মিয়ানমার থেকে আসা ছোড়া গুলিতে মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সারাদিন বাংলাদেশের পাঁচ নাগরিক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এরমধ্যে কক্সবাজারের উখিয়ার পালংখালী ও থাইংখালী এলাকায় চারজন এবং বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তে একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। কক্সবাজারের আহতরা হলেন- পালংখালী ইউনিয়নের নলবনিয়া এলাকার আয়ুবুল ইসলাম, রহমতেরবিল এলাকার আনোয়ার হোসেন, পুটিবনিয়া এলাকার মোবারক হোসেন ও মো. কালা।
এর আগে মঙ্গলবার বেলা ৪টার দিকে তুমব্রু পশ্চিমকুল পাহাড় পাড়া থেকে আশ্রয় কেন্দ্র উত্তর ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাওয়ার সময় ওপার থেকে গুলি এসে আহত হন মো. সৈয়দ আলম নামের একজন। তিনি তুমব্রু পশ্চিমকুল পাহাড় পাড়ানিবাসী কাদের হোসেনের ছেলে। আহত সৈয়দ আলম গণমাধ্যমকে জানান, বাড়ি থেকে উত্তর ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার মিয়ানমার থেকে ছোড়া গুলি প্রথমে একটি গাছে লেগে তার কপাল ঘেঁষে গুলিটি চলে যায়। কপাল থেকে রক্ত ঝরলে কপালে হাত দিয়ে ধরে স্থানীয় চিকিৎসা কেন্দ্রে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
ঘুমধুম ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) মো. আনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঘুমধুম বেতবুনিয়া বাজার সংলগ্ন ছৈয়দ নুর এর বসতঘরে একটি মর্টারশেল এসে পড়েছে। এতে ভেঙে গেছে জানালা। ফাটল ধরেছে বাড়ির দেওয়ালে। একইসময় ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলামের বাড়িতে এসে পড়ে আরো একটি মর্টার শেল। এসময় লাগাতার গুলি এসে পড়েছে এপারে। এতে সীমান্তের ঘুমধুমের নজরুল ইসলামের বাড়ি, রহমতবিল সংলগ্ন অ্যাডভোকেট আবদুল মান্নানের বাড়ি সহ ৫টি বাড়িতে গুলির আঘাত লেগেছে।
পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, সোমবার রাত থেকে দুই পক্ষের লড়াইয়ের ভয়াবহতা বেড়ে যায়। এত কম্পন আমরা আর দেখিনি। একেকটি গোলা নিক্ষেপের পর পুরো এলাকাজুড়ে কেঁপে ওঠে। একটি রাত নির্ঘুম কাটিয়ে দিয়েছেন লোকজন। ঘুমধুমের মধ্যমপাড়া, জলপাইতলী, মন্ডলপাড়া, নয়াপাড়া, কোনারপাড়া, পশ্চিমকুল, বেতবুনিয়া বাজার পাড়া, পাশের পালংখালী ইউনিয়নের উখিয়ার ঘাট, পূর্ব ফাঁড়ির বিল, নলবনিয়া, আঞ্জুমান পাড়া, বালুখালী, দক্ষিণ বালু খালী এলাকা প্রকম্পিত হচ্ছে। কোনোভাবেই বিস্ফোরণ বন্ধ হচ্ছে না। এ পরিস্থিতি সীমান্ত অতিক্রম করে পালিয়ে আসছে অনেকেই। যাদের স্থানীয় লোকজন আটক করে বিজিবির কাছে সোপর্দ করছে।
ঘুমধুম ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের ইউনিয়নে ১,২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার বাইশ পারি তঞ্চঙ্গ্যা পাড়া থেকে ২০ পরিবার, ভাজাবনিয়া তঞ্চঙ্গ্যা পাড়া থেকে ৩০ পরিবার, তুমব্রু কোনার পাড়া থেকে ৩০ পরিবার, ঘুমধুম পূর্ব পাড়া থেকে ২০ পরিবার, তুমব্রু হিন্দু পাড়া থেকে ১০ পরিবার নিরাপদ আশ্রয়ে পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকার আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহিন ইমরান জানান, মিয়ানমারে সংঘাত বেড়েছে। মিয়ানমার থেকে ছোড়া গুলি, মর্টারশেল এসে পড়ছে সীমান্তের এপারে। সীমান্তের ঝুঁকিপূর্ণ বাসিন্দাদের নিরাপদে সরিয়ে নেয়ার নির্দেশনা রয়েছে। প্রাথমিক অবস্থায় ঘুমধুম ও তুমব্রু সীমান্তের মানুষকে নিরাপদে আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে।
More Stories
শাহজাহান ওমরের হুংকার, ‘আমি আবারও এমপি-মন্ত্রী হব’
গ্রেপ্তারের পর ঝালকাঠি-১ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর হুংকার দিয়ে বলেছেন, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা, এসব মামলা আমার...
মুহাম্মদ ইউনূসকে যেতে দেবেন না, ধরে রাখুন : শফিক রেহমান
অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে কাজ করতে সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক শফিক রেহমান। তিনি বলেন, “তাকে...
বিচারের পর আওয়ামী লীগকে নির্বাচন করতে দেওয়া হবে : ড. ইউনূস
ক্ষমতায় থাকাকালে আওয়ামী লীগ যেসব হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে সেগুলোর বিচার শেষে দলটিকে নির্বাচন করতে দেওয়া হবে বলে...
সেনাকুঞ্জে হাস্যোজ্জ্বল খালেদা জিয়া
ছয় বছর পর প্রকাশ্যে কোনো অনুষ্ঠানে দেখা গেল হাস্যাজ্জ্বল খালেদা জিয়াকে। সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পাশের আসনে...
শেখ হাসিনাকে ফেরানোর নির্দেশনা নিয়ে যা জানালেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র তৌফিক হাসান বলেছেন, ভারতে অবস্থানরত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানোর বিষয়ে দুই দেশের বৈঠকে আলোচনার সুযোগ...
খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে কথা বললেন উপদেষ্টা মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে কথা বলেছেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ...