শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ৬ মাসের সাজার বিরুদ্ধে আপিল শেষ না হওয়া পর্যন্ত ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে বিদেশ যেতে হলে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালকে জানিয়ে যেতে হবে বলে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
একই সঙ্গে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ড. ইউনূসের ছয় মাসের সাজা স্থগিতের আদেশ স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী— কোনো মামলা আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করলে এ কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত সাজা স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্থগিত থাকে। এটার জন্য আলাদা আদেশের প্রয়োজন নেই।
সোমবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে ইউনূসের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন। কলকারখানা অধিদপ্তরের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান।
গতকাল শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ড. ইউনূসের ৬ মাসের সাজা স্থগিতের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়। এছাড়া ড. ইউনূস যেন বিদেশ যেতে না পারেন সে আবেদনও করা হয়।
হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের পক্ষে অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান এ আবেদন দায়ের করেন।
গত ২৮ জানুয়ারি শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে দায়ের করা মামলার রায় চ্যালেঞ্জ করে ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনকে জামিন দেন শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। সেদিন শ্রম আদালতের দেওয়া সাজা স্থগিত করেন শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল।
এর আগে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে জামিন চেয়েছিলেন তিনি। সেই সঙ্গে শ্রম আইন লঙ্ঘন মামলার রায়ে ৬ মাসের সাজার বিরুদ্ধে ২৫টি যুক্তি দেখিয়ে খালাস চেয়ে আপিলও করেছিলেন তিনি।
এর আগে ১ জানুয়ারি শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় ৬ মাসের সাজা হয় ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চার আসামির। রায় প্রদানকারী বিচারক শেখ মেরিনা সুলতানার স্বাক্ষরের পর ৮৪ পৃষ্ঠার এ রায় প্রকাশ করা হয়।
পূর্ণাঙ্গ রায়ে বলা হয়েছে, আসামিরা শ্রম আইন ২০০৬ এর ধারা ৪(৭) (৮), ১১৭, ২৩৪ এর বিধান লঙ্ঘন করে আইনের ৩০৩(৫) ও ৩০৭ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। তা প্রমাণিত হওয়ায় রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের বিরুদ্ধে অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন। এ অবস্থায় আসামি গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ইউনূস, ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ধারা ৪(৭) (৮), ১১৭, ২৩৪ ও বিধি ১০৭ লঙ্ঘনের জন্য ৩০৩(৩) ও ৩০৭ ধারার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাদের ওই আইনের ৩০৩ (৩) ধারার অপরাধে ০৬ (ছয়) মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ৫,০০০/-(পাঁচ হাজার) টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে ১০ (দশ) দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ৩০৭ ধারার অপরাধে ২৫,০০০/-(পঁচিশ হাজার) টাকা অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে অতিরিক্ত ১৫ (পনেরো) দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হলো।
More Stories
শাহজাহান ওমরের হুংকার, ‘আমি আবারও এমপি-মন্ত্রী হব’
গ্রেপ্তারের পর ঝালকাঠি-১ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর হুংকার দিয়ে বলেছেন, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা, এসব মামলা আমার...
মুহাম্মদ ইউনূসকে যেতে দেবেন না, ধরে রাখুন : শফিক রেহমান
অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে কাজ করতে সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক শফিক রেহমান। তিনি বলেন, “তাকে...
বিচারের পর আওয়ামী লীগকে নির্বাচন করতে দেওয়া হবে : ড. ইউনূস
ক্ষমতায় থাকাকালে আওয়ামী লীগ যেসব হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে সেগুলোর বিচার শেষে দলটিকে নির্বাচন করতে দেওয়া হবে বলে...
সেনাকুঞ্জে হাস্যোজ্জ্বল খালেদা জিয়া
ছয় বছর পর প্রকাশ্যে কোনো অনুষ্ঠানে দেখা গেল হাস্যাজ্জ্বল খালেদা জিয়াকে। সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পাশের আসনে...
শেখ হাসিনাকে ফেরানোর নির্দেশনা নিয়ে যা জানালেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র তৌফিক হাসান বলেছেন, ভারতে অবস্থানরত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানোর বিষয়ে দুই দেশের বৈঠকে আলোচনার সুযোগ...
খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে কথা বললেন উপদেষ্টা মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে কথা বলেছেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ...