আগামী নভেম্বর মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাব্লিকান দলের প্রার্থী হিসেবে ডনাল্ড ট্রাম্প রাজনৈতিক আঙিনায় যথেষ্ট সমর্থন পেলেও তিনি নিজের প্রচার অভিযানের জন্য যথেষ্ট অর্থ সংগ্রহ করতে পারছেন না। তার উপর একাধিক মামলায় জর্জরিত প্রার্থী হিসেবে তাকে বিশাল অংকের জরিমানা দিতে হচ্ছে। আগামী সোমবারের মধ্যে আদালতে প্রায় ৫০ কোটি ডলার অংকের বন্ড পেশ করতে না পারলে তাঁর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও সম্পত্তির একাংশ জব্দ করা হতে পারে৷ ফলে মরিয়া হয়ে সেই বিশাল অংক জোগাড় করার চেষ্টা করছেন ট্রাম্প।
নিউ ইয়র্কের এক আদালত ডনাল্ড ট্রাম্প, তার ছেলেরা ও তার কোম্পানির বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ মেনে নিয়ে রায় দিয়েছে।
বছরের পর বছর ধরে সম্পদের প্রকৃত মূল্য গোপন করে তাঁরা একাধিক ব্যাংক ও বিমা কোম্পানির বিরুদ্ধে প্রতারণা করেছেন। ট্রাম্প সেই রায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করলেও আপাতত তাঁকে জরিমানার গ্যারেন্টি হিসেবে সোমবারের মধ্যে ৪৫ কোটি ৪০ লাখ ডলার মূল্যের বন্ড জমা দিতে হবে।
ট্রাম্পের আইনজীবীরা প্রায় ৩০টি বিমা ও বন্ড কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করেও প্রয়োজনীয় অংকের বন্ড আদায় করতে পারছেন না। ট্রাম্পের সম্পত্তি বন্ধক রেখে তারা সেই ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত নয়।
অন্যান্য ঋণ পেতে ট্রাম্প আগেই কিছু সম্পত্তি বন্ধক রাখার কারণেও সেটা সম্ভব হচ্ছে না বলে দাবি করেছেন প্রাক্তন ফেডারেল কৌঁসুলি অ্যান্ড্রু ওয়াইসম্যান। সংবাদ সংস্থা এএফপি-কে তিনি সে কথা বলেন। সোমবারের মধ্যে প্রয়োজনীয় বন্ড জোগাড় করতে না পারলে ট্রাম্প অপমান ও মারাত্মক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন বলে একাধিক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন। একমাত্র অন্য আদালত বা নিউ ইয়র্কের অ্যাটর্নি জেনারেল হস্তক্ষেপ করলে হাতে তিনি কিছুটা বাড়তি সময় পেতে পারেন।
ট্রাম্প নিজে আদালতের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করছেন। তাকে শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে জলের দরে সম্পত্তি বন্ধক বা বিক্রি করতে হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। এমনকি রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে জয় হলেও সেই সম্পত্তি হাতছাড়া হয়ে যাবে। উল্লেখ্য, গত মাসে ট্রাম্পকে দশ কোটি ডলার অংকের বন্ড জমা দিয়ে আাপতত রেহাই পেতে আপিল করে ব্যর্থ হয়েছিলেন।
ডনাল্ড ট্রাম্প আরো ৯১টি মামলায় জর্জরিত হলেও দমে যেতে প্রস্তুত নন।
নিজের সংকট থেকে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে তিনি সমর্থকদের সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আসন্ন নির্বাচনে তাঁর পথে বাধা সৃষ্টি করতেই এত মামলা করা হচ্ছে বলে তিনি দাবি করছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বিরুদ্ধেও তিনি বিষাদগার করে চলেছেন।
রিপাবলিকান দলের রাশ নিজের হাতে তুলে নিয়েও ট্রাম্প সুবিধা করতে পারছেন না। দলের জাতীয় কমিটির সঙ্গে ফান্ডরেইজিং চুক্তির আওতায় প্রচার অভিযানের জন্য চাঁদা তোলা এবং এক রাজনৈতিক কমিটির মাধ্যমে মামলার ব্যয় জোগাড় করার বন্দোবস্ত করেছেন ট্রাম্প। কিন্তু প্রথা ভেঙে দলের প্রার্থীর আইনি ব্যয়ের জন্য চাঁদা তোলার উদ্যোগ রিপাবলিকান দলের দাতারা কীভাবে গ্রহণ করবেন সে বিষয়ে সংশয় রয়েছে৷ উল্লেখ্য, নির্বাচনি প্রচারের জন্য চাঁদা আদায়ের ক্ষেত্রে ট্রাম্প বাইডেনের তুলনায় পিছিয়ে রয়েছেন। সূত্র : ডয়েচে ভেলে
More Stories
বাংলাদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে কাজ করবে ভারতীয় আমেরিকানরা
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও দেশটির কংগ্রেসের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের চেষ্টা চালাবে ভারতীয় আমেরিকানরা। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে...
দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথম কাজ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করা: ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, জানুয়ারি মাসে দায়িত্ব গ্রহণের পর তার প্রথম কাজ হবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করা। শুক্রবার...
হোয়াইট হাউসে ফিরলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প
চার বছর পর যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এক নাটকীয় প্রত্যাবর্তনে ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প...
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন: ট্রাম্প ২১০, কমলা ১১৩
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট গণনা চলছে। ইতিমধ্যে কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে কে জয় পেতে যাচ্ছেন, এমন পূর্বাভাসও আসছে বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে। অ্যাসোসিয়েটেড...
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন: ফ্লোরিডায় ট্রাম্প এবং ম্যাসাচুসেটসে জয়ী কমালা হ্যারিস
ফ্লোরিডায় ট্রাম্প এবং ম্যাসাচুসেটসে জয়ী কমালা হ্যারিস মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণের পর ধীরে ধীরে ফলাফল আসতে শুরু করছে। যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যমগুলো...
রাশিয়ার বিরুদ্ধে নির্বাচনে হস্তক্ষেপের অভিযোগ মার্কিন গোয়েন্দাদের
রাশিয়াসহ ‘প্রতিপক্ষ’ দেশগুলো বিরুদ্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপ চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দাদের দাবি, তারা নির্বাচন নিয়ে জনগণের আস্থা...