ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য ইসহাক আলী খান পান্নার মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছিল আগেই। তবে তার মৃত্যুর কারণ নিয়েও পাওয়া যাচ্ছিল নানা রিপোর্ট।
পান্নার লাশ এখন ভারতের মেঘালয় রাজ্যে রয়েছে এবং তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশের সূত্র জানিয়েছে। এছাড়া তার শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্নও পাওয়া গেছে বলে জানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগের নেতা ইসহাক আলী খান পান্নাকে — যিনি হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছিলেন — মেঘালয়ে বাংলাদেশ সীমান্তের কাছেই মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে বলে মেঘালয় পুলিশ বৃহস্পতিবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে।
রাজ্যটির পুলিশের বেশ কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে, পান্নার পোস্টমর্টেম রিপোর্ট থেকে বোঝা যায় যে— তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।
মেঘালয় পুলিশ জানিয়েছে, গত ২৬ আগস্ট মেঘালয়ের পূর্ব জৈন্তিয়া পাহাড়ের দোনা ভোই গ্রামের একটি সুপারি বাগানের মধ্যে ইসহাক আলী খান পান্নার আধা-পচা মৃতদেহ পাওয়া যায়। এই এলাকাটি ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে।
পান্নার বহন করা পাসপোর্ট থেকে মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে বলেও সূত্রগুলো জানিয়েছে।
পুলিশের বেশ কয়েকটি সূত্র আরও জানিয়েছে, পোস্টমর্টেম রিপোর্টে বলা হয়েছে— তিনি শ্বাসরোধের কারণে মারা গেছেন। রিপোর্টের ভাষায়, ‘মৃত্যুর কারণ হলো শ্বাসরোধের কারণে সৃষ্ট শ্বাসকষ্ট’।
তার মরদেহ ফরেনসিক বিশ্লেষণের জন্য পাঠানো হয়েছে বলেও সূত্রগুলো জানিয়েছে।
পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, এছাড়াও ইসহাক আলী খান পান্নার শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার কপালে আঘাত এবং ক্ষত চিহ্ন রয়েছে বলেও ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকেই রাজধানী ঢাকায় আত্মগোপনে ছিলেন ইসহাক আলী খান পান্না। পরে তিনি সিলেট থেকে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
পরিকল্পনা মতো— সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার তামাবিল এলাকা দিয়ে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের ডাউকি এলাকায় প্রবেশ করেন। তবে পরে তার মৃত্যুর ও মরদেহ উদ্ধারের খবর পাওয়া যায়।
উল্লেখ্য, ইসহাক আলী খান পান্না ১৯৯৪ সালের সম্মেলনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০১২ সালে আওয়ামী লীগের সম্মেলনের পর দলের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক এবং পরে বিভিন্ন উপ-কমিটি ও পিরোজপুর জেলা আওয়ামী সদস্য হয়েছিলেন তিনি।
More Stories
শাহজাহান ওমরের হুংকার, ‘আমি আবারও এমপি-মন্ত্রী হব’
গ্রেপ্তারের পর ঝালকাঠি-১ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর হুংকার দিয়ে বলেছেন, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা, এসব মামলা আমার...
মুহাম্মদ ইউনূসকে যেতে দেবেন না, ধরে রাখুন : শফিক রেহমান
অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে কাজ করতে সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক শফিক রেহমান। তিনি বলেন, “তাকে...
বিচারের পর আওয়ামী লীগকে নির্বাচন করতে দেওয়া হবে : ড. ইউনূস
ক্ষমতায় থাকাকালে আওয়ামী লীগ যেসব হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে সেগুলোর বিচার শেষে দলটিকে নির্বাচন করতে দেওয়া হবে বলে...
সেনাকুঞ্জে হাস্যোজ্জ্বল খালেদা জিয়া
ছয় বছর পর প্রকাশ্যে কোনো অনুষ্ঠানে দেখা গেল হাস্যাজ্জ্বল খালেদা জিয়াকে। সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পাশের আসনে...
শেখ হাসিনাকে ফেরানোর নির্দেশনা নিয়ে যা জানালেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র তৌফিক হাসান বলেছেন, ভারতে অবস্থানরত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানোর বিষয়ে দুই দেশের বৈঠকে আলোচনার সুযোগ...
খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে কথা বললেন উপদেষ্টা মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে কথা বলেছেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ...