Read Time:5 Minute, 18 Second

ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ, মানবাধিকার ও নির্বাচন ঘিরে ডাবল স্ট্যান্ডার্ডের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকেই একসময় খেসারত দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) এর সাম্প্রতিক আয়োজিত ‘লেটস টক উইথ শেখ হাসিনা’ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে তরুণদের সঙ্গে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ বিনির্মাণের বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের একমাত্র প্রাকৃতিক সম্পদ হলো গ্যাস। আমি যখন ৯৬ সালে সরকারে আসি তখন ইন্টারন্যাশনাল টেন্ডার দিয়ে অনেক কোম্পানি আসে। আমেরিকান কোম্পানিও এখানে তখন গ্যাস উত্তোলন করে। তখন একটা প্রস্তাব এলো যে গ্যাস বিক্রি করতে হবে। আমি এতে আপত্তি করলাম। সেই আপত্তি করার খেসারত আমাকে দিতে হয়েছে। ২০০১ এর নির্বাচনে আমাকে ক্ষমতায় আসতে দেওয়া হয়নি। আমার দেশের ভেতর আর বাইরের চক্রান্ত এক হয়ে গেল। তো এরকম কিছু ব্যাপার আছে। এরা সবসময় হস্তক্ষেপ করতে চায়।

তিনি বলেন, আজকে যুক্তরাষ্ট্র মানবাধিকার নিয়ে প্রশ্ন তোলে, শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে কথা তোলে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো, তারা নিজের দেশের দিকে তাকায় না। মানুষের জীবনের কোনো নিশ্চয়তা নেই, কিন্তু তারা অন্য জায়গায় এসে খবরদারি করে। এই মোড়ালিপনা যে তাদের কে করতে দিল আমি সেটা জানি না। তারা আমাদের শ্রম অধিকার নিয়ে কথা বলে। তাদের ওখানে কর্মীরা একটা স্ট্রাইক করলে সবগুলাকে চাকরি থেকে বের করে দেয়। এতে তাদের কিছু আসে যায় না, কিন্তু অন্য দেশের বেলা নাক গলায়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘে আমি ফিলিস্তিন ইস্যুটা তুলেছিলাম। ইউরোপীয় ইউনিয়নেও আমি যখন গেলাম তখন খুব শক্তভাবে এই প্রশ্নটা তুলেছিলাম, ফিলিস্তিনি শিশু ও নারীদের মারা হচ্ছে, এখন কেন সবাই চুপ। এমনকি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে দুই দুইবার যুদ্ধ বন্ধের জন্য যে প্রস্তাব আসে তাতে আমেরিকা ভেটো দিল। ইরানে শাহ পালভীর যখন পতন হয় তিনি একটা কথা বলেছিলেন, আমেরিকা যার বন্ধু হবে তার শত্রু লাগবে না। হাজার হাজার যুবক ইউক্রেনে জীবন দিয়েছে। রিফিউজি হয়েছে কত মানুষ। এখন যুক্তরাষ্ট্র বলছে তাদের টাকা নাই, দিতে পারবে না, করতে পারবে না সহায়তা। তাহলে যুদ্ধটা বাঁধাল কেন? এই উসকানি তারা দিল কেন? রাশিয়ার এই আক্রমণ আমরা সমর্থন করিনি।

সরকারপ্রধান বলেন, জাতিসংঘে আমরা খুব হিসেব করে পা ফেলি। কারণ আমাদের পররাষ্ট্রনীতি হলো সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়। কিন্তু ইউক্রেনে যুক্তরাষ্ট্রের এক স্ট্যান্ড, আবার ওইদিকে ফিলিস্তিনি শিশুদের হাসপাতালে বোম ফেলা, সাধারণ মানুষকে বোমা ফেলে হত্যা করা, বন্ধ না করে তারা ইসরায়েলকে উল্টো‌ আরও অস্ত্র কেনার টাকা দিচ্ছে। তাদের মানবাধিকারের ডেফিনেশন কী সেটাই আমরা বুঝলাম না। পৃথিবী মনে হয় এটা বুঝতে পারেনি। তবে সারা বিশ্ব এ ব্যাপারে সচেতন। আমি জানি ২০০১ সালে গ্যাস না দেওয়ার পর তারা (যুক্তরাষ্ট্র) ঝামেলা করেছিল। তবে জনগণ এখন সচেতন। তারপরেও কারও সঙ্গে কম্প্রমাইজ করে ক্ষমতায় যেতে হবে ওই চিন্তা আমি করি না। তারা তো আমার বিরুদ্ধে সারাক্ষণ লেগেই আছে, তবে তাতে কিছু আসে যায় না। তারা নির্বাচনের বিষয়ে অনেক কথা বলে।

যখন তাদের প্রশ্ন করা হয়, এই যে বিএনপি ট্রেনে আগুন মা-শিশু পুড়িয়ে ফেলল। এ ব্যাপারে তাদের মুখ বন্ধ। এ ধরনের ডাবল স্ট্যান্ডার্ডের কারণে তাদের নিজেদেরই একসময় খেসারত দিতে হবে। এটা হলো বাস্তবতা।

Happy
Happy
100 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post বিএনপির রাজনীতি করার অধিকার নেই: শেখ হাসিনা
Next post লাল কার্ড খেয়ে বিদায় নিয়েছে বিএনপি: ওবায়দুল কাদের
Close