বিরোধী দলীয় শক্তিকে সরকার ‘আইএস’ বানানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান।
তিনি বলেছেন, সরকার বিরোধী দলকে ‘তালেবানি’ নাম দেওয়ারও চেষ্টা করছে। বিরোধীদের আগুনসন্ত্রাসী এবং জঙ্গি বলছে তারা। ২৮ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত সরকার এমন চেষ্টা অনেক করেছে। তাদের এই অপচেষ্টা এবার আর সফল হবে না।
শনিবার (২০ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ সভার আয়োজন করে ইউনাইটেড লইয়ার্স ফ্রন্ট (ইউএলই)।
মঈন খান বলেন, আজকে সংবাদপত্রের কণ্ঠ রোধ করা হয়েছে। এমন বাংলাদেশের জন্য তো মুক্তিযুদ্ধ হয়নি। তাহলে কেন স্বাধীনতার ৫২ বছর পর আমরা আজকে এই অবস্থায় উপনীত হলাম? এ বিষয় অবশ্যই আমাদের বিশ্লেষণ করতে হবে এবং এর থেকে কীভাবে পরিত্রাণ পাওয়া যায়, তাও বিবেচনা করতে হবে। আজকের আন্দোলন-সংগ্রাম হচ্ছে অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়ের সংগ্রাম।
বর্তমান আন্দোলন হচ্ছে নিরস্ত্র জনগণের শক্তি বনাম রাষ্ট্রশক্তি, এমন মন্তব্য করে মঈন খান বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় যাবে, এর জন্য কিন্তু আমরা আন্দোলন করছি না। আমরা আন্দোলন করছি একটা পরিবর্তনের জন্য। আর সেই পরিবর্তনটা হচ্ছে জনগণের অধিকার জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া। আজকের এই আন্দোলন কিন্তু বিএনপি বনাম আওয়ামী লীগের আন্দোলন না। এই আন্দোলন হচ্ছে, নিরস্ত্র জনগণের শক্তি বনাম রাষ্ট্রশক্তি। এই কঠিন সংগ্রামকে আমাদের উপলব্ধির মধ্যে রাখতে হবে।
৭ জানুয়ারি সরকারের বড় ধরনের পরাজয় হয়েছে, দাবি করে মঈন খান বলেন, জনগণ সরকারকে প্রত্যাখ্যান করে ভোট দিতে যায়নি। আমি যদি এই ঘটনাকে বিশ্লেষণ করি, তাহলে অনেকে যে বলছেন, আওয়ামী লীগ নির্বাচন করে ফেলেছে আর বিএনপির পরাজয় হয়েছে; এখানে আমি বলব, বিএনপির কোনো পরাজয় হয়নি, সরকারের হয়েছে।
দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে মঈন খান বলেন, বাংলাদেশ থেকে রাজনীতিকে বিতাড়িত করা হয়েছে। এ দেশে রাজনীতি বলতে কিছু নেই। রাজনীতিতে এখন একটি বিষয় কাজ করে—ক্ষমতা আর অর্থ-বিত্ত। দেশের রাজনীতি আজকে যে পর্যায়ে গেছে, সেই পরীক্ষায় আমি পাস করতে পারিনি। কাজেই সেই ধরনের রাজনীতিক আমি হতেও চাই না।
মতবিনিময় সভায় সরকারের সমালোচনা করে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে আওয়ামী লীগ একটি দুর্গন্ধময় সরকারে পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনা নিজের দলকে নষ্ট করেছেন। তিনি ছলে-বলে, চালাকি করে একটি সরকার গঠন করেছেন। দেশের মানুষকে বোকা বানিয়ে ক্ষমতায় বসেছেন। বাজার ব্যবস্থা, ব্যাংক খাত এবং বিচার ব্যবস্থা ঠিক করা সম্ভব না। কারণ, সবই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে।
রাজনীতিতে পেশাজীবীদের আরো বেশি দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, আমাদের পেশাজীবীদের চাওয়া খুব বেশি না। আমরা শুধু নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন চাই।
মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। আরো বক্তব্য রাখেন—জাস্টিস মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরী, প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল প্রমুখ।
More Stories
শাহজাহান ওমরের হুংকার, ‘আমি আবারও এমপি-মন্ত্রী হব’
গ্রেপ্তারের পর ঝালকাঠি-১ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর হুংকার দিয়ে বলেছেন, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা, এসব মামলা আমার...
মুহাম্মদ ইউনূসকে যেতে দেবেন না, ধরে রাখুন : শফিক রেহমান
অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে কাজ করতে সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক শফিক রেহমান। তিনি বলেন, “তাকে...
বিচারের পর আওয়ামী লীগকে নির্বাচন করতে দেওয়া হবে : ড. ইউনূস
ক্ষমতায় থাকাকালে আওয়ামী লীগ যেসব হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে সেগুলোর বিচার শেষে দলটিকে নির্বাচন করতে দেওয়া হবে বলে...
সেনাকুঞ্জে হাস্যোজ্জ্বল খালেদা জিয়া
ছয় বছর পর প্রকাশ্যে কোনো অনুষ্ঠানে দেখা গেল হাস্যাজ্জ্বল খালেদা জিয়াকে। সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পাশের আসনে...
শেখ হাসিনাকে ফেরানোর নির্দেশনা নিয়ে যা জানালেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র তৌফিক হাসান বলেছেন, ভারতে অবস্থানরত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানোর বিষয়ে দুই দেশের বৈঠকে আলোচনার সুযোগ...
খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে কথা বললেন উপদেষ্টা মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে কথা বলেছেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ...