
থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে বিমসটেক সম্মেলনের শেষ দিন বৈঠক হয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহম্মদ ইউনূস এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র...
থাইল্যান্ডকে ভিসা পদ্ধতি সহজ করার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ভিসা পদ্ধতি সহজ করতে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতোংটার্ন সিনাওয়াত্রার কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহম্মদ ইউনুস। শুক্রবার...
জাতীয় নির্বাচন যত দ্রুত সম্ভব আয়োজন করাই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার: প্রধান উপদেষ্টা
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, যত দ্রুত সম্ভব জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা তার সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। তিনি বলেন, ‘আমি...
ব্যাংককে ঐতিহাসিক বৈঠকে ড. ইউনূস-নরেন্দ্র মোদি
ব্যাংককে বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শুরু হয়েছে।...